নাফাখুম যাবার খরচ আগের চেয়ে বেড়ে গিয়েছে। আমরা ঘুরে এলাম গত সপ্তাহে। ব্লগ থেকে যা খরচের ধারনা নিয়ে গিয়েছিলাম সময়ের সাথে সাথে সেটা চেন্জ হয়ে গিয়েচে আবার ঐ এলাকার লোকজন 'ব্যাবসা'-ও শিখে গিয়েছে!!!
দল হিসেবে ৬জন করে ইউনিট হলে আমার মনে হয় সবচে সুবিধা। কারন মাঝি আর গাইড বাদে নোউকায় ৬-৭ জন এর বেশি উঠা ঠিক না।
যা হোক , খরচের ধরনটা হবে এমন-
--প্লাস্টিকের মজবুত স্যনডেল। পুরান ঢাকা থেকে ১৩০ টাকা দিয়ে কিনছিলাম। অসাধারন গ্রিপ আর পারফরমেনস। ওডোমস মাঝারি -৪৫ টাকা, ম্যালরিয়া প্রতিষেধক ট্যাব ক্লোরোকুইন ১৫ টাকা( ট্যুর শেষে এসে ১ সপতাহ পর আরেকটা খেতে হবে), নাপা, ওরস্যালাইন, ব্যাথানাশক, ব্যানড এইড- প্রয়োজনমত।
-- ঢাকা থেকে বান্দরবান = ৪৮০ টাকা (নন এসি)
অথবা, ঢাকা- চিটাগাং=৩৮০টাকা, চিটাগাং-বান্দরবান=৯০টাকা
--বানদরবান- থানচি বাস= ১৯০ টাকা, রাস্তা ভান্গা থাকার কারনে একবার বাস চেন্জ করতে হয় তাই টিকেট টা যত্ন করে রাইখেন - নৈলে ঐ বাস চেন্জ করার পর আবার ভারা দেয়া লাগতে পারে । চাইলে মাঝখানে নেমে নীলগিরি রিসোরট টা দেখে ফেলতে পারেন, পরের বাস ২ ঘন্টা পর আসে তখন ওটায় উঠে পরবেন। বাসের টাইম হল
বান্দরবন থেকে সকাল ৮টা, ১০.৩০টা, ১২.৩০ এবং ২.৩০।
থানচি থেকে- সকাল ৮টা, ১০টা, ১২টা, ২টা।
-- থানচি পৌছে নৌকা পারাপার ৫ টাকা।
-- বিজিবি এবং থানচি পুলিশের কাছে দলের সবার নাম, ঠিকানা, বাবার নাম, পেশা, ফোন নম্বর সেইসাথে মাঝি ও গাইডের নাম জমা দিতে হবে। থানচি থেকে গাইড নেয়া বাধ্যতামূলক করে ফেলেছে বিজিবি।
-- গাইড এর থাকা-খাওয়া আপনের দায়িত্ব সেই সাথে তাকে ৫০০টাকা/দিন হিসেবে দিতে হবে,আর ১০০টাকা গাইড সমিতিতে জমা দিতে হবে। এই গাইড আবার ণাফাখুম যাবে না- যাবে রেমাক্রি পর্যন্ত!! বাংগালী গাইড দের ধান্দা থাকে কিভাবে আপনার টাকা খসানো যায়। আমাদের গাইড ছিল আবু হোসেন- ০১৮৩০৬৬৭০৯৪। লোকটারে ভালই তবে সব জায়গায় আপনার খরচ বাড়িয়ে দেবে
-- নৌকা ভাড়া পরবে রেমাক্রি যাওয়া আসা ৪৫০০ টাকা (২ দিনের হিসেবে)।পাহড়ি মাঝি নেয়া ভাল তবে আজকাল কিছু অযোগ্য পাহাড়ি নাকি মাঝি হয়েছে। তাই বিজিবি এর কাছে পরামর্শ করে নেবেন।
-- থানচি থেকে বড় সাইজের পলিথিন(পিস ২০-২৫টাকা) এবং রশি কিনে নেবেন। পলিথিনে আপনাদের ব্যাগগুলা ঢেকে নিবেন যাতে পানি না লাগে। আর রশি লাগবে ণাফাখুম যাবার সময়। লাইফ জ্যাকেট নিতে পারেন ৫০ টাকা/দিন। লাইফ জ্যাকেটে আমার কোনো ভরসা নাই।
