somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই স্টেশনের চত্বরে হারিয়ে গেছি, শেষ ট্রেনে ঘরে ফিরব না...

০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



স্টেশনে কোন ট্রেন নেই। একটু দূরে পুরনো রেললাইনের পাশে একসারি চায়ের দোকান। ফাঁকা একটা দোকান দেখে বসে পড়লাম। মধ্যবয়স্কা দোকানি টিভিতে স্টার জলসাতে মগ্ন। পাশেই একটা কামারের দোকান। গনগনে আগুন জ্বলছে। একটু দূরে বসে একজন একটা দড়ি টেনে টেনে হাপরে বাতাস দিচ্ছে। আর কামার হাতুড়ি পিটিয়ে চলেছে আগুনরঙা লোহায়। কি অদ্ভুতভাবে একখণ্ড লোহা থেকে দু'চার মিনিটের মধ্যে বানিয়ে ফেলছে ধারালো বটি! বিশ্রী স্বাদের তিতকুটে এক কাপ চা খেতে খেতে অবাক হয়ে দেখছিলাম। কামারের দোকানের চোখ ঝলসানো আগুন বাদে আশেপাশের সবকিছুই পুরনো দিনের মুভির মতো সাদা কালো। ওপাশের দোকানটাতে বেশ কয়েকজন মানুষ। বিভিন্ন বয়সের। গল্প চলছে তুমুল। কারও যেন কোন তাড়া নেই কোথাও যাবার। আয়েস করে চুমুকের পর চুমুক চলছে চায়ের কাপে। গল্প একসময় গড়াল চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে। তারপর চিরাচরিত নিয়মে আওয়ামী লীগ বিএনপি। ভারত পাকিস্তান। উল্টোদিকে একটা পর্দা টানা হোমিওপ্যাথি দোকান। দোকানের চালের উপর একটা বিড়াল। আরামদায়ক আলস্যে ঘুম ঘুম চোখ মেলে তাকিয়ে আছে। রেললাইনের পাশে গড়াগড়ি দিয়ে ধূলো মাখামাখি করছে কয়েকটা বাচ্চা ছেলেমেয়ে। পাশের আরেক দোকানের সামনে একটা বাচ্চা মেয়ে। কি একটা চেয়ে না পেয়ে চিৎকার দিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি। সেদিকে কারো কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। দুজন হাওয়াই মিঠাইওয়ালা। রেললাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে দূরে মিলিয়ে গেল। রঙচটা মলিন পোশাক পরিহিত এক কিশোরী রেললাইনের উপর রোদ্দুরে নেড়ে দিয়ে গেল দুটো জীর্ণ মলিন কাঁথা। হঠাৎ কোথা দেখে ছুটে এলো দুটো বাচ্চা ছেলেমেয়ে। হাতে প্লাস্টিকের ছোট বোতল। ভিতরে রঙিন পানি। বোতলের ছিপিতে ছিদ্র। একজন আরেকজনের গায়ে মহা উৎসাহে পানি ছিটাচ্ছে আর ছুটোছুটি করছে। হঠাৎ হুইসেলের শব্দে ধ্যান ভাঙলো। ট্রেন আসছে। চায়ের বিল মিটিয়ে উঠে পড়লাম। সূর্য এখন প্রায় মাথার ওপর। ট্রেনটা স্টেশনে পৌঁছানো পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। তারপর হাঁটতে শুরু করলাম। আবার। গন্তব্য অজানা।



* একা একা উদ্দেশ্যবিহীন হাঁটতে ভালো লাগে। কোন কারণে মন অস্থির থাকলে সেদিন আরও বেশি ভালো লাগে। ফেরিঘাট, নদীর পার, রেল স্টেশন, ব্যস্ত রাস্তা। হাঁটতে হাঁটতে টং দোকানে এক কাপ চা। ঝুপড়ি দোকানে সিঙ্গারা। তারপর আবার হাঁটা। হাঁটতে হাঁটতে মানুষ দেখা। রং বেরঙের মানুষ। রঙের মানুষ। মানুষ; অথবা রঙিন ফানুস।



** অনেকদিন পর আবার ব্লগে এসেছি :) :) কি পোস্ট দেব ভাবতে ভাবতে মনে হলো আপাতত এটাই দিয়ে দেই। লেখাটা কয়েকমাস আগের। আবার ভাবছিলাম এই পাগল পাগল পোস্টটা দেয়া ঠিক হবে কিনা! আমার ব্লগিয় ক্যারিয়ার হুমকির সম্মুখে পড়তে পারে! :-* :P ভাবতে ভাবতে শেষ পর্যন্ত দিয়েই দিলাম!! 8-| B-) :) :)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ১:১৫
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিচারের জায়গা না পেলে মানুষ প্রেত হয়ে ওঠে

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১২ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৩৯


(সামাজিক অবিচার, রাষ্ট্রীয় অনুপস্থিতি এবং আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঠামোর মধ্যে সাধারণ মানুষ কীভাবে হারিয়ে যায়।)

মানুষ যখন বারবার অবিচারের শিকার হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একদিন এসো সন্ধ্যে ফুরোলেই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৫



ভালোবাসা ছড়ানো পাতায় পাতায়, সবুজাভ স্নিগ্ধ প্রহর আমার
এখানে উঁকি দিলেই মুগ্ধতারা চুয়ে পড়ে টুপটাপ;
ধূসর রঙ প্রজাপতিরাও এখানে রঙিন ডানায় উড়ে,
কেবল অনুভূতির দোর দিতে হয় খুলে, চোখগুলো রাখতে হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

চীনের জে-১০ যুদ্ধবিমান কোনো চকচকে ল্যাব বা বিলাসবহুল ফ্যাক্টরিতে জন্মায়নি

লিখেছেন নাঈম আহমেদ, ১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৬

চীনের জে-১০ এর পেছনেও রয়েছে সেই ত্যাগ আর সংকল্পের গল্প—
১: গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) দলের অক্লান্ত পরিশ্রম।
২: বাইসাইকেলে চেপে কাজে যাচ্ছেন প্রধান প্রকৌশলী সু চিশৌ।
৩: প্রথম উড্ডয়নের পর কেঁদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Bangladesh bans ousted PM's Awami League under terrorism law

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১২ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬





হায়রে এরেই বলে কর্মফল। ১৭ টা বছর গুম , খুনের মাধ্যমে এক ভয়ের রাজ্য তৈরী করে কেড়ে নেয়া হয়েছিল মানুষের বাকশক্তি। চোখ, কান, মুখ থাকতেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিন গেলে আর দিন আসে না ভাটা যদি লয় যৌবন

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১২ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৬


এমন কোনো ইস্যু আছে, যা নিয়ে জাতি পুরোপুরি একমত? ৫০%ও একমত এমন কোনো বিষয় চোখে পড়ে না। একপক্ষ রবীন্দ্রনাথের গান জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মনেপ্রাণে ধারণ করে, আরেক পক্ষ বদলাতে চায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×