সামুতে আমরা Click this link/এখানে ক্লিক করুন টাইপ লেখা দেখতে দেখতে ক্লান্ত। এমন যদি হতো এ লিংকগুলো বাস্তব রুপ নিয়ে নিতো, অক্ষরগুলো ছবিতে রূপান্তরিত হয়ে যেত!
মোবাইলের এই দাপুটে যুগে এখন সেটাও সম্ভব। আর সেটা সম্ভব হয়েছে QR কোড-এর মাধ্যমে।
বারকোড তো আমরা সবাই চিনি। প্রায় সবধরণের পণ্যের গায়ে লম্বা কিছু মেশিন-রিডেবল সমান্তরাল দাগ, যাতে পণ্যের মূল্য, মেয়াদ, ব্যাচ জাতীয় তথ্য থাকে। সেই বারকোডের বড় ভাই হলো QR কোড। বারকোড হলো একমাত্রিক আর QR কোড হলো দ্বিমাত্রিক, তাই এতে বেশি তথ্য দেয়া সম্ভব। একটি কোড ৭০৮৯ টি সংখ্যা বা ৪২৯৬ টি অক্ষর ধারণ করতে পারে!
একটি QR কোড দেখতে এরকম
বারকোড আর QR কোড এ পার্থক্য দেখুন
সাধারণ বারকোডের অর্থোদ্ধার করার জন্য দরকার হয় আলাদা রিডার। যেটা লেজারজাতীয় আলোর বীম দিয়ে বার কোড স্ক্যান করে। কিন্তু QR কোড পড়ার জন্য স্মার্টফোনই যথেষ্ট। ফোনের ক্যামেরায় তোলা ছবি প্রসেস করে সেখান থেকে ডেটা পড়ে ফেলা সম্ভব। এজন্যই এর নাম Quick Response বা QR কোড!
অপেক্ষাকৃত চটকদার ও নতুন জিনিসের প্রতি মানুষের চিরায়ত আকর্ষণ রয়েছে। এ আকর্ষণকে পুজিঁ করে বিপনণের মাধ্যম হিসেবে এ কোড ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পত্রিকার পাতা, কফি কাপ, টি-শার্ট, কাঁচ যেকোন যায়গায় এই ছোট্ট চারকোনা কোড ছাপানো যায়। ৪২৯৬ অক্ষর দিয়ে প্রচারণা খারাপ হবে না! আবার ধরুন, আপনি বিজনেস কার্ড ছাপাবেন। আপনি একটি QR কোড দিয়ে আপনার যাবতীয় একাউন্টের ঠিকানা (টুইটার, ফেইসবুক, ইউটিউব, লিংকড ইন, ব্লগ ইত্যাদি) কার্ডে দিয়ে দিতে পারেন।
বিজ্ঞাপন ও পোস্টারে QR কোডের ব্যবহার
সম্প্রতি হলান্ডে ৫ ও ১০ ইউরোর বিশেষ কয়েন চালু করা হয়েছে যার একপৃষ্ঠে রয়েছে QR কোড।
হলান্ডে চালু হওয়া কয়েনের ছবি
পত্রিকার বিজ্ঞাপনে QR কোড
গুগলের ইউআরএল শর্টেনার যারা ব্যবহার করেন খেয়াল করলে দেখবেন প্রতিটি সংক্ষিপ্ত লিংকের জন্য একটি করে QR কোডও তৈরি হয়।
কিছু কিছু লাইব্রেরি ও বইতে এ কোডের ব্যবহার শুরু হয়েছে। যেমন জুল ভার্নের “এরাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন ৮০ ডেইজ” বইটির সর্বশেষ সংষ্করণে ব্যবহার করা হয়েছে QR কোড। যা দিয়ে বইয়ের ম্যাপগুলোতে থাকা লিংক আপনাকে নিয়ে যাবে গুগল ম্যাপে ওই নির্দিষ্ট জায়গাতে।
এর অনেক অদ্ভুত ব্যবহারও শুরু হয়েছে। যেমন, QR কোডের জন্মস্থল জাপানে এক মৃতব্যক্তির সমাধিফলকেও ছাপানো হয়েছে এই কোড, যাতে যে কেউ অতি সহজে মৃতের যাবতীয় তথ্য জানতে পারে। আবার পাঙ্কু পোলাপান QR কোড দিয়ে ট্যাটু আঁকাআঁকিও শুরু করেছে।
বাংলাদেশও QR কোড ব্যবহারে পিছিয়ে নেই। বেশ কিছুদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে এর ব্যবহার। সর্বশেষ দেখলাম গতকাল গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপনে ।
কিভাবে তৈরি করবেন বা পড়বেন QR কোড?
মোটেও কঠিন কাজ নয়। অ্যান্ড্রয়েড ওএস-সহ মোবাইল সেটগুলোতে সাধারনত বারকোড রিডার ইনস্টল করাই থাকে। না থাকলে এখান থেকে ডাউনলোড করা যায়। নকিয়ার সিম্বিয়ান S60 সেট গুলোর জন্য রিডার পাওয়া যাবে এখান থেকে। আরো যেসব সেটের জন্য রিডার সফ্টওয়ার পাওয়া যাবে তাদের লিস্ট আছে এখানে ।
QR কোড তৈরির জন্য একটি ভাল সাইট হলো এটি । এখান থেকে ইচ্ছামতো QR কোড তৈরি করে নিতে পারেন।
সবকিছু ঠিকঠাক করে থাকলে আপনাদের নিচের কোডটি পড়তে পারার কথা। পড়ে জানাবেন!

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া ও অন্যান্য।
ছবিসূত্র: গুগল
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১১ সকাল ১০:০৭