২০০৮ সালে নির্বাচনে এক প্রকার আলৌকিক ভাবে বাংলাদেশের ক্ষমতা পায় আম্লীগ, অনেক আশা ভরসা ও বাংলাদেশ কে লালে লাল করে দেওয়ার মূলা দেখায় বাংলাদেশের জনগণকে। মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি, ১০ টাকা চালের দাম ইত্যাদি ইত্যাদি মূলার কোন শেষ নাই। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে এটি আসলেই আম্লীগ। আসুন দেখে নিই আম্লীগ তাদের কথা কতটুকু রেখেছে আর কতটুকু রাখতে পারেনি।
১. ইশতেহারের ২ ধারায় বলা আছে, “রাষ্ট্র ও সমাজের সব স্তরের ঘুষ, দূর্নীতি উচ্ছেদ, অনোপার্জিত আয়, ধারখেলাপী, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, কালোটাকা ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে”।
এবার আসেন এর একটু চিন্তা করি প্রথমে চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী ও পেশী শক্তি নিয়ে। আমাদের দেশে কি এখন টেন্ডারবাজী কমেছে? টেন্ডারবাজী নিয়ে মারামারি হানাহানি যদি ছাত্রলীগ আর শিবির বা ছাত্রদল হত তো বলার ছিল যে পরস্পর বিরোধী দল হওয়ার কারণে এমনটি কিন্তু ছাত্রলীগের দুইগ্রুপ ২০০৮ থেকে আজ পর্যন্ত কতবার সহিংশতায় জড়িয়েছেন কতবার পত্রিকার শিরোনাম তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সব ঘটনা উল্লেখ করতে গেলে হয়ত ব্লগের পাতা ভরে যাবে। তবুও তাদের কাহিনী শেষ হবে না। দূর্নীতি, বাংলাদেশ মনেহয় কিছুদিন পিছিয়েই গিয়েছিল। দূর্নীতি তে ১নং যখন তখন আমাদের সেলিব্রেট করার প্রয়োজন ছিল। এখন আবার সেই সাফল্যে দিকেই আমাদের পথ চলা। আবুলরা আমার সোনার বাংলাদেশ কে দক্ষিণ এশিয়াতে দূর্নীতিতে এক নাম্বার করেছে, আগামী বছর ইনশেআল্লা ১ এ পাঠাবে, পুরোনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে। শাবাস আবুল।
৫. ৬ ধারায় বলা আছে, “দলীয়করণমুক্ত অরাজনৈতিক গণমুখী প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে”।
যদি এসব বাস্তবায়ন করে তবে আম্লীগ যে দূর্বল হয়ে যাবে এবং প্রতিহিংসার এ রাজনীতির দেশে টিকে থাকা মুশকিল, পারেনি।
৩. ধারা ৭.১-এ বলা হয়েছে ২০১৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ করা হবে। আবার, রুপকল্পে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ করা হবে। বাংলাদেশে কি এর কোন লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি?? অবস্থা দেখে তো মনে হচ্ছে আগামী ২০১২/২০১৩ সাল থেকে দূর্ভিক্ষ সৃষ্টি হবে বাংলাদেশে আর দূর্ভিক্ষ শুরু হলেতো আপনারা (সকল দলের রাজনৈতিক নেতা) বক্তব্য রাখবেন, সংবাদ সম্মেলন করবেন তবে বাংলাদেশে নয়... পাড়ি জমাবেন কোন ভিন দেশে কিন্তু দূর্ভিক্ষের মধ্যে থেকেও দেশ ছাড়তে পারবেনা এই বাংলার জনগণ। ধারা ৪-এ বলা আছে, ‘২০১৩ সালের মধ্যে দারিদ্রসীমা ও চরম দারিদ্রের হার যথাক্রমে ২৫ ও ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে"।
আমার সাধারন জ্ঞান থেকে বুঝি এত অল্প সময়ে (মাত্র চার বছর) এগুলো সম্ভব নয় কোন দিনও তাই আজো হয়নি। ৬. ১৫.৬ ধারায়, "প্রাচ্য ও পশ্চাত্যের সংযোগস্থল হিসেবে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষে সর্বাধুনিক আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নতুন বিমানবন্দর নির্মান করা হবে"। যায়যায়দিনে প্রকাশ (১৩.১২.০৮) এটি নির্মান করা হবে ঢাকায়। আহ! কি চমৎকার! শুনলে মনে হয় নেত্রী কত আন্তরিক আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে। কথাটা হল- নিরাপদে সড়কে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যেতে পারি না, ঢাকা থেকে ঈদে মানুষ বাড়ীর বদলে চলে যায় না ফেরার দেশে তো আন্তর্জাতিক মানের বিমান বন্দর দিয়ে জনগণ কি করবে?? বললেন একটা করলেন আরেকটা- বুঝা যায় আপনারা রাঝনিতিবিদ।
আপনারা পারেন রাঝনিতি করতে। জনগণের সাথে এই সব ধোকাবাজী করেও তাদের মন ভরেনা। শুরু হলো নতুন পায়তারা....... বাংলাদেশ কে ভারতের অংগরাজ্য বানানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যে সময়টাতে বাংলাদেশের জনগণ টিপাই মূখ নিয়ে শংকিত..... টিক সেই মুহুর্তে ভারতকে ট্রানজিট দিতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে তিস্তাতে, এ কোন ধরণের দেশ প্রেম?? আমাদের অর্থ মন্ত্রী আবুল মাল বলেছেন টিপাই মূখে বাধ দিলে বাংলাদেশের নাকি লাভ আর লাভ, হিস্সা নিবে ভারত থেকে। কথা হল ফারাক্কা থেকে তো কিছুই নিতে পারলেন না । বরং বর্ষা কালে বন্যা পান আর শুষ্ক মৌসূমে পান খরা। মরে কৃষক সমাজ। আপনারা থাকেন এসি রূমে। বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভারতীয় সংস্কৃতি। বাংলাদেশের পেক্ষাগৃহে এখন আর স্থান পাচ্ছেনা বাংলা ছবি। এসব কি বাংলাদেশকে নিয়ে চরম ষড় যন্ত্রনয়??
জনগনের মূখে মূখে এখন রব উঠছে-
৭১ এর রাজাকার- গোলাম আজম, নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী
১১ এর রাজাকার- কয়েক আবুল আর হাসিনা।
জনগণের স্বার্থের দিকে ফিরে তাকান..... নয়তো ২০১৩ সালে চরম মূল্য দিতে হবে।
উৎস