দুবাইয়ে জব্দ হয়েছে প্রায় আনুমানিক ৪ কোটি ৮০ লাখ দেরহাম (বাংলাদেশি ১০১ কোটি টাকা) এর জাল বা নকল মোবাইল ফোন। চমকে দেবার মতো খবর। কারণ আমাদের দেশের বেশিরভাগ আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান যেমন গেজেট এন্ড গিয়ার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইলসেট গুলো সাধারণত সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেই আমদানী করে থাকে। স্বল্প মুল্যে ভালো মোবাইল পাওয়ার আশায় যারা এসব সেট কিনেছেন বা কিনছেন তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার দশা হয়েছে নিশ্চয়ই! কম দামে ভালো জিনিস কে না চায়? কিন্তু সেই ভালো জিনিস যদি বদলে যায় নকলে তাহলে তো মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ারই কথা!
সংবাদটা চোখে পড়তেই ভিরমি খেয়েছিলাম। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এর দুবাই করেস্পন্ডেন্ট এঁর করা নিউজ। গত দু’ সপ্তাহে দুবাইএর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ষাট হাজার জাল মোবাইল সেট জব্দ করেছে দুবাই পুলিশ যার মধ্যে রয়েছে সনি, নোকিয়া , স্যামসাং সহ নামীদামী প্রায় সব সেটের ক্লোন! নিউজে পড়ে জানলাম ৯ আগস্ট থেকে এই অভিযান চালু হয়ে চলেছিলো ২৩ আগস্ট পর্যন্ত। তাতেই এই অবস্থা। সাধারন ক্রেতাদের জন্য সুসংবাদ, দুবাই পুলিশ জানিয়েছে ভবিষ্যতেও এই প্রক্রিয়া চালু থাকবে ।
এবার আসি, কাজের কথায়। আমরা যারা কিছুটা কম মূল্যে ভালো মোবাইল সেট খুঁজি তারা এইসব আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু কম মূল্যে ভালো জিনিস পেতে যেয়ে কি আদৌ লাভ হচ্ছে? উহু , বরং আমরা ঠকছি। কারণ ক্লোন সেট গুলো কিনলে আসলে বোঝার উপায় থাকে না যে তা নকল। এসব মোবাইলের না থাকে গ্যারান্টি না থাকে ওয়ারেন্টি। ফলে নষ্ট হলেই অতিরিক্ত কতগুলো টাকা গুনতে হয় শকের মোবাইল নষ্ট হলে অসম্ভব খারাপ লাগে। আরো সমস্যা আছে। আমাদের দেশে মোবাইল ফোন হারানো নতুন ঘটনা নয়। মোবাইল হারিয়ে গেলে ট্র্যাক করার উপায় হচ্ছে আইএমইআই নাম্বার। কিন্তু এসন জাল সেটে তো তাও থাকেনা। যার ফলে কিছুতেই এতো দাম দিয়ে কেনা সেটটা আর পাওয়া যায়না। তাছাড়া এসব মোবাইল দিয়ে যেহেতু ট্র্যাক করা যাচ্ছেনা, যেকোন অপরাধ কর্ম ঘটালেও অপরাধীকেও ট্র্যাক করা সম্ভব হয়ে উঠেনা। ব্যাপারটা অবশ্যই এলার্মিং।
আশার কথা হচ্ছে, সি আই ডি জানিয়েছে , তারা এই ব্যাপারে প্রায় ৪৫ জন কে গ্রেফতার করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও করা হয়েছে। এতে করে আশা করি, এইরকম জাল সেট তৈরি এবং তা চোরাই পথে আমদানি রফতানি অবশ্যই কমে যাবে।
নকল বা জাল মোবাইল কেনার হাত থেকে বাঁচতে হলে আমাদের নিজেদের কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন যেকোন মোবাইল কেনার সময় আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর না করে তাদের অনুমোদিত মোবাইলশপ থেকে কেনা, কেনার সময় হলোগ্রাম মার্ক দেখে কেনা, সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কেনা থেকে বিরত থাকা। এতে করে ঠকার চান্স অনেকাংশেই কমে যাবে।
মোবাইলফোন কেনার সময় সতর্কতা অবলম্বনই হচ্ছে আসল মোবাইল কেনার একমাত্র উপায়।