somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

না-এর নানাত্ব নিয়ে নানার্থক নাড়া

২৮ শে জুন, ২০০৭ বিকাল ৪:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

না শব্দটা নানাবাড়ির নাড়ুর মত ফেলনা না মোটেও। বরং না-টা যে কতটা নাটা নাটের গুরু তা না-এর হাতে নাজেহাল না হওয়া পর্যন্ত নানা মানুষই ধরতে পারে না। তাই না-এর প্রতি নানান মানুষের নাক সিঁটকানোয় নাড়া খাবেন না। না-শুনেই আঁতকালেন অ্যাঁ, নাকি আ। তো এই ‘আ’ এর জায়গায় ‘না’ বললেই আপনার নাক কাটা যাবে নির্ঘাত। না মানলে, শুধু আস্তিকের আ বাদ দিয়ে বলুন আমি নাস্তিক, নাভিশ্বাস নেমে যাবে। আর ‘হ্যাঁ’ এর জায়গায় যদি ‘না’ বলেন তবে নাড়ি-ভুড়ি নামিয়ে দিতে পারে কোনো না-মরদ। পরিস্থিতি যদি এতটা নাজুক না হয় অর্থাৎ নাঙা নানচাকুর নীচে যদি জানটা ধরা না থাকে তবে না-এর নামকীর্তনটা শুনতে পারেন।

আ- বা হ্যা, এসবের চেয়ে ‘না’ কম জরুরি এমন ভাবনাটা মাথা থেকে নামিয়ে দিন। বিশ্বভ্রমণে বেরুচ্ছে এরকম এক কুমারী মেয়েকে বিদায় জানাতে এসে না-হক নারাজ হয়ে পড়লেন পাড়ার বয়স্কা মহিলারা। নিজের নাক কেটে অন্যের নাচ ভঙ্গের মত ঘটনা। নিকা না হওয়া নাবালিকা নাম-না-জানা দেশে যাবে নাগর ছাড়া? মেয়ের মাকে তারা নানা কায়দায় নাস্তানাবুদ করলেন। কিন্তু নানা নালিশেও নাকাল হন না মেয়ের মা। নিশ্চিন্ত করতে তিনি জানালেন, মেয়েকে নানান ভাষায় 'না' বলা শিখিয়ে দিয়েছেন তার নানা। 'না'-এর বর্ণনা শুনে বয়স্কারা নাকি কান্না থামালেন। ভাবলেন, না, 'না' বলতে পারলে কোনো মুশকিলই নাগাল পাবে না। বিনা ঝঞ্চাটে দুনিয়া ঘুরতে ঝামেলা হবে না।

নারীজাতিরই 'না' শব্দের ওপর আস্থা বেশি, কোনো নাদান এই তত্ত্ব দিলে আমি নাকচ করতে পারবো না। তবে নারীর ‘না’-এর নেপথ্যে হ্যাঁ লুকিয়ে আছে এমন না-হক কথা আমি মানতে নারাজ। আইনি মানা আছে। না-কে হ্যা মনে হয়েছিল বলে আদালতে বেঁচে যেতে চায় অনেক নাছোড়বান্দা, যারা নিজেকে নায়ক ভেবে নির্জনে চেপে ধরে নাজুক নারীকে। পশ্চিমা বিশ্বে তাই নারীর 'না' যে আসলেই 'না' তা বুঝাতে চলে নানা রকম প্রচারণা।“রিড মাই লিপ্স, নো মিন্স নো”। অর্থাৎ ঠোঁটে যদি '‌‌না' বলে নারী তবে সেটা না-ই, মনে মনে 'না' এর নেপথ্যে 'হ্যাঁ' নুকানো ভেবে নারীকে নাজেহাল করবেন না। নতুবা হাজতের হাঙামায় হান্দায়া যাবেন।

নারীর না বলাটা পুরুষকে বুঝাতে গিয়েই লাখটাকার ব্যবসা চালু। যদিও এসব চালায় না-নাফা* বা নন-জিও প্রতিষ্ঠানরা। এখন বিজ্ঞাপন এজেন্সিগুলো নাটিকা করে নানা বিষয়ে 'না' বলতে শেখায়। এইডসকে 'না' বলুন, মাদককে 'না' বলুন, ধূমপানকে 'না' বলুন, সন্ত্রাসকে 'না' বলুন। নাগরিককে 'না' শেখাতেই নানা প্রতিষ্ঠান এই বিপুল টাকা নামিয়ে দিচ্ছে। নির্বাচনে নাকি এখন যোগ দিচ্ছে 'না' ভোট (এ অবশ্য সামরিক শাসকদের হ্যা-না ভোট না। সেক্ষেত্রে না-এর বাক্সে ভোট দেয়াই মানা)। না-ভোটে সিল মেরে এক ভোটেই সব প্রার্থীকে 'না' বলে দেবে ভোটাররা। ভোট দিলে জিতবে একজন। আর 'না' দিলে নামবে সবাই। বুঝেন, 'না' এর নাশকতাময় শক্তি। 'না'-এর ভূমিকা তাই মোটেই নামমাত্র না।

