ছেলেটা প্রতিবাদ করতে গিয়েছিল।পরিনতি হল ছেলেটার পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার হারানো।নির্মমভাবে ছেলেটাকে মেরে ফেলল সেই পশুগুলো যাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েছিল ছেলেটা।ছেলেটা প্রতিবাদ করতে গিয়েছিল তার বোনকে উত্যক্ত করার বিরুদ্ধে।এটাই তার অপরাধ।অথচ তারপর কি হল? সবাই যে যার মত ব্যস্ত হয়ে গেল।যেন এই প্রাণটার ঝরে যাওয়াটার কোন দামই নেই।
আমরাও ব্লগে পোস্ট দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি ঘাতকদের বিরুদ্ধে, স্বান্তনা খুঁজছি এই তাজা প্রাণটা ঝরে যাওয়ার পক্ষে।কিন্তু তাতে কি কিছু হবে? হবেনা।সমাজ যেখানে একজন বোনের স্বাভাবিক বেচে থাকা নিশ্চিত করতে পারেন, যেখানে এই নিশ্চয়তা আদায়ের জন্য পরিবারের লোকদের খুন হতে হয় আর তারপরেও সমাজ চুপ করে থাকে, সেখানে কিছুতেই কিছু হবেনা। ছেলেটা খুন হল, কয়েকদিন প্রশাসন একটু ফালাফালি করবে।তারপর আবার যেইকে সেই।আবার মেয়েটিকে উত্যক্ত করা শুরু হবে।পরিবারের কেউ হয়তো আর সামনে আগানোর সাহস পাবেনা।শেষে হয়তো মেয়েটির কোন করুণ পরিনতি হবে।এভাবেই তো হয়।
অথচ আজ আপনি একটা বিদ্রোহের ডাক দিন।এই হত্যার বিরুদ্ধে একটা প্রতিবাদের আয়োজন করুন।শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হলেও সেখানে দেখেন কয়জন অংশ নেয়।প্রশাসন দেখবেন সেখানে ঠিকই বাধার পাহাড় তুলে দেবে।অথচ এই প্রশাসন আমাদের বোনদের রাস্তায় হাঁটা চলার নিরাপত্তাটুকুও দিতে পারেনা।এই সমাজই তখন আপনাকে আমাকে উচ্ছৃঙ্খল হিসেবে ধরে নিয়ে নাক কুঁচকোবে, অথচ এই তাজা প্রাণটা ঝরে যাওয়ার পরেও তারা যে যার মত ব্যস্ত।
এই আমাদের সমাজ, এই আমাদের প্রশাসন, এই আমাদের দেশ। এই দেশে বাচতে হলে বোধহয় এভাবেই বাঁচতে হবে।তবে একটা কথাও মনে রাখতে হবে, সবাই যে যার মত ব্যস্ত থাকতে গিয়ে যেন যে যার মত শেষ না হয়ে যায়।দশের লাঠি কিন্তু একের বোঝা। আপনি যেমন আজ আপনার মত ব্যস্ত রইলেন, আপনার বিপদেও এরকম অন্যরাও তাদের মত ব্যস্ত থাকবে।আর তাতে লাভ হচ্ছে ওই বখাটেটার, ওই সন্ত্রাসীটার আর ফাঁকি মারার তালে থাকা ওই পুলিশ প্রশাসনটার।আপনার আমার কিন্তু কোন লাভই হচ্ছেনা।
এভাবে আর কত অকাল মৃত্যু, আর কত পরিবারের আহাজারি, আর কত বোনের নীরবে চোখের জল ফেলা, আর কত প্রেয়সী বা স্ত্রীর আড়ালে বুক চাপড়ে চোখ ভাসানোর দৃশ্য দেখার পর আমাদের মধ্যে একটু মানবতার উদয় হবে? শত হলেও ছেলেটা তো ভালো কিছু করতেই গিয়েছিল।
কৃতজ্ঞতাঃ এই পোস্টের অনুপ্রেরণা ইমন জুবায়ের ভাইয়ের এই পোস্ট টা।
সংযুক্তিঃ ৩০ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ১১:১৬ তে ব্লগার পারভেজ আলমের পোস্ট মামুন হাওলাদারএর হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে এবং দেশের সাম্প্রতিক ক্রমবর্ধমান ইভটিজিংএর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি।