অরণ্য আমাকে খুব অবাক হয়ে দেখতে লাগলো । আমি জানতাম এমনটাই হবে, এরকমটাই হওয়ার কথা ছিলো । এভাবেই তো চমকে যায়, মাছের চোখের মত নিষ্পলক চোখ জুড়ে থাকে বিস্ময়....
"আমি চাইলে দামী প্রস্টিটিউট ওহ্ না বেশ্যা হতে পারতাম । দামী দামী হোটেলে বড়লোকেদের মনোরঞ্জন করতে পারতাম মোটা অংকের টাকা দিয়ে । সিডাক্টিভ ফিগার, ইরোটিক বিহেভ কিভাবে একজনের কামনা কে চূড়ান্ত পর্যায়ে নেওয়া । বুঝেনই তো পর্ণমুভি তো আর কম দেখি নাই । আমার কদর থাকতো, অথচ আমি এসে পড়লাম এই পতিতালয়ে, বেশ্যাপাড়ায় । ফ্যামিলি অনেক ভালো ছিল, সংস্কৃতিমনা । বাসা থেকে টেস্ট পরীক্ষায় ফেইল করার পর বের হলাম টাকা পয়সা নিয়ে, ভাবছিলাম সমুদ্রে ডুবে সুইসাইড করবো । কিন্তু হয়ে গেলাম রেইপ, ৪জনে মিলে ছিড়েখুড়ে খেয়ে ফেললো শরীরটা আমার হেঃ হেঃ । তখন কিন্তু আর সমুদ্রের কাছে ডুবে মরতে যাইনাই, সমুদ্রর মত পবিত্র পানিতে নিজের এটো শরীর দিতে সায় দেয়নাই মন । কান্দাপাড়ায় এসে পড়লাম, সবচে বিখ্যাত পতিতালয় । সর্দারণীর কাছে স্বেচ্ছায় নিজেকে জমা দিসিলা
গড়ে ১০০ অথবা ৫০টাকা এর বিনিময়ে বিকিয়ে দিতাম শরীর ।
এখানকার জীবন অন্যরকম, সব নিম্নবিত্ত মানুষ আসে । তারা তো কারিনা কাপুর অথবা এঞ্জেলিনা জোলির মত চিকন দেহে অভ্যস্ত না, স্বাস্থ্যবতী সঙ্গী চায় । সর্দারনী ধরে ধরে ওরাডেক্সন ট্যাবলেট খাওয়াইতো যাতে মেয়েগুলো ফুলেফেপে একাকার হয়। না খাইলে সেই কি মাইর! কপাল ভালো স্বেচ্ছায় আসছিলাম । বেঁচে গেছি অনেক খানি...
তবে যারাই আসে অত্যাচার করে, ৫০টাকায় আমাকে পায় আর কি চাই । সিগারেটের ছ্যাকা কত খাইছি ।
সয়ে গেছে । তবে যখন আপনি আসলেন, বুঝলাম নতুন কোন রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ আসছে আমার চারপাশে ঘিরে রাখা বলিউডের রঙবেরঙের পোস্টারের বেড়ার ঘরে । এখন অবাক হচ্ছেন রুদ্রকে চিনি কি করে? আমার প্রেমিক ১৭তম জন্মদিনে উপহার দিসিলো । দেহ দেখে কবিতা লিখবেন? লিখুন! এর আগে এক আর্টিস্ট আসছিলো আমি ছিলাম মডেল । হাঃ হাঃ হাঃ
বইলেন, কাপড় সরিয়ে দাড়াবো আর আপনি আপনার অমর সৃষ্টি কবিতা লিখবেন ।"
একনাগাড়ে কথাগুলো বলতে বলতে দেখলাম অরণ্য অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে তাকালো । আমি দেখলাম তার চোখে স্পষ্ট অভিমান । মাত্র ৫০টাকায় দেহ বিকিয়ে দেয়া পতিতার উপর কিসের এত অভিমান!
