কথায় আছে বুদ্ধিমানের ইশারা আর ভাল গরুকে একটা খোঁচা। কথাটা এবার হাতেনাতে দেখা যাক। নিচের তিনটা অনু গল্পে কার অভিমত কি? আস্তিক এবং নাস্তিক সবারই চিন্তার খোরাক আছে বলেই আমার ধারনা। নিশ্চয় এই গল্পেও রয়েছে বুদ্ধিমানদের জন্য ইশারা। হা হা হা....
বিজ্ঞ কুকুর
এক জোড়া বিড়াল বসে আছে, পাশ দিয়ে যাচ্ছিল এক বিজ্ঞ কুকুর। বিড়ালেরা একাগ্রচিত্তে নিজেদের মধ্যে কী যেন বলাবলি করছে, এমনকি কাছে এলেও কুকুরটিকে তারা লক্ষ্য করেনি দেখে কুকুর মশায় থামলেন। খানিক বাদে দেখা গেলো, দুই বিড়ালের মাঝে বেশ বড়, এক জাতবিড়াল উপস্থিত হলো। ওদের দিকে তাকিয়ে বেশ উপদেশের ভঙ্গিতে বললো, "জ্ঞতি ভ্রাতৃগণ, প্রার্থনা করো; প্রার্থনা করতে করতে ,নিঃসন্দেহে একদিন ইঁদুর বৃষ্টি হবে।"
এ কথা শুনে কুকুর মনে মনে হাসলো, যেতে যেতে বললো,"হায়রে অন্ধ বিড়াল, বোকা, এটা কি লিখিত নেই, আর আমি কি জানি না, জানতেন না কি আমার বাবা বা তারও বাবা য, যে, বিশ্বাস প্রার্থনা আর আরাধনায় মেলে না ইঁদুর, কেবল মেলে হাড্ডি।"
চোখ
একবার চোখ বললো, "এই পর্বতমালার ওপারে সনীল কুয়াশা-ঢাকা যে পর্বত খানা দেখা যায় , বড়ো মনোরম, তাই না?"
এই শুনে কান বললো, "কোথায় পাহাড়? আমি তো শুনতে পাচ্ছি না।"
হাত বলে উঠলো, "ছুঁয়ে অনুভব করতে গেলাম ,কই কোন পাহাড় পাই নি।"
নাক তখন বললো, "পাহাড়ের কোনো লেশমাত্র নেই। কই আমি তো কোনো গন্ধ পাচ্ছি না।"
চোখ অন্য দিকে ফিরলে অন্যান্যরা চোখের এমনতর অদ্ভুত ভীমরতি বিষয়ে বলাবলি করতে থাকলো-"চোখটার কিছু একটা নিশ্চয় হয়েছে।"
দুই পন্ডত ব্যক্তি
প্রাচীন শহর আফকারে বাস করতেন দুই পণ্ডিত। তাঁরা পরস্পরকে ঘৃণা করতেন, আর একে অপরের জ্ঞানের মর্যাদাহানি করতেন। কেন না, একজন ছিলেন নাস্তিক, অন্যজন আস্তিক।
একবার জনাকীর্ণ স্থানে নিজ নিজ অনুসারীদের সম্মুখে দুই পণ্ডিত ঈশ্বরের অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব নিয়ে তুর্ক-বিতর্ক শুরু করলেন। দীর্ঘ বিতর্কের পর তাঁরা প্রস্থান করলেন।
সে সন্ধ্যায়, নাস্তিক জ্ঞানী গির্জায় গিয়ে বেদির সামনে নিজেকে সমর্পণ করে পূবের কৃতকর্মের জন্য ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন।
একই সন্ধ্যায়, আস্তিক জ্ঞানী তাঁর সমস্ত পবিত্র পুস্তুক পুড়ে ছাই করে দিলেন; কেননা তিনি ঈশ্বরের প্রতি তাঁর এতদিনকার বিশ্বাস হারিয়েছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১১