-- ফোনের নেটওয়ারক আছে টেলিটক আর রবি-র। সেটা আবার তিন্দু পৌছহার আগেই নাই হয়ে যায়। সো নৌকায় উঠার সময় মোবাইল ঐ পলিথিনে ঢুকিয়ে নেবেন।
-- তিন্দু তে থাকার হোটেল হয়েছে , নাম- হোটেল ওয়ান আবাসিক। ৩ জনের ছিলাম এক রুমে- একটা ডাবল খাট আর আর একটা সিংগেল খাট এর । ভাড়া পরেছে ৩০০ টাকা. খাওয়া পড়বে ৯০টাকা পার প্লেট। পাহাড়ি মুরগি সাথে ভাত আর আলু ভরতা/ ভাজি। চা ৫টাকা করেই। বেনসন কিনতে হলে এখানেই কিনে নিন। এরপর আর পাওয়া যায় না।
-- পানি বেশি থাকলে রাজাপাথর পার হতে হবে পাশের জোকের পাহাড় ধরে। জোক ধরলেও ভয়ের কিছু নাই। রক্ত বেশি পরলে- ব্যান্ড এইড ক্রস করে লাগিয়ে নেবেন। পানি বেশি থাকলে আর মাঝি ভাল না হলে ঐ অংশে নোউকায় পার না হওয়ায় উচিত
সাতার না জানলে ভয় কারে কয় পাওয়া শুরু করবেন এর পর থেকে..।
দুর্গ পাহার- বন্দর নামক একটা খরস্রোতা জায়গা পার হবার পর....
--রেমাক্রি থেকে আবার ঐ নাম-ধাম জমা দিবেন বিডিআরের কাছহে। গাইড নিবেন। গাইড ৫০০টাকা আর সমিতি চারজ ১০০টাকা=টোটাল ৬০০ টাকা। সাথে নিবেন কলা - বিস্কিট-স্যালাইন। কলা ১.৫০টাকা করে। (থানচি থেকে নিয়ে আসা গাইড বৈসা ঘুমাইবো, বিড়ি ফুকবো -- ফাউ ফাউ টাকাও লইব)
এরকম কিছহু জায়গায় নৌকার বদলে হেটে পার হতে হবে....
--নাফাখুম এর দিকে যাবেন, ২ঘনটা লাগে, ৩বার খাল পার হতে হবে- তাই সাতার না জানলে সাবধান। ঐ দড়ি যে নিয়া আসছহিলেন থানচি থেকে - ঐটা ইসতেমাল কৈরেন। স্রোত বেশি থাকলে আর সাহস বেশি নেয়ার দরকার নাই। ২য়বার ও ৩য়বার যখন খাল পার হটে হয় তখন গভিরতা বেশি। ২য়বার খাল পার হবার পর রাস্তা যায় আরো খারাপ হয়ে...।
-- নাফাখুম দেইখেন কিন্তু অনুরোধ নোংরা কইরেন না জায়গাটা। খাবারের প্যাকেট টা কস্ট করে সাথে করে নিয়ে এসেন। ঐখানে ফেলায়েন না।
নাফাখুম ঘোরা শেষ ? - এরপর শুনলাম অন্যদিকে আরকটা ঝর্ণা আছে নাম- লিক্ষ্যং ।রেমাক্রি থেকে ৩০ মিনিট নৌকায় যেয়ে ৩ঘন্টা ঝিরিপথে হেটে নাকি ঐখানে পৌছনো যায়!!!!
-- রেমাক্রি তে চেয়ারম্যানের বাড়িতে ছিলাম, ২ বেলা খাওয়া ও একরুমের ভাড়া সহ ১৫০০ টাকা দিয়েছিলাম।
--রেমাক্রিখুম এ লাফালাফি করার চান্স মিস কৈরেন না যদি পানি কম থাকে-
-- আসার সময় থানচি -বা.বন এর রাস্তায় নীলগিরি পার হবার পর মেঘের খেলায় মন টা জুরিয়ে গিয়েচে।
ছবিতে দুরে সমুদ্র দেখা যাচ্ছে
বেশি কিছু আর মনে পরচে না। বসের গুরুম গুরুমের ফাকে এর বেশি আর লিখতে পারলাম না !!!
তবে কস্ট করে নাফাখুম নিয়ে সবচে বিরক্তিকর ব্লগ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।