আমি উঠে দাড়ালাম, খদ্দের আসবে, মুখে রঙচঙ মাখা লাগবে । লাল টুকটুকে লিপস্টিক ইদানিং অনেক জনপ্রিয়, নকশাতে দেখছিলাম । হাইক্লাস দামী মডেলের ঠোঁটের রঙ আর পতিতার ঠোঁটের রঙ একই তো!
অরণ্য চলে গেলো । ৭দিনে আমার মায়া পড়ে গেছে এর উপর । ছেলে কবিতা লিখবে, দেহ দেখে কবিতা...হয়তো ভাবেনাই এরকম আমার মত বেশ্যাকে পেয়ে যাবে ।
৭দিন ধরে প্রতিদিন এসে বসে থাকে চুপচাপ । আমি কথা বলি, কিন্তু ছেলেটাকে হাতে কাগজ কলম নিতে দেখিনা । কবি হওয়া অরণ্যের প্যাশন, বাড়িঘর ছেড়ে ভবঘুরে জীবনযাপন করে কবিতা লেখার জন্য । ভাবের রাজ্যে পৃথিবী কাব্যময়, ৫০টাকার পতিতা যেনো গ্রীক দেবী হাঃ হাঃ হাঃ!
খদ্দের চলে যাওয়ার পর, যন্ত্রণা বাড়লো । আজকে ছুরি দিকে কাটছে শরীর, কিচ্ছু বলিনাই । বেশিরভাগ বিকৃত যৌন মানসিকতার । উঠে সালেহা খালার কাছে গেলাম । খালা বুড়িয়ে গেছে,সর্দারণীর ঋণ শোধ করে দিয়েছে তবুও রয়ে গেছে পতিতালয়ে । সমাজে মুখ দেখাবে কিভাবে, ফিরবে কার কাছে যে জামাই দ্বিতীয় বৌয়ের জন্য বেঁচে দিসিলো । গল্প করলে মনে হয় ফেরার জায়গা সব বন্ধ এক এক করে । ফিরে যাওয়ার পথ নেই, ছিলোনা কোনকালে...
পরের সন্ধ্যায় আসলোনা অরণ্য, কেমন একটা সূতীক্ষ্ন ব্যথা বুকের ভেতর কাজ করলো । এরকম হওয়ার কথা ছিলো না, আমি চুপচাপ বসে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছেলেটার অপেক্ষা করছি এরকমটা হওয়ার কথা ছিলোনা ।
সেইসময় বাঁশি ঘরে ঢুকলো, চোখভর্তি জলে টলমল নিয়ে ধপ্ করে আমার সামনে বসে পড়লো । আমি তাকিয়ে থাকলাম, মেয়েটা কি সুন্দর!
"আমি আজ টাকা নিয়েছি ওর কাছ থেকে"
কথাটা কানে যাওয়ার পর তাকিয়ে দেখি বাঁশির গাল বেয়ে বেয়ে নোনাজলের বুনন চলছে । প্রত্যেকটা ফোঁটায় ওর গল্প লেখা, আমি পড়ছিলাম সেই গল্প । এই মেয়েটা কিউপিডের তীরে বিদ্ধ হয়ে প্রেমিকের হাত ধরে বেড়িয়ে পড়েছিল ঘর ছেড়ে, আর সেই সবচেয়ে ভালবাসার মানুষটা ২০০০০টাকা দিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিলো ওকে, শুধু ওর দেহকে না মেয়েটার সমস্ত স্বপ্নকে এবং তারপর থেকে এখানেই জীবনযাপন । আসতো সেই মানুষটা ওর কাছে, এসে রাত কাটিয়ে যেত এই পতিতালয়ে । বাঁশি আজ তার কাছ থেকে টাকা রেখেছে এত বছর পর । আজ আর ভালবাসার মানুষ নয়, হয়ে গেছে সেই সাধারণ খদ্দের । দেবতার আসন থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে...
মুহূর্ত মুহূর্ত শুধু জন্মহীন মহাশূন্যে ঘেরা
কার পূজা ছিল এতদিন?
