রিপাবলিক - প্লেটো
রিপাবলিক গ্রিক দার্শনিক প্লেটো রচিত এক অমর গ্রন্থ। রাষ্ট্রচিন্তার জগতের যে কজন ক্ষনজন্মা মনীষী অবদান রেখেছেন , তাদের মধ্যে মহামতি প্লেটো ছিলেন অন্যতম । এ গ্রন্থটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর অনুপম রচনা সেৌন্দর্য ভাষা মাধুর্য ।
প্লেটো রচিত রিপাবলিক গ্রন্থের একটি ল্যাটিন পান্ডুলিপি,সময়কাল ১৪০১
এতে রাজনীতির সাথে দর্শনের সমন্বয় ঘটেছে । সমগ্র দি রিপাবলিক রচনাটি দশটি পুস্তকে বিভক্ত । এর আলোচ্য বিষয় রাষ্ট্র গঠনের উপাদান , সমৃদ্ধ রাষ্ট্র , অভিভাবকদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য , শাসক বাছাইঃ তিন শ্রেণীর পারস্পরিক সম্পর্ক। মেয়ে ও পুরুষে সমতা , যৌথ পরিবার , গনতন্ত্র এবং গনতন্ত্রী , চরিত্রও বিবাহ , দার্শনিক শাসকঃ দার্শনিকের সংজ্ঞা দার্শনিক-শাসকের শিক্ষা , জ্ঞানের চারটি স্তর , স্বৈরতন্ত্র এবং স্বৈরতান্ত্রিক চরিত্র ।
প্লেটো আদর্শ রাষ্টের রুপরেখা প্রণয়ন করেন এই বইয়ে এবং একজন আদর্শ শাসকের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন ।
সরদার ফজলুল করিম অনূদিত প্লেটোর রিপাবলিক গ্রন্থের প্রচ্ছদ
প্রকৃতপক্ষে উত্তম জীবন উত্তম মানুষের নিয়েই দি রিপাবলিক মূল আলোচনা । এ যেন রাষ্ট্র পরিচালনার এক বিরাট পরিকল্পনা । প্লেটোর দি রিপাবলিক মানুষের বাস্তব সমস্যা পর্যবেক্ষন , অনুধাবন এবং চিন্হিত করনের প্রদ্ধতি অবলম্বন রচিত । এ দিক থেকে বিচার করলে অতি অল্প গ্রন্থই দি রিপাবলিকের সাথে তুলনীয় ।
পলিটিক্স - এরিস্টটল
এরিস্টটলের বিখ্যাত একটি পুস্তক হলো পলিটিক্স । এখানে তিনি সরকার , শাসক , শাসন পদ্ধতি , গণতন্ত্র , দাসপ্রথা , আদর্শ রাষ্ট্র , সংবিধান বিষয়ক আলোচনা করেছেন । যা পরবর্তীতে বহু বছর পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের শাসকগন অনুসরন করে এসেছেন ।
এরিস্টটল জীবের জীবনের সঙ্গে রাজনৈতিক জীবনের গুণগত পার্থক্য এত পরিচ্ছন্নভাবে এঁকেছেন যে জীবের জীবন নিয়ে বেঁচে থাকা আর রাজনৈতিক অচ্চিত্বের পার্থক্য হচ্ছে মানুষ জীবন নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে কিন্তু অস্তিত্ব যাপন করে আসলে পরম ইষ্টে’। পরম ইষ্টে অচ্চিত্ব যাপনের পরম পরিণতি নগর-রাষ্ট্র। এটি এরিস্টটলের পলিটিক্স গ্রন্থের একটি প্রখ্যাত উক্তি।
এরিস্টটল নির্দেশিত শাসন কাঠামো
