somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ বাংলাদেশ প্রতিদিনের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

১৫ ই মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ বাংলাদেশ প্রতিদিনের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

সম্পাদকের কথা...................
প্রিয় পাঠক অভিনন্দন

নঈম নিজাম


খুব ভোরে ফোন করে ঘুম ভাঙালেন আমার এক বন্ধু। বললেন, ভোরে হাঁটতে গিয়ে দেখেন গার্মেন্টের একটি মেয়ে অফিসে যাচ্ছে। তার এক হাতে বাংলাদেশ প্রতিদিন, আরেক হাতে টিফিন ক্যারিয়ার। আবেগে আপ্লুত কণ্ঠস্বরে তার কথা_ বাংলাদেশে সংবাদপত্রে নতুন পাঠকশ্রেণী তৈরি হয়েছে। যারা আগে সংবাদপত্র পড়ত না, এখন পড়ছে। শুধু আমার সেই বন্ধু নন, একদিন আমাদের এক রিপোর্টার অফিসে এসে খুবই উত্তেজিত। এক রিকশাচালক বাংলাদেশ প্রতিদিন পড়ছে। পত্রিকা পড়ার সময় তার ছবি তুলে এনেছে। আরেক পাঠক ছবি পাঠালেন মোহাম্মদপুরের হাঁটা পীরসাহেব মনোযোগ দিয়ে পড়ছেন। তার পছন্দের পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিন। এভাবেই অফিস-আদালত, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, হাটে-মাঠে, ঘরে-বাইরে এখন সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ জনপ্রিয় পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিন। প্রিয় পাঠক, আজ বাংলাদেশ প্রতিদিনের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অভিনন্দন নিন। আপনাদের ভালোবাসায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষে অবস্থান। কৃতজ্ঞতা আপনাদের কাছে।

দেখতে দেখতে তিনটি বছর পার হয়ে গেল। আজ চতুর্থ বর্ষে পা রাখল নিরপেক্ষ, সাহসী, বস্তুনিষ্ঠতার ধারাবাহিকতা রক্ষার অঙ্গীকার ও গণমানুষের ভালোবাসার আস্থা নিয়ে। প্রিয় পাঠক, প্রতি বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে থাকত আমাদের ব্যাপক আয়োজন। এবার তার ব্যত্যয় হচ্ছে। দেশের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে সব কর্মসূচি আমরা বাতিল করেছি। মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বাইরে আমরা নই। গণতন্ত্রের আগামী নিয়ে উৎকণ্ঠা আমাদের মাঝেও। জাতির এই কঠিনতম সময়ে জন্মদিনের মতো সবচেয়ে আনন্দের দিনেও আমরা মেতে উঠতে পারি না উৎসবে, আনন্দে। আমরা চাই দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক। বন্ধ হোক এই নৈরাজ্য। আর কোনো রক্তপাত, গুলি কিংবা খুন, হরতাল, ভাঙচুর, আগুন নয়। জনগণের কল্যাণে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সংকট মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। গড়তে হবে দলবাজিমুক্ত মিডিয়া ও প্রশাসন।

আমরা বিশ্বাস করি, মিডিয়ার দায়িত্বশীল ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই শুরু থেকেই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, উন্নত গণতন্ত্র, শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রশ্নে আমরা দায়িত্বশীল এবং নিরপেক্ষ অবস্থানে। আমাদের দায়বদ্ধতা শুধু দেশের সাধারণ মানুষের কাছে। তাই শুরু থেকে চেষ্টা করছি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে। জানি, এই পথ চলায় অনেক কাঠিন্য। তবু কবিগুরুর মতো আমরাও বলি, 'সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম'। কারণ আধুনিক এই যুগে বাংলাদেশের চলমান সাংবাদিকতা এখন দলবাজির কাছে জিম্মি। গণতন্ত্র অনেকটা হুমকির মুখে। সহনশীলতা, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা-বিশ্বাসের অভাব পদে পদে। সাংবাদিকরা এখন নিজের কাছে স্বাধীন নন। বড় দলগুলোর কাছে অতি আনুগত্য দেখাতে গিয়ে সবাই জলাঞ্জলি দিচ্ছেন নিজের পেশার মর্যাদাকে। সত্য ও বস্তুনিষ্ঠতা উধাও। এখন 'সবার উপরে দলবাজি সত্য, তাহার উপরে নাই'। প্রিয় পাঠক, আমরা সবকিছু থেকে মুক্ত। বাংলাদেশ প্রতিদিন চাটুকারিতাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। কোনো দলের প্রতি আমরা আনুগত্য দেখাই না। আমাদের সব দায়বদ্ধতা পাঠকের কাছে। আমরা বিশ্বাস করি বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায়।