নাড়িটেপে ডাক্তার না বলে দিলে কিন্তু জীবনটাই নাকচ হয়ে যাবে। সুতরাং না-য়ের নাকানাচুবানিতে নাকাল হবার আগে মেনে নেয়া ভালো 'না' খুব খারাপ না। না-এর পরে 'না' যোগ করলে তা সংখ্যায় বাড়ে, 'নানা' হয় 'নানান' হয়। ('না' না বলে লোকের কথায় হু হা চালিয়ে গেলে লোকে ভাববে আপনি আদতে রাজি না। নাটক করছেন।) নানাত্ব মানে ডাইভার্সিটি। আর নানার্থক সমবায় সমিতি বলতে কিন্তু মালটি-পারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি বুঝায়।

যাক নানাপ্রকারে না-এর নামগান করে যে ন্যায্য কথাটা বলতে চাইলাম, তা হলো না শুনলেই নাদা মনে করবেন না। না-এর স্থান যত বলেছি তারও উদ্র্ধে। ‘না’ পাবেন ধর্মশ্লোকে। যে শ্লোক পাঠ করে মানুষ ধর্ম গ্রহণ করে। যে শ্লোক পাঠ করায়ে না-নামাজিরে নাদান-মাসুম করে নামানো হয় কবরে। সব এই না-এর ঘোষণা দিয়েই। আল্লাহ স্বয়ং মানুষকে শেখান এই না-এর ঘোষণা। প্রথমেই বলো 'না'। অস্বীকার করো। বলো কোনো ঈশ্বর নাই। শুধু সে ছাড়া। লা ইলাহা...মানে আল্লাহ নাই (আরবের লোকজন নাদান বাচ্চার মত আদুরে গলায় না বলে। শক্ত করে না বলতে পারে না, বলে লা। তাই কি বুঝতে এত ঝামেলা? লা এর জায়গায় না বললে কত সহজ হতো!)

এই যে 'না' বা লা-ইলাহা এইখানেই রয়েছে না-এর আসল নাড়া*।
অন্য নায়কদেরকে না বলতে না পারলে নিজেই (খত)না (খলনায়ক) হয়ে যাবেন।

*(এখানে নাড়া মানে হচ্ছে পাঠ। শাস্ত্র নাড়া মানে শাস্ত্র পাঠ।)
*নাফা মানে লাভ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০০৭ বিকাল ৪:২৯
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিচারের জায়গা না পেলে মানুষ প্রেত হয়ে ওঠে

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১২ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৩৯


(সামাজিক অবিচার, রাষ্ট্রীয় অনুপস্থিতি এবং আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঠামোর মধ্যে সাধারণ মানুষ কীভাবে হারিয়ে যায়।)

মানুষ যখন বারবার অবিচারের শিকার হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একদিন এসো সন্ধ্যে ফুরোলেই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৫



ভালোবাসা ছড়ানো পাতায় পাতায়, সবুজাভ স্নিগ্ধ প্রহর আমার
এখানে উঁকি দিলেই মুগ্ধতারা চুয়ে পড়ে টুপটাপ;
ধূসর রঙ প্রজাপতিরাও এখানে রঙিন ডানায় উড়ে,
কেবল অনুভূতির দোর দিতে হয় খুলে, চোখগুলো রাখতে হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

চীনের জে-১০ যুদ্ধবিমান কোনো চকচকে ল্যাব বা বিলাসবহুল ফ্যাক্টরিতে জন্মায়নি

লিখেছেন নাঈম আহমেদ, ১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৬

চীনের জে-১০ এর পেছনেও রয়েছে সেই ত্যাগ আর সংকল্পের গল্প—
১: গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) দলের অক্লান্ত পরিশ্রম।
২: বাইসাইকেলে চেপে কাজে যাচ্ছেন প্রধান প্রকৌশলী সু চিশৌ।
৩: প্রথম উড্ডয়নের পর কেঁদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Bangladesh bans ousted PM's Awami League under terrorism law

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১২ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬





হায়রে এরেই বলে কর্মফল। ১৭ টা বছর গুম , খুনের মাধ্যমে এক ভয়ের রাজ্য তৈরী করে কেড়ে নেয়া হয়েছিল মানুষের বাকশক্তি। চোখ, কান, মুখ থাকতেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিন গেলে আর দিন আসে না ভাটা যদি লয় যৌবন

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১২ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৬


এমন কোনো ইস্যু আছে, যা নিয়ে জাতি পুরোপুরি একমত? ৫০%ও একমত এমন কোনো বিষয় চোখে পড়ে না। একপক্ষ রবীন্দ্রনাথের গান জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মনেপ্রাণে ধারণ করে, আরেক পক্ষ বদলাতে চায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×