একই গ্রন্থে তাঁর বিখ্যাত উক্তি হচ্ছে মানুষ রাজনৈতিক জীব। মানুষ জীব নয়, জীবের সঙ্গে তার পার্থক্যের জায়গা হচ্ছে জীব রাজনৈতিক নয়, কিন্তু মানুষ রাজনৈতিক। জীবের জীবন তার মনুষ্যত্বের সত্য নয়, তার সত্য রাজনৈতিকতায়। প্রজাতি হিসেবে জীবের সঙ্গে তার পার্থক্যের জায়গাও এখানে। মানুষের এই পার্থক্য নির্ণয়ের পরেই কেবল তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে মানুষের রাজনীতি গঠিত হয় রাজনৈতিকতার আরেকটি গুণ দিয়ে, সেটা হচ্ছে ভাষা। মানুষ ভাষাসম্পন্ন প্রাণী। অতএব জীবের মতো শুধু জীবের আরাম ও বেদনার মধ্যে মানুষের জীবন সংকীর্ণ নয় বরং ভাষার মধ্যে গড়ে ওঠে ‘ভালো’ ও মন্দ সংক্রান্ত ধারণা এবং অন্যায় ও ইনসাফ ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে মানুষের রাজনৈতিক জগৎ বা রাজনৈতিক পরিমণ্ডল গড়ে ওঠে। জীবের জীবনের সঙ্গে মানুষের জীবনের পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে
আল কানুন ফিত তিব - ইবনে সিনা
ইবনে সিনা ইসলামী সভ্যতার স্বর্ণযুগের চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসে সবচেয়ে উজ্জ্বলতম ব্যি্তিত্ব ছিলেন। চিকিৎসাবিদ্যায় তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান হচ্ছে, ‘আল কানুন ফিত তিব'। এতো নির্ভরযোগ্য কোনো গ্রন্থ সে সময় অন্তত চিকিৎসাশাস্ত্রে ছিল না। এই বইটি অনূদিত হবার পর পশ্চিমারা ব্যঅপকভাবে বইটির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে এবং তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিদ্যালয় মহাবিদ্যালয়গুলোতে বইটিকে পাঠ্য করে দেয়।
গ্রিক চিকিৎসাবিদ জালিনূসের বই যেসব ইউরোপীয় চিকিৎসকদের কাছে দুবোর্ধ্য ছিল তাঁরাও ইবনে সিনার কানুন গ্রন্থটির শরণাপন্ন হন। এর্একটি কারণ ছিলো ইবনে সিনা তাঁর কানুন গ্রেথে জালিনূসের দৃষ্টিভঙ্গীগুলোকেও বিশ্লেষণ করেছেন। উল্লেখ করা যেতে পারে যে কানুন গ্রন্থটির বেশিরভাগ অনুবাদ হয়েছিল খ্রিষ্টিয় ষোল শতকে।
মুসলিম বিশ্বে তার প্রভাব সবচেয়ে বেশী। মধ্যযুগীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের ভিত রচনায় তার অবদান অনস্বীকার্য। তার মূল অবদান ছিল চিকিৎসা শাস্ত্রে। তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রের বিশ্বকোষ আল-কানুন ফিত-তীব রচনা করেন যা ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্তও প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল প্রতিষ্ঠানসমূহে পাঠ ছিল।
মুকাদ্দিমাহ - ইবনে খালদুন
১৩৭৭ সালে তিউনিসিয়ান মুসলিম দার্শনিক ও ইতিহাসবেত্ত্বা ইবনে খালদুন তার প্রখ্যাত গ্রন্থ “মুকাদ্দিমাহ” রচনা শুরু করেন। মুকাদ্দিমাহকে সমাজ বিজ্ঞান, ইতিহাসের দর্শন আর সাংস্কৃতিক ইতিহাসের ওপর লেখা প্রথম গ্রন্থ হিসাবে স্বিকৃতী দেন অনেকেই। ইবনে খালদুন মুকাদ্দিমাহ’তে উত্থাপন করে বসেন এক বৈপ্লবিক বক্তব্য। তিনি বলেন, রাজা রাজড়ার কির্তী কলাপ বর্ণনা করাই নাকি ইতিহাসের মূল লক্ষ্য না, বরং মানবসভ্যতার বিকাশ আর পরিবর্তনের সঠিক চিত্র তুলে ধরাই ইতিহাস চর্চার আসল কাজ। খালদুনের সময়ে নতুন এবং বৈপ্লবিক এই বক্তব্য এখন এই আমাদের সময়ের স্বিকৃত সত্য। অবশ্য যেই দেশে পাঁচ বছর পর পর ঘটা করে ইতিহাস বদলের প্রতিযোগিতা হয় সেই দেশে এই সত্য অনুধাবন করা দূরুহ বটে। ইতিহাস চর্চা আমাদের দেশে রাজনীতির স্বার্থ সংশ্লিষ্ট, যার কাজ মানুষকে কেটে কুটে বিচ্ছিন্ন করা। কাল নিরপেক্ষ মানব জাতি দূরে থাক, এই কাটাছেড়ায় সমকালিন মানুষ হওয়াই বেজায় কঠিন।
