somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী কর্তৃক অব্যাহত পুরুষ নির্যাতন - সোচ্চার হওয়ার সময় হবে কখন? (১ম পর্ব)

০৯ ই জুন, ২০১০ দুপুর ১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

না, লিখতে একবারে মনে চাইছিল না। চাইবে কেন, এমন লেখা পুরুষ ব্লগাররাও পছন্দ করে না। মেয়েরা তো নয়-ই। অপছন্দতো অপছন্দ। নাগালে পেলে আপুরা যেন চর, থাপ্পর, কিল, ঘুষি মারে। দৌড় দিলে ইট-পাটকেল। কথা-বার্তায় আঁচ করি। সুযোগ হয়নি পাওয়ার এখনো। তবু লিখব, লিখবোই। কপালে যা আছে, আছে।
যদি নারী নির্যাতনের কাহিনী লিখি, নারীদের কাছে তা পজেটিভ।
নারী নির্যাতনের কাহিনী এখন এতোটা পজেটিভ, সবাই চিল্লায় নারী মরল, নারী শেষ হয়ে গেল বলে। যে যত বেশী চিল্লাতে পারবে এ নিয়ে, সে ততো সুশীল, তত প্রগতিবাদী।
আর যদি পুরুষ নির্যাতনের কাহিনী লিখি, তা পুরুষদের কাছেই পজিটিভ নয়। কি অদ্ভুত পার্থক্য দুটো প্রাণীর! আবার তারা এক সাথে থাকতে চায়। থাকে। ঘুমায়। খায়। কিভাবে যে থাকে ভাবি, ভাবতে থাকি। কুল-কিনারা পাই না।
মেয়েরা স্বভাবগতভাবে দু:খ বিলাসী। তারা সর্বদা, বঞ্চিত হচ্ছি, নির্যাতন সহ্য করছি, কষ্টে আছি জাতীয় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। সুখে থাকলেও বলে নরকে আছি। আমার মত দু:খী জীবন আর কার আছে? সংসারে খাওয়া-পরার সুখ আছে তো স্বামীর আদর নেই বলে নালিশ। খাওয়ার পরার সুখ আছে, স্বামীর আদর ভালোবাসা আছে, তো স্বাধীনতা নেই বলে নালিশ। এগুলোর যখন সবই আছে তখন অমুকের মত আমাদের নেই, বলে নালিশ।
এর বিপরীত অবল পুরুষ, আসলে সব পুরুষই। তারা কষ্টে থাকলেও চেপে রাখে। প্রকাশ করে সুখে আছি, ভাল আছি। নিজের কষ্টের কথা বলা মানে নিজের অযোগ্যতা আর ব্যর্থতা প্রচার। কোন পুরুষ কি চায় এ হতে? তাহলে পুরুষত্ব যে ঠান্ডা হয়ে যায়।
যে কাহিনী তিনটি এখানে তুলে ধরছি, কোন কল্প-কাহিনী নয়। কোনোটা নিজের দেথা। অনেকগুলো নিজের কানে শোনা।

পুরুষ নির্যাতন কাহিনী – ১.
কয়েকদিন আগের ঘটনা, আনুমানিক দু মাস। কবীর গাজী তিন বছর আগে বিয়ে করেছে। বর্তমানে তাদের দু বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। চাকুরী করে বাহরাইনে। টাকা-পয়সা আগে বাপের নামে পাঠাতো। বিