প্রেমিকার পথ চেয়ে চেয়ে কেটে গেল কয়েকটি বছর,এখন আমার প্রেমিকার প্রেমিকের চোখও অবসাদগ্রস্ত।
কোনো এক পড়ন্ত বয়সের আড্ডায়,তোমার মনের বিশাল উঠানে নুয়ে পড়া রোদ হয়ে দেখা দিবো আমি। তারপর তোমার উঠোন জুড়ে আমি আমার স্মৃতি নিয়ে দৌড়ে বেড়াবো,তোমার বিরক্তির কারন হবো।
তুমি বিশ্বাসই করতে পারবে না,তোমার জন্য যে প্রেমিকটি বড্ড বেশি ভালবাসা নিয়ে অশ্বথ্থের মতো দাড়িয়ে থাকতো তোমার জানালা বরাবর রাস্তার এপাশে,সমস্ত রোদ ঝড় উপেক্ষা করে,তোমার হাজারটা চোখ রাঙানোকে বুকের মাঝে আশীর্বাদ করে নিয়ে,সেই... তোমার সেই প্রেমিকটিই আজ তোমার বিরক্তির কারন হতে চাই।
প্রেমিকা,তোমার এই প্রেমিকটি সবই বুঝে। তবুও তোমায় একবার দেখার জন্য চেয়ে থাকে তোমার অবসর কাটানো জানালার দিকে,কখনো আবার পিছু নিয়ে চলে,কখনো আবার শ্যেন দৃষ্টি দিয়ে অপলক চেয়ে থাকে ছাদের চিলেকোঠায়.....
সাগর তোমার বড্ড প্রিয় ছিলো,মনে আছে..! ভিজে বালি পথে হাটা তোমার ছিলো অনেক বেশিই প্রিয়। মনে আছে...! প্রেমিকা...!
এই সাগর পাড়েই তোমার এই প্রেমিককে খুজে পেয়েছিলে তুমি।
ঝিনুকে যেমন মুক্ত লুকানো থাকে তেমনটা নয়,আমি ছিলাম সাগরের নোনা জলে ভেসে আসা এক বেনামি সস্তা মুল্যের পুরুষ।
উওাল সাগরের বাতাসে ভিজে বালি পথে হাতে হাত,সোডিয়াম আলোতে সারারাতে এক হয়ে থাকা দুটি ছায়া এসবই ছিলো এক মায়ার অভিনয়।
তুমি স্বাথর্ক প্রেমিকা। তুমি স্বাথর্ক।
অথচ একদিন,তোমার এই প্রেমিকের বুকের পশমে মুখ লুকিয়ে ছিলে। বলেছিলে এখানে একটা সুখ আছে,এখানে একটা ভালবাসা আছে,এখানে যে জীবনটা আছে সেটাই তোমার চাই।
বুঝিনি,বুকের পশমে হারিয়ে যাবো তোমার সব কথাগুলো। সবুজ নাকি কাবর্ন নিয়ে অক্সিজেন দেয় আর এখন বুঝেছি,বুকের পশম দূষিত সব কথা শুসে নেয়।
তুমি স্বাথর্ক প্রেমিকা,তুমি স্বাথর্ক।
তোমার পথ চেয়ে চেয়ে কেটে গেল কয়েকটি বছর,এখন তোমার প্রেমিকের শরীরে বয়সের দাগ।
তবুও তোমার এই প্রেমিকের মনের ভিতরে বয়ে চলে কাঁচা রক্তক্ষরণ।
তোমার দেওয়া, একখানা শেষ চিঠি,তোমার হাতে লেখা গোটাগোটা অক্ষরে ফুটে ওঠা সেসব কথাগুলো এমনই ছিলো,যা বিধে গেছে আমার বুকে।
লিখেছিলে
“এ মন আর বিকোবে না মহাশয়...
এ মন খোজে নরম মন,অবুঝ ভালবাসা..
আমি নারী ছলনাময়ী,খেলি ভালবাসা নিয়ে....
তুমি পুরুষ বড্ড বোকা,আমার ফাদেই দিলে ধরা...”
তুমি স্বাথর্ক প্রেমিকা...........
আজ বিশ্বাসই হয় না,যে আমিটা বারবার ভুলে যায় অঙ্কের সুত্র বীজগাণিতিক রাশিমালা জ্যামিতিক চিন্তা চেতনা, ইংরেজি টেনস নেরেশানের সহজ নিয়ম,মহাজ্ঞানী নিউটনের আপেল পতন ও তিন সুত্র। সেই আমিটাই আজ গড়গড় করে বলে দিতে পারি আমাদের প্রথম দেখা,হাতে হাত রাখা,চোখ তুলে তাকানো,প্রত্যেকটা দিনের প্রত্যেকটা কথা অক্ষরে অক্ষরে।
মনে হয়,কোন ভুলই হবে না সেখানে।
তুমি স্বাথর্ক,আমি তোমায় আজ জয়ী বলে দিলাম।
হা হা হা....
বড্ড বেশিই হাসি পাই আমার।
আজ তোমার বিরক্তির কারন হতে এসেছি।
আমায় রাখবে তো...! তোমার বিরক্তির কারন হিসেবে...!
রাখবে তোমার অনীহায়...!
তীব্র ঘৃনায়.....!
তোমার মনে গাথা হাজারটা অপ্রিয় মানুষের মাঝে....!
রাখবে...! বলো রাখবে....!
আজ আমি সত্যিই বিরক্তির কারন হতে চাই,আমায় দেখলে তুমি ধিক্কার দিবে,মুখ ফিরিয়ে নিবে,তবুও তখনও গরীব ভিক্ষুকের মতো চেয়ে চেয়ে দেখবো তোমায়।
আর প্রতিটা সময় গুনে তোমার বিরক্তির কারন হবো...
যত্তোসব ছাইপাস নিয়ে ধ্বংস করে দিবো মস্তিষ্কের সমস্ত প্রকোষ্ঠ,তারপর পাগল হবো,আমার উন্মাদ হৃদয়ের সাম্রাজ্যের এক ও অদ্বিতীয় অধিশ্বরী রূপে তোমায় বসিয়ে রাখবো। আর তোমায় ভাববো,প্রতিদিনের মতো এক একটি আনমনা বিকেলে,পড়ন্ত সূযের্র আলোর বুকে মাথা রেখে......
তারপর কঠিন সব বাস্তবতার প্যাচানো সিড়ির ধাপে ধাপে হেটে খুজে নিবো একবুক বিশ্বাস,আর ক্যালেন্ডারের পাতায় দাগ কেটে তোমার অপেক্ষায় থেকে থেকে তোমারই বিরক্তির কারন হবো.....
আমি আবার তোমার প্রেমিক হতে চাই নি,তোমাকে ফিরে আসতে বলি নি,শুধু তোমার বিরক্তির কারন হতে চেয়েছি....
আমায় রাখবে তো...! তোমার বিরক্তির কারন হিসেবে....!