দ্যা প্রিন্স - নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি
নিকোলো ম্যাকিয়াভেলির খ্যাতি মূলত দ্যা প্রিন্স (The Prince) বইটির জন্য। এটি অত্যন্ত সুলিখিত ও দার্শনিক রচনাবলির মধ্যে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে সহজপাঠ্য। The Prince গ্রন্থকে একজন রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য একটি পাঠ্যবই হিসেবে বর্ণনা করা চলে। এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, রাষ্ট্র পরিচালনায় সাফল্যের জন্য একজন প্রশাসককে নৈতিক মূল্যবোধ সম্পূর্ণ বিসর্জন দিতে হবে এবং নির্ভর করতে হবে শক্তি ও কৌশলের ওপর। ম্যাকিয়াভেলি সর্বাধিক গুরুত্ব দেন সামরিক প্রস্তুতির ওপর। তার মতে, রাষ্ট্রের নিজস্ব নাগরিকদের মধ্য থেকে সংগৃহীত সেনাবাহিনীই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য। ভাড়াটে সৈন্যদের ওপর নির্ভরশীল রাষ্ট্র দুর্বল ও বিপদাপন্ন।
ম্যাকিয়াভেলি শাসককে জনগণের সমর্থন লাভের পরামর্শ দেন। না হলে বিপদকালে তাঁর কোনো অবলম্বনই থাকবে না। তিনি অবশ্যই স্বীকার করেন, নতুন শাসককে ক্ষমতা সুদৃঢ় করার জন্য কোনো বিজেতার পক্ষে তাঁর নিষ্ঠুর কাজগুলো একভাবে করে ফেলাই ভালো। যেন সেগুলো বারবার করতে না হয়।
The Prince গ্রন্থকে প্রায়ই একনায়কদের নির্দেশিকা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কিন্তু ম্যাকিয়াভেলির জীবনের ঘটনাবলি ও তাঁর অন্যান্য লেখা থেকে বোঝা যায় তিনি একনায়কত্ব থেকে প্রজাতন্ত্রকেই বেশি পছন্দ করতেন। তবে ইতালির রাজনৈতিক ও সামরিক দুর্বলতায় তিনি হতভম্ব হয়েছিলেন। তিনি চাচ্ছিলেন এমন একজন শক্তিশালী শাসক, যিনি বিদেশিদের শোষণ ও অত্যাচার থেকে মুক্ত করে জাতীয় ঐক্যকে সংহত করবেন। লক্ষ করার বিষয়, ম্যাকিয়াভেলি রাষ্ট্রনায়ককে নীতিহীন ও নির্মম বাস্তববাদী হতে পরামর্শ দিয়েছেন, কিন্তু তিনি ছিলেন আদর্শবাদী ও দেশপ্রেমিক। যেসব কলাকৌশল তিনি অপরকে শিখিয়েছেন, নিজে কিন্তু সেগুলো তেমন আয়ত্ত করতে পারেননি। ম্যাকিয়াভেলির মতো খুব কম রাজনৈতিক দার্শনিকই এমন কঠোরভাবে নিন্দিত হয়েছেন। বহুকাল ধরে তিনি এমনভাবে চিত্রিত হয়েছেন যেন সাক্ষাৎ শয়তান। তাঁর নাম শঠতা ও কপটতার প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
রাজনৈতিক তত্ত্ব যে আজকাল যে অনেক বেশি বাস্তববাদী দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচিত হয়, তাঁর অনেকটা ম্যাকিয়াভেলির প্রভাবের কারণেই। যে কারণে তাঁকে