প্রিয় পাঠক, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দঘন এই দিনে আবারও বলছি, আপনাদের অভাবনীয় ভালোবাসায় বাংলাদেশ প্রতিদিন এখন প্রচার সংখ্যায় শীর্ষে। শুধু ঢাকায় নয়, দেশের আনাচে-কানাচে প্রতিদিনই বাড়ছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের চাহিদা। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী পত্রিকা সরবরাহ করতে পারছি না। নিউজপ্রিন্টের দাম, পরিবহন ও ছাপা খরচের সঙ্গে বিশাল সার্কুলেশনের তাল মেলানো কঠিন। তারপরও বার বার আপনাদের সহযোগিতায় আমরা সব সমস্যা মোকাবিলা করে পাঠকপ্রিয়তা ধরে রাখার চেষ্টা করছি। ৬ লাখ সার্কুলেশনের পত্রিকাটির দাম তিন বছরে তিনবার বেড়েছে। বিজ্ঞাপনের রেটও বেড়েছে চারবার। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে সব পাঠক, শুভানুধ্যায়ী, বিজ্ঞাপনদাতা এবং যারা এই পত্রিকাটিকে সবার হাতে তুলে দেন সেই বিক্রয় প্রতিনিধি, এজেন্ট, হকার ও তাদের সব সমিতি ও সংগঠনের কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতা।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে বাংলাদেশ প্রতিদিন পরিবারের গভীর কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা বসুন্ধরা এবং ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের কাছে। তিনি ছাই ধরলে সোনায় রূপান্তর হয়। তিনি স্বপ্ন দেখেন, দেখান ও বাস্তবায়ন করেন। সাফল্যের শিখরে থাকা বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের এই স্বপ্নপুরুষের পৃষ্ঠপোষকতা ও দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ প্রতিদিন দেশের শীর্ষ প্রচার সংখ্যার দৈনিক। কৃতজ্ঞতা বসুন্ধরা ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, হিমালয় হৃদয়ের অধিকারী সায়েম সোবহানসহ তাদের পরিবারের কাছে। তাদের আন্তরিক ভালোবাসা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এই অবস্থানে এনেছে। ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমার সব সহকর্মীকে, যারা রাতদিন পরিশ্রম করে টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে মাত্র তিন বছরে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে সর্বাধিক প্রচার সংখ্যার দৈনিকে রূপান্তর করেছেন। তাদের তিল তিল ভালোবাসায় তৈরি হয়েছে বিশাল সমুদ্র। স্মরণ করছি চলে যাওয়া সব সহকর্মীকেও।

