"মত প্রকাশের অধিকার, প্রাইভেসি রক্ষার অধিকার ও সিকিউরিটির প্রশ্নগুলোকে আপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষের ব্যাপার বলে মনে করেন নাকি? আমি মনে করি না।"
এবার আপনার প্রশ্নের জবাব দেই।
১) মত প্রকাশের অধিকার: - স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে চিহ্নিত বিরোধী পক্ষের মত প্রকাশের অধিকার নেই। পিরিয়ড। সেই মত হলো বাতিল এবং পরাজিত - যাকে বাতিল করতে ৩০ লক্ষ মানবসন্তান জীবন দিয়েছে। এই কথাটা আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত। কারন পরাজিতপক্ষ যখন সুযোগ পাবে তখন তথ্যসন্ত্রাস ঘটিয়ে বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। যেমন ধরুন ৭১ এর সাথে ৭৪ এর দূর্ভিক্ষকে এক করে প্রমান করার চেষ্টা করবে ৭১ এর আগে ভাল ছিলাম। আর এই কারনেই বাংলা ভাইএর ফাঁসির আগে বিরাট দাবীর পরও তাদের মিডিয়ার সামনে আনা হয়নি - কারন ওদের মত একটা স্বাভাবিক সমাজের জন্যে হুমকীর এবং বিপর্যয় সৃস্টিকারী। ওরা হয়তো দাবী করতো দেশের বিচার ব্যবস্থা দূর্নীতিগ্রস্থ - কিন্তু বোমা মেরে বিচার হত্যা করা অধিকার ওদের ছিলো না। তেমনি - রাজাকারদের এই দেশের মানুষকে হত্যা বা নারীদের পাকি সৈন্যদের হাতে তোলে দেওয়ার কোন অধিকার ছিলো না - ওরা দেশের এবং জাতির শত্রু।
২) প্রাইভেসি রক্ষার অধিকার: এই অধিকার বলতে কি বুঝাচ্ছেন আমি ঠিক বুঝি না। সামহোয়ারে কারো প্রাইভেসি হুমকীর সন্মুখিন এমনটা দেখিনি। তবে যখন একজন রাজাকার বা মুক্তিযুদ্ধার সন্তান নিজেকে পরিচিত করে তাদের লেখার মাধ্যমে সেটা আর প্রাইভেট থাকে না - পাবলিক হয়ে যায়। এখানে সামহোয়ারে সার্ভারের সিকিউরিটির প্রশ্নটা জড়িত। কারন আমি যদি বলতে না চাই আমি কোথার থেকে ব্লগিং করছি - সামহোয়ারের ভিতরের লোকজন ছাড়া কারো পক্ষে আমার আইপি জানা সম্ভব নয়। সুতরাং আপনি জনি সামহোয়ারে ভিতরের লোকজনকে ইংগিত করে থাকে - আমার সন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
৩) সিকিউরিটির প্রশ্নগুলো: সিকিউরিটির বিষয়টাও সামহোয়ারের কর্তৃপক্ষের ক্যাপাবিলিটির উপর নির্ভর করে। আপনি যদি প্রক্সি সার্ভার ব্যবহার করেন। আর আপনার পরিচয় না দেন ( যেটা সামহোয়ারের রাজাকার মনস্ক প্রায় সবাই করে) তা হলে একজন ব্লগার যতবড় কম্পুগুরুই হোক না কেন - আপনাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হবে না। যদিনা সামহোয়ার থেকে কেউ সাহায্য না করে। তা ছাড়া - সামহোয়ারে রেজিস্ট্রেশন করার সময়ও তেমন কোন তথ্য ( যেমন আইডি বা ক্রেডিট কার্ড নাম্বার দিতে হয় না - যা একজনের ব্যাংক একাইন্ট বা ক্রেডিট স্টেটাসকে ক্ষতি করার সুযোগ থাকবে)। সুতরাং আপনার সিকিউরিটির প্রশ্ন তোলার কোন যৌক্তিক ভিত্তি নেই।
৪) আপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষের ব্যাপার বলে মনে করেন নাকি? বলা হয়েছে। । উপরের বিষয়গুলো বায়বীয়। কোন সুনির্দিস্ট ভিত্তি নেই।যার ফলে আইন বা নীতিমালা করে এগুলো নিশ্চিত করা যাবে। বিষয়গুলো পুরোপুরি সামহোয়ারের কারিগরী আর ইন্ট্রিগ্রিটির উপর নির্ভরশীল।
বরঞ্চ আপনার গতকালের শ্লোগানটা বরঞ্চ বেশী গ্রহনযোগ্য ছিলো।
"ভার্চুয়াল বখাটেদের বিরুদ্ধে আইন চাই।"
এইটা সমর্থন করি। কিন্তু সমস্যাটা হলো - এই বখাটে কারা। যারা ব্লগে আসে "সুদাসদন" নাম নিয়া আর একটা রাজনৈতিক দলকে গালাগালি করে। বা আসে "আপনি কি মানুষ না আওয়ামীলীগ" নাম নিয়া। নাকি যারা এসেই শুরু করে "মুক্তিযুদ্ধের ব্যবসায়ী" বা "মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে" মিথ্যাবাদী বা ৩০ লক্ষ মানুষ মরে নাই। বা কুকুরে খাচ্ছে আমার ভাইএর লাশের ছবিটাকে বলে ফেইক।
নাকি ওদের গালি দেওয়া ব্লগাররা?
প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুবই সহজ।
জেবতিক আরিফের একটা লেখা ছিল :
আরিল,এই সিদ্ধান্তটা আপনাকে নিতেই হবে,এখুনি.. ২৬ শে এপ্রিল, ২০০৭ রাত ১০:৪৩
আমার মনে হয় - ব্লগের আজকের অবস্থা হতো না - যদি কর্তৃপক্ষ এই লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়তো। সেটা না করে দেখা গেল রাজাকারিতার পক্ষের লেখাকে (মতপ্রকাশের স্বাধীনতার চরম হাস্যকর প্রদর্শনী) প্রমোট করার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লেখকদের ব্যান করা শুরু করলো। তারপরের ইতিহাস সবাই জানে।
তাইলে উপায়:
সমাধানটা খুবই সহজ। বাকস্বাধীনতার ফাঁকা আওয়াজের ভিতর দিয়ে রাজাকারিতা প্রমোট করা বন্ধ করতে হবে। ব্লগের নীতিমালায় সুস্পস্ট ভাবে উল্লেখ থাকবে - মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলা হয় এমন কোন মতামত ( শেখ মুজিব স্বাধীনতা চায় নি, ৩০ লক্ষ মানুষ মারা যায়নি, কেউই ধর্ষিতা হয়নি, যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রার্থীর চরিত্র খারাপ ইত্যাদি) প্রকাশ করা যাবে না।
আর যারা বাংলাদেশের জন্মের বিষয়ে প্রশ্ন তোলবে তাদের বিষয়ে জিরো টলারেন্স অবস্থান নেবে সামহোয়ার। "এক আইপি এক নিক" নীতিতে তাদের আইপি ব্লক করা হবে।
মুল কথা হলো একটা রাজাকারিতা মুক্ত ব্লগের নীতিমালাই সকল সমস্যার সমাধান দেবে।
আসুন - একই সুরে কথা বলি।
সুস্থ্যধারা ব্লগিং এর লক্ষ্যে রাজাকারিতা মুক্ত নীতিমালা চাই!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১০:৩৩