আধুনিক রাষ্ট্রের চিন্তাধারায় অন্যতম প্রধান প্রবর্তক বলে গণ্য করা হয়।
সোস্যাল কন্ট্রাক্ট - রুঁসো
দার্শনিক রুঁসো (Rousseau, ১৭১২-১৭৭৮) রচনা করেছিলেন ‘সামাজিক চুক্তি (social contract)’। যেখানে তিনি বলেন- মানুষ জন্ম নেয় মুক্ত হয়ে, কিন্তু জন্মের পর দেখে চারিদিকে শুধু বাঁধার শেঁকল । এ থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে বলেছেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কথা, যে আইন হবে সকল মানুষের নিজেদের তৈরী আইন- এক ধরণের সামাজিক চুক্তি। রুঁসো সমাজতন্ত্রের কথা সরাসরি না বললেও তাঁর লেখায় ছিল নিপীড়িত মানুষদের মুক্তির কথা। যে কারনে ফরাসী বিপ্লব যদিও রুঁসোর মৃত্যুর প্রায় দশ বছর পর সংঘঠিত হয়, তারপরও ফরাসী বিপ্লবে রুঁসোর দর্শনের অবদান ছিল বলে ধারণা করা হয়।
রুসোর মতবাদ প্রাকৃতিক সাম্য ধারনার উপর নির্ভরশীল, যেখানে মানুষ মাত্রই সমান, স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং তৃপ্ত। মানবিক জ্ঞানের উন্নতি এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির উদ্ভবের ফলে শ্রমের শ্রেণীবিভক্তি সুচিত হয় এবং মানব জাতির প্রাকৃতিক সুখকর অবস্থা পরিবর্তিত হয়ে ধনী-দরিদ্র বিভাজন সৃষ্টিকরে, পরিনতিতে রাষ্ট্রিয় সমাজ অত্যাবশ্যক হয়ে যায়। রুশো বলেন,
“ সমাজ গঠনের এমন একটা আদর্শ থাকতে হবে যাতে সমাজভুক্ত সকল ব্যক্তির জীবন ও সম্পদ সমাবেত শক্তির সাহায্যে নিরাপদ অ সুরক্ষিত থাকবে এবং প্রত্যেকে পরস্পরের সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় আপন আদেশই পালন করবে ও আগের মতই স্বাধিন থাকবে ”
ফলত সামাজিক চুক্তি বিকশিত হয়। এ চুক্তি কেনো নিরঙ্কুশ শাসক তৈরি করে না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার সমস্ত অধিকারকে সামাজিক চুক্তির দ্বারা সমষ্টির নিকট সমুদয় ভাবে সমর্পণ করে। আবার সকল নাগরিক একটা সার্বভৌম কাঠামোর সমান অধিকারী হিসাবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার অধীনে তা পূনরায় লাভ করে। প্রত্যেকে নিজেদেরকে সমার্পন করবে অথচ ব্যক্তিগত ভাবে কারো কাছে নত হবে না। ক্ষমতা এখানে ব্যক্তিবিশেষের নয় পরস্পরের।
এই বইয়ের কিছু বিখ্যাত উক্তি
Man is born free, and everywhere he is in chains.
The Sovereign, having no force other than the legislative power, acts only by means of the laws; and the laws being solely the authentic acts of the general will, the Sovereign cannot act save when the people is assembled.
Every law the people have not ratified in person is null and void — is, in fact, not a law.
