অনেকদিন পর সামহোয়ার ইন এ এসে বেশ লাগছে। এক সময়তো তো রাতের পর রাত এখানেই থাকতাম। কি উত্তেজনার সময় - কে পোষ্ট দিলো - কমেন্টে কে কাকে ঘায়েল করচে। আর অবধারিত ভাবে গালির ঝড়। কখনই গালাগালি পছন্দ করি না - কিন্তু উপায় ছিলো না - গালাগালির মাঝেই ব্লগিং করতাম। অবশ্য একটা লক্ষ্য ছিলো সেই ব্লগিং এর - লক্ষ্যে পৌছার পর বিশ্রাম। তারপরও ব্লগিং ভাল লাগে। যদিও শত শত ব্লগ লেখেছি - তারপরও ব্লগার হিসাবে কিছু অর্জন করেছি বলে মনে হয় না - আর কিইবা অর্জন করা যেতো - প্রবাসে বসে বাংলা লেখা - বাংলাদেশের মানুষের সাথে ইন্টারএকশ্যান করার যে আনন্দ - তার মূল্য অনেক। যাই হোক কিছু একটা বলি বরঞ্চ - পুরোনো কাসুন্দী ঘেটে লাভই বা কি!
গতকাল ফেইসবুকে দেখলাম অনেকেই কান ধরে ছবি দিচ্ছে - অভিনব প্রতিবাদ সন্দেহ নেই। কিন্তু অবাক হয়ে দেখছি প্রবাস থেকেও অনেকে বাচ্চাদের কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি দিয়েছে। বলাই বাহুল্য - প্রবাসে থাকা - বিশেষ করে নর্থ আমেরিকায় বসবাস করা কোন বাচ্চা ভাবতেই পারবে না যে কোন শিক্ষককে অপমান করা যায় অথবা শিক্ষক বাচ্চাদে শাররীক ভাবে আঘাত করতে পারে। নিম্চয় বাবা-মাকে বিষয়ট বুঝাতে হয়েছে। এতে বাচ্চাটার মনে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে খুব একটা ভাল ধারনা তৈরী হয়েছে বলা যাবে না।
যাই হোক - সবার নিশ্চয় নিজস্ব ব্যাখ্যা আছে সব বিষয়েই। তবে একটা ছবি দেখে কিছু না বলে পারিনি। ছবিতে একআ বাচ্চা ছেলে প্ল্যাকার্ড হাতে দাড়িয়ে আছে - প্রতিবাদের কথা লেখা সেখানে - তাকে দুইটা বানান ভুল। বললাম - ভাই যে বাচ্চা বানান ভুল করে তার শিক্ষককে কান করে দাড়িয়ে থাকার ছবি কেন দিচ্ছেন না। শুরু হলো গালিগালাজ। বস্তুত বাচ্চাদের এই ধরনের গড্ডালিকা প্রবাহে না ভাসিয়ে তাদের বিরূপ পরিবেশ থেকে সুরক্ষা দেওয়াই বাবা-মা/অভিভাবকের দায়িত্ব। পৃথিবী কখনই বেহেস্ত ছিলো না - হবেও না। এখানে ভাল মানুষ যেমন আছে - খারাপ মানুষও থাকবে। একটা বাচ্চাকে সুন্দর পরিবেশ তৈরী করে না দিলে তারা নেতিবাচক পরিবেশে বড় হবে - নেতিবাচক মানুষ হবে। অন্যদিকে অন্যায়কারীদের শাস্তি দেওয়ার জন্যে দেশে আইন আছে - সংস্থা আছে। তারা যদি কাজ না করে তাদের কাজ করার মতো অবস্থা তৈরী করতে হবে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো - বাচ্চাদের ব্যবহার করে সহানূভূতি তৈরী করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস না দিয়ে বরঞ্চ তাদের সাথে এই নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা করা যায় - তাদের বলা যায় - যেন ওরা বড় হয়ে নিজের কাজটা ঠিক মতো করে। যে পুলিশ হবে সে যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে। ডাক্তার হলে যেন ময়না তদন্তটা সঠিক ভাবে করে - তবেই না অন্যায়কারীদের ধরা যাবে - শাস্তি দেওয়া যাবে।
শেষ কথা হলো - উপনিবেশিক আমল থেকে টেনে আনা এই জবরজং সমাজ কাঠামোটা শুধু প্রতিবাদ আর ফেইসবুক ইভেন্ট করে বদলানো যাবে না - তার জন্যে দরকার একটা প্রজন্ম। আর আজ যে শিশু সেই হতে পারে নতুন সমাজ নির্মানের কারিগর। সেই স্বপ্ন নিয়েই তাদের বড় করা উচিত - তাদের সকল নোংরামী এবং জটিলতা থেকে দুরে রাখার লক্ষ্যে ঘটনা বিষয়ে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানো জন্যে শিশুদের ব্যবহার করা একদমই উচিত নয় বলেই মনে করি।
পড়ার জন্যে সবাইকে ধন্যবাদ।
১. ২০ শে মে, ২০১৬ ভোর ৬:০৫ ০