তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রচার মাধ্যম হিসাবে প্রথম আলো আর ডেইলি স্টারের ভূমিকা আমরা সবাই জানি। মাইনাস টু ফমূর্লার মুখপাত্র হিসাবে এই দুই পত্রিকা শুধু যে ডিজিএফআইএর নোটগুলোই ছাপেনি -এর পক্ষে উপসম্পাদকীয় এবং কমেন্টারী লিখে জনমত তৈরী করেছেন। ব্যক্তিগত ভাবে আমিও এই দুইজনের লেখা গোগ্রাসে গিলতাম - পরে যখন দেখলাম মুজাহিদ আর নিজামী ওয়ারেন্ট নিয়েও ঘুরে বেড়ায় আর খালেদা আর হাসিনাকে ওয়ারেন্ট ছাড়াই এরেস্ট করে জেলে ঢুকাচ্ছে - তখন কিছুটা সন্দেহের মাঝে পড়ে যাই - পরে রাজনীতি বন্ধ করে ইউনুস সাহেবের জন্যে যখন মাঠ খালি করে গোল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলো - তখন বুঝা গেলো - এইটা আসলে ভিন্ন খেলা। যে খেলার শুরু হয়েছিলো ২৮ শে অক্টোবর দিনেদুপুরের মানুষ হত্যার লাইভ টেলিকাষ্ট করার মাধ্যমে - তারপর শুরু হয়েছে বিরাজনীতি করনের প্রক্রিয়া।
আসলে যা হয়েছিলো - তাকে বলে - মেরিটোক্রেসি -
(mer·i·toc·ra·cy
ˌmerəˈtäkrəsē/
noun
government or the holding of power by people selected on the basis of their ability.
a society governed by meritocracy.
plural noun: meritocracies
a ruling or influential class of educated or skilled people.)
বাংলাদেশের তথাকথিত শিক্ষিত শ্রেনী ভোটের রাজনীতিতে কোন সুবিধা করতে পারছে না - তাই এরা ঠিক করেছিলো - নিজেরা একটা বিশেষ পদ্ধতিতে দেশ শাসন করবে - দুই নেত্রীকে বিদায় দিলে তখন রাজনৈতিক দলগুলো উপর তাদের প্রভাব খাটানো সহজ হবে। এইটা অবশ্যই বাংলাদেশের প্রলিত সংবিধান এবং আইনের পরিপন্থী।
যাই হোক মাহফুজ আনাম স্বীকার করেছেন - কিন্তু যারা মুন্নী সাহার টকশো দেখেছে - তারা জানেন উনি ফাঁদে পড়ে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে - এখন এমন একটা ভাব করছেন - ভুল স্বীকার করে উনি বিরাট উদারতার পরিচয় দিয়েছে।
আসলে কি তাই - একজন বাস ড্রাইভার ভুল করে গাড়ী নদীতে ফেলে দিয়ে যেমন দায়িত্ব এড়াতে পারে না - তেমনি মাহফুজ আনামও তার ভুলের কারনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন - তাদের বিষয়ে দায়িত্ব এড়াতে পারেন না।
শুধু ১/১১ এ যা করেছেন উনারা তাই যদি শেষ হতো - তা হলে কথা ছিলো না - কিন্তু পদ্মা সেতু নিয়ে উনারা নিজের দেশের সরকারের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে বিশ্বব্যাংকের পক্ষে জনমত তৈরী করছেন - যার ফলে পদ্মা সেতু বানানোর জন্যে যে কালক্ষেপনের কারনে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তার দায়ও এই সম্পাদককেই নিতে হবে।
যে মামলাগুলো হচ্ছে তা অর্থহীন - শেখ হাসিনা ৭ বছর সময় পেয়েছেন এই দুইজনের কিছু করার - কিন্তু নির্যাতিত হয়েও উনি ধৈর্য্য ধরেছেন - আশা করি এই বিষয়ে উনি এর চেয়ে বেশীদুর যাবেন না। দুইজন অংহকারী মানুষ হিসাবে নিজেদের সকল আইনের বাইরে নিজেদের বিবেচনা করছেন উনারা - মামলা হলেই শাস্তি হয়ে যায় না - হাইকোর্টে একটা রিট করে মামলাগুলো স্থগিত করা খুবই সহজ কাজ - কিন্তু এই দুইজন বসে বসে এখন মামলা গুনছেন আর ক্ষতিপুরনের অংক যোগ দিয়ে তা পত্রিকায় প্রচার করে জনমত বিভ্রান্ত করা চেষ্টা করছেন
এদের পুরো চরিত্র আবার দেখা দিয়েছে - মামলার সংখ্যা দেখিয়ে জনগনের সহানুভূতি যোগাড় করতে চাইছেন - দুই পরষ্পরবিরোধী দলের কোন্দলকে কাজে লাগাতে চাইছে - - ইতোমধ্যে বিএনপি সেই ফাঁদে পাও দিয়ে ফেলেছে - সুতরাং উনাদের কৌশলগুলো কাজ করছে বলেই মনে করা হচ্ছে। দিন শেষে উনারা আবার প্রমান করবেন - সকল সমস্যার মুলে রাজনীতিবিদগন আর সুশীলরা হলো ধোঁয়া তুলশীপাতা।
তবে বাংলাদেশের মানুষ আগের চেয়ে অনেক সচেতন - প্রতারকদের ফাঁদে পা দেওয়ার সম্ভাবনা কম।
সবচেয়ে ভাল হতো যদি এই ভুল স্বীকার করে মাহফুজ আনাম পদত্যাগ করতেন - যারা প্রতিনিয়ত বিদেশের উদাহরন দিয়ে দেশের মানুষকে নসিহত করেন - নিজেদের বেলায় তা পালন করেন না - এরা হলো সত্যিকারে হিপোক্রেট - মাহফুজ আনাম আর মতিউর রহমানের মতো হিপোক্রেটরাই বাংলাদেশের ইন্টেলেকচুয়াল - এইটাই হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বদ নসীব।
১. ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৬:৪৫ ০