The legislative power belongs to the people, and can belong to it alone
অন দ্যা অরিজিন অব স্পেসিস -চার্লস ডারউইন
ডারউইনের বিখ্যাত বই অন দ্যা অরিজিন অব স্পেসিস On the Origin of Species বইটি ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত হয় । বিবর্তনের সেই বিখ্যাত মতবাদের কারনে বহুল আলোচিত এই বইটি ।
দাস ক্যাপিটাল - কার্ল মার্ক্স
জার্মান দার্শনিক কার্ল মার্ক্স তাঁর মার্ক্সবাদী দর্শনের ভিত রচনা করেছিলেন এই বইটিতে । দুনিয়া তোলপার করা তাঁর দার্শনিক তত্বে একাত্ব হয়ে কত তরুন হয়েছে বিপ্লবী , কত নগর হয়েছে পুঁজিবাদী থেকে সমাজ তন্ত্রে রুপান্তর তার ইয়ত্বা নেই । ডাস কাপিটাল (জার্মান Das Kapital; ইংরেজি Capital; বাংলা পুঁজি) কার্ল মার্ক্সের লেখা পুজিঁবাদের সমালোচনামূলক একটি বই। সমাজপ্রগতির সাথে অর্থনীতির জটিল সর্ম্পক মার্ক্সবাদের প্রধান অংশ। সামাজিক ইতিহাসের ব্যাখ্যায় মার্ক্স দেখিয়েছেন, যে কোনো ঐতিহাসিক যুগ সমকালীন পণ্য-উৎপাদন ব্যবস্থার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। উৎপাদন ব্যবস্থা বলতে মার্ক্স সাধারণভাবে উৎপাদন প্রসংগ তোলেননি। মার্ক্স জোর দিয়েছেন উৎপাদন সর্ম্পকের উপর -- যার অর্থ, উৎপাদন ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে সামাজিক মানুষ পরস্পরের সংগে যে সর্ম্পক গড়ে তোলে।
ডাস কাপিটালের প্রথম খন্ডে মার্ক্স পুঁজিবাদী সমাজে উৎপাদন প্রণালীর বিশ্লেষণ করেছেন। ধনতান্ত্রিক সমাজে বাজারে বিক্রয়ার্থ পণ্যদ্রব্যের দুটি চেহারা দেখতে পাওয়া যায়। একটিতে তার ব্যবহারিক মুল্য প্রকাশ পায়, অপরটিতে বিনিময় মুল্য।
ডাস কাপিটালের ২য় খন্ডের উপনাম পুঁজির সঞ্চালন প্রক্রিয়া। এখানে মার্ক্স ধনতান্ত্রিক অর্থনীতিতে পুঁজির গতিবিধি, আবর্তন, নিয়োজিত পুঁজির পণ্যে রূপান্তর ও পরিশেষে বাজার-পদ্ধতির মধ্যে বিনিময় ব্যবস্থায় বিভিন্ন পণ্যের উত্পাদন ও মূল্যমানের মধ্যে ভারসাম্য-অবস্থায় সরল পুনরুৎপাদন পদ্ধতির প্রচলন, ইত্যাদি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন।
ডাস কাপিটালের ৩য় খন্ডটির উপনাম ধনতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থার সামগ্রিক চিত্র (The Process of capitalist production as a whole)। এখানে মার্ক্স বিশেষ বিশেষ মূল্যমানের প্রশ্ন, পুঁজির মুনাফার হার ও উদ্বৃত্ত (surplus) মূল্যের বিভাজন থেকে প্রাপ্ত মুনাফার কথা বলেছেন। মার্ক্স দেখিয়েছেন, পণ্যোৎপাদনে পুঁজির মালিকের ব্যয়ের পরিমাণ ও পণ্যের যথার্থ উৎপাদন ব্যয় সমান নয়।
অয়েল্থ অফ নেশনস - এডাম স্মিথ
আধুনিক অর্থনীতির জনক এডাম স্মিথ রচিত এ বইটির নাম অয়েল্থ অফ নেশনস । ১৭৭৬ সালে ক্ল্যাসিকাল অর্থনীতির উপর লিখিত এই বইটি ব্রিটেনে শিল্প বিপ্লবের সহায়ক হিসেবে কাজ করে এরপর ধীরেধীরে ইউরোপের অর্থনৈতিক বিকাশে মূখ্যভূমিকা রাখে এই বইটি ।
তথ্যসূত্র :
পাশ্চাত্য দর্শন - ড আমিনুল ইসলাম
পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিবৃত্ত - ড আব্দুল হাই তালুকদার
উইকিপিডিয়া