একা হও একা হও একা হও একা হও একা
আজ খুব নিচু করে বলি, তুই নেমে যা নেমে যা
পাথর, দেবতা ভেবে বুকে তুলেছিলাম, এখন
আমি তোর সব কথা জানি!
আমার খুব অস্থির লাগছিলো, অরণ্য নামক এলোমেলো ছেলেটাকে দেখার এক তীব্র আকাঙ্খা কাজ করছিল ভিতরে । ও আসলো, চোখ টকটকে লাল করে আসলো গভীর রাতে । আমাকে বললো, তোমাকে শাড়ি খুলে নগ্ন হয়ে দাড়াতে লাগবেনা আমি কবিতা লিখেছি ।
চালধোয়া পানির মত
গ্রামীণ গন্ধের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে -
অপূর্ণ সন্ধ্যায় মুখোমুখি হয়েছিলে আমার ।
রাতের মত , শীতের রাতের মত
সে তুমি এক বিপর্যস্ত নেশা ।
ইতিহাস থেমে গেছে তোমায় উদার পটভূমি ভেবে ,
কুয়াশা বিভোর শহর শীতের রাতেও খুব ঘেমেছে ,
বাষ্পকে তুমি পুণর্জন্ম দিয়েছ ,
অনামিকা তুলে পুনর্জন্ম দিয়েছ
পৃথিবীচ্যুত খেয়ালিকাকে ।
দেবী আমার ,
এক সন্ধ্যায় জরাজীর্ণ বৈদ্যুতিক খুঁটিকে
সাজিয়েছ আকাশগ্রন্থিতে ,
নির্বিকার হয়ে সোডিয়াম বাতিকে করেছ সন্ধ্যাপ্রদীপ ।
আমার পূর্ণ পূর্ণ অপূর্ণতা পরিপূর্ণ হচ্ছে ,
তুমি বেজে উঠছ পিয়ানোর রীডে ,
পৃথিবীর ব্যাকগ্রাউন্ডে রবিশংকরের সেতারে ,
চৌরাসিয়া ,লুদভিকো একে একে পেরিয়ে
স্যট্রিয়ানি অথবা গিলমারের গিটারে ...
দেবী তুমি অনিয়ন্ত্রিত অনবদ্য এক ইন্সট্রুমেন্টাল ।
সান্ধ্যকালীন সূর্যকে গোলাপী আভা করে
নখের উপরে আশ্রয় দিয়েছ ,
অপ্রকাশিত চুমু জলজ অনুভূতির মত; যেন
উল্লসিত খোলা চুলকে চিন্তা করে -
মাটিতে ইনকাম ট্যাক্সের দাবি হয়ে
মিশে গেছে ।
প্রতিটি শতাব্দী জুড়ে ,
উড়ে বেরিয়েছ পৃথিবীর কল্পনায় ,
ধরা দিয়েছ রাজপথে হেঁটে আসা
আমার মত কারো চুপচাপ দীর্ঘশ্বাসে।
এরপর মমতার বিরাম চিহ্ন বসিয়েছ ।
তোমার একেকটি আঙুল একেকটি শতাব্দী ,
গভীর প্রতীজ্ঞার কসম -
আমার বুকে থেমে আছে জমজমাট আলোকবর্ষ ।
আমার দিকে তাকাও -
আমি খসে যাওয়া ইলেকট্রনের আকুতি ,
গৃহস্থালী দুর্দশায় আক্রান্ত গবাদি পশুর অবাধ্যতা ,
পরাবৈদ্যুতিক বিভ্রমে খুঁজে বেড়াচ্ছি বিশ্রাম ,
পর্ন ম্যাগাজিনের জোড়া লেগে যাওয়া দুটি পৃষ্টার মধ্যবর্তী
আটকে পড়া প্রাচীন বীর্যের -
জাগতিক নিষ্ফলতার অত্যুক্তি ছাপিয়ে
কেঁপে উঠছি
আমি কেঁপে কেঁপে উঠছি , দেবী ।