প্রিয় পাঠক, ২ হাজার ৪০০ বছর আগে সক্রেটিসের বিচার প্রহসন গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। দার্শনিক প্লেটো সেই সময়কার ঘটনাবলিকে বলেছিলেন বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। আধুনিক এই সভ্যযুগে দেশে দেশে এখনো প্রশ্নবিদ্ধ বাকস্বাধীনতা। বাকস্বাধীনতার লড়াই কবি নজরুলও করে গেছেন। এখনো সেই লড়াইটা চলছে। পাঠকের কাছে অঙ্গীকার, বস্তুনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন ও দলনিরপেক্ষ পত্রিকা হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিদিন তার গতি অব্যাহত রাখবে। জনগণের পক্ষেই থাকবে আমাদের অঙ্গীকার। অন্ধকারে আলোকবর্তিকা হিসেবে অগ্রযাত্রা থাকবে অবিচল। আমরা সাদাকে সাদা, কালোকে বলব কালো। সব অসুন্দরকে পরিহার করব নির্বিঘ্নে। বাংলাদেশ প্রতিদিন আগামীতে পথ দেখাবে। বলবে সম্ভাবনার কথা, উন্নতি ও সমৃদ্ধির কথা। অনেক সমস্যা ও সংকটের পরও আধুনিক চিন্তা এবং পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে কীভাবে বদলে দেওয়া যায় দেশটাকে তার কথা।

পাদটীকা : এই তীব্র প্রতিযোগিতার মাঠে আপনাদের ভালোবাসায় আকাশ ছুঁয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিন। সাফল্যের শীর্ষে অবস্থান নিয়েছি আমরা। সরকারিভাবে বাংলাদেশ প্রতিদিন এখন প্রচার সংখ্যার শীর্ষে। আমরা গড়ে ছাপছি ৬ লাখের বেশি। সর্বশেষ গত ৪ ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নিরীক্ষা প্রত্যয়নপত্রে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ৫ লাখ ৩০ হাজার ১০০ কপি হিসাবে দেখিয়ে দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ঘোষণা করেছে, যা দেশের সংবাদপত্র ইতিহাসে এক নতুন দৃষ্টান্ত। এই ধারাবাহিকতায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু গত ২০ ডিসেম্বর, ২০১২ এবং ৩ মার্চ, ২০১৩ তারিখে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক। এই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রচার সংখ্যা ১০ লাখে নিয়ে যাব আপনাদের বিশ্বাস, আস্থা ও ভালোবাসায়।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মধ্যরাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাল ভারত

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৭ ই মে, ২০২৫ রাত ৩:৫২


পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুর, কোটলি ও মুজাফফরাবাদের পাহাড়ি অঞ্চলের কাছে একাধিক জায়গায় হামলা চালিয়েছে ভারত। এ হামলায় এক শিশু নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুম্মাবার

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ০৭ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৪০

জুম্মাবার
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

প্রতি শুক্রবার ইমাম এর নেতৃত্ব
মেনে নিয়ে আমরা মুসলিমরা
হই একত্রিত, হই সম্মিলিত
ভুলে যাই সবাই হৃদয় ক্ষত!
খুতবা শুনি আমরা একাগ্রচিত্তে
চলে আসি সকলে একই বৃত্তে।
কানায় কানায় পরিপূর্ণ প্রতিটি মসজিদ
ঐক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসলে "ওরফে গফুর" এর উদ্দেশ্য কি....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭

আসলে "ওরফে গফুর" এর উদ্দেশ্য কি....


'ওরফে গফুর' এর লেখা আমি বহুবছর থেকেই পড়ি। ওনার লেখা পড়ে ওনার মতবাদ, আদর্শে আমি বিভ্রান্ত হয়েছি বারবার। কারণ, কোন এক পত্রিকায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষেরা একজোট হতে চাই

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৭ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫১



ভারত - পাকিস্তান যুদ্ধ বন্ধে কি করতে পারি আমরা? একজন নীতিবান, যুদ্ধবিরোধী ও মানবতাবাদী মানুষ হিসেবে একক এবং সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে আমরা অনেক কিছু করতে পারি। চলুন নিচে দেখা যাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

অপারেশন সিদুঁর বনাম অপারেশন নারায়ে তাকবীরের নেপথ্যে !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:২৮


বলতে না বলতেই যুদ্ধটা শুরু হয়ে গেল। না, যুদ্ধ না বলাই ভালো—রাষ্ট্রীয় অভিনয় বলা ভালো। ভারত ও পাকিস্তান আবার সীমান্তে একে অপরকে চেঁচিয়ে বলছে, "তুই গো-মূত্রখোর ", "তোর দেশ জঙ্গি"।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×