আংটির নাম করে যে অলংকার তোমার আঙুলে জড়িয়ে থাকবে আজীবন;
আমিও যৌথ হব তার সাথে ,
আঙুলে তোমার রক্তপ্রবাহে মিশিয়ে দেব
ব্রক্ষ্মাণ্ডের দুঃখগাঁথা ।
আমার দেবী , আমার কল্পনা , আমার হাইপারস্পেস ।
তোমার চারিপাশ মুখরিত অজস্র খরগোশের নিনিটিক হাসিতে ,
ভাল্লুক হয়ে আমি এসেছি
এসেছি কিছু অভিজ্ঞ অন্ধকার নিয়ে ,
নিখুঁতভাবে সমর্পণ করেছি নিজেকে
দুঃখী দুঃখী চিরসুখী ফরম্যাটে ।
আমার সমস্ত আকাশ ফটোকপি করে রেখেছ ;
আমি যেন আটকে গেছি দেবী ।
আমি আটকে গেছি নিশ্চিত
অনিশ্চয়তায় ।
ফিটফাট , মার্জিত সন্ধ্যার শরীরে
মুহূর্তের খেয়ালে ছিটিয়ে দিলে উন্মাদ ঘূর্ণিঝড় ,
ঝড় শেষে আমি তবুও ক্ষতিই চাই ,
ক্ষতিপূরণ চাই না দেবী ।
খিলখিল খিচুরীর সকালে উপস্থিত -
আমার প্রতি কাপ চায়ে তোমার চুমুক মিশে থাকে ;
যতটুক ছিল থতমত অভিমান তোমার, হয়ে যায় অভিভূত ,
রাত ঘুম শেষে আমার ভালবাসা পিপাসার্ত ট্রেনের মত ।
সফেদ সুফিদের চুল দাড়ি থেকে নিয়ে আসো অলৌলিক স্যূরিলিয়াজম ,
অচল নোটকে সচল করে পাঠিয়ে দাও স্ট্রাটোস্ফিয়ারে ,
নীলক্ষেত , ফুলার রোড , চানখাঁরপুলের শীতরাতগুলো
তুমি ভরিয়ে দাও কিছু হাস্নাহেনার গন্ধে ।
খামখেয়ালী এ শহরের কাছে পাঠানো খামে চিঠির বদলে-
তুমি পুরে দিয়েছ তোমার খেয়াল ।
প্রিয় খাবার ভেবে ঘড়ি খেয়ে নিচ্ছে সময় ,
বিকেল খাচ্ছে দুপুর , বাক্যে খাচ্ছে অক্ষর ,
উচ্চতার পিঠে প্রস্থ , বৃত্তের কাছে ব্যাস ,
কল্পনা কিছু গ্যাস
হয়ে ছিল আমার শরীরে ।
ঐযে তুমি দাড়িয়ে আছ আমার অস্থির হার্টবিট নিয়ে ,
বর্তমানকেই বিরতিহীন ইতিহাসে গেঁথে
অনির্বাণ করেছ সময়কে ।
লুডুর গুটির মত সহজভাবে বঙ্গোপসাগর
নেমে এসেছে তোমার শরীর ছুঁয়ে ,
স্রোতের গায়ে সূর্যের বদলে তোমার গন্ধ ছিল ।
হলুদ রঙের ট্রাক দেখলেই নেশা লাগে চোখে ,
জংধরা অসভ্যতায় ঝাঁপ দিতে মন চায়,
আমার মনে পড়ে যায় -
রাস্তা জিনিসটা আমি কোনকালেই ভালভাবে বুঝতে পারিনি ।
আমি মঙ্গাপীড়িত ,শীতার্ত বা বন্যার্ত কেউই না ,
ওসব হতেও চাই না নতুন করে ।
আমি গভীর চুমুগ্রস্ত কেউ হতে চাই,
দেবী শুনতে পাচ্ছ ?
সহযোগিতার হাত চাই না , সহযোগিতার ঠোঁট চাই ।
ফিরে তাকাও দেবী !
নির্বোধ আমিও এখন উন্মাদ চরমপন্থী ,
আর কতবার দেখব অসহ্য নৈঃশব্দ্যের দিগ্বিদিক জলাঞ্জলী ?
অন্ধ উষ্ণতায় ছারখার হবে স্বর্ণগর্ভ ফসলের ক্ষেত ,
বেপরোয়া প্রেমিকের মত আগুন চাই ।
তাবৎ অসুস্থতা দিয়ে -
আমাকে সুস্থ কর
আমাকে সুস্থ কর !
অথবা
নিরুত্তাপ কণ্ঠে মৃত্যুর আদেশ দাও ;
এক্ষুণি এনে দাও বীভৎস দুঃসময় ,
আমাকে ধ্বংস কর ,
আমার শেষ হোক তবে ,
আমাকে ছুঁড়ে ফেল আস্তাকুঁড়ে .
দেবী তোমাকে ছোঁয়া যায় না ,
দেবী তোমাকে ছোঁয়া যায় না ,
দেবী তোমাকে ছোঁয়া যায় না ,
তবুও নিজের ভেতর লালন করি স্পর্শের শাশ্বত সৎসাহস ।
আমার বুকের ভেতর শুন্যতায় ভরে গেলো, হৃত্কম্পন থেমে গেলো । আমি ঝাপসা চোখে অরণ্যের দিকে তাকিয়ে রইলাম, সমস্ত ভেতরটুকু আমার নাড়িয়ে দিয়ে গেলো ছেলেটা ।
মাতালের মত অরণ্য বললো, দেবী তোমাকে স্পর্শ করতে চাই, তোমাকে পূজা করতে চাই । তোমার পূজার অর্ঘ্য আমি, তুমি শুধু শুধু মাত্র আমার হও ।
কথাগুলো শুনে থমকে গেলাম । বুকে এত দিন ধরে তিল তিল করে জমতে থাকা বিষাক্ত গ্যাস, আমি এই নিঃশ্বাসে কি করে এই ছেলেকে পুড়াই?
অরণ্য চলে গেলো সেই রাতে, নাছোড়বান্দা সে । আমাকে ভয়ংকর অপরাধবোধ গ্রাস করলো, আমার চারপাশে রঙবেরঙের নায়ক-নায়িকার ছবিগুলো ব্যাঙ্গের হাসি ছুড়ে দিচ্ছিলো আমার দিকে । মনে হলো, আমি অরণ্যকে ঠকাচ্ছি । সহজলভ্য পণ্য আমি, কখনো কারো দেবী হতে পারবোনা । অরণ্য কবিতা লেখার স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েছে আমাকে নিয়ে বাকি জীবনের সময়টুকু কাটিয়ে দিতে । ৫০টাকার আমার জন্যে বড় স্বপ্নের বিসর্জন?ভেতরটা তো মরে গিয়েছে অথচ আমি ছেলেটাকে ঠকাতে চলছি....ইশ্ আমিও কিভাবেই না চেয়েছি ওকে! আমার অরণ্যকে নিয়ে দেখা স্বপ্নালু চোখ কেউ যদি ঠুকরে ঠুকরে শেষ করে দিতো!
এটো শরীর, কত মানুষের হাতের ছাপ, কত সিগারেটের ছ্যাকা দেয়া দাগ, আমি তো পবিত্র নই আর ।
আজ সময় এসেছে রঙচঙ মাখার । টকটকে লাল লিপস্টিক আর সেই সাজ দেয়ার...আমি খুব যত্ন নিয়ে সাজলাম
এবং রঙের দুনিয়াকে বিদায় জানাতে শাড়িটা ফ্যানে ঝুলিয়ে দিলাম চিরতরে...
[ বিশেষ করে ধন্যবাদ জারিফকে । জারিফের লেখা 'দেবী তোমাকে ছোঁয়া যায় না' কবিতাটি গল্পে ব্যবহার করার অনুমতি দেয়ার জন্য । আর আমার মা, যে কিনা সমাজসেবা অধিদপ্তরে চাকরি করে । আম্মুর কাছ থেকে পাওয়া কেস হিস্ট্রিগুলো অনেকটা কাজে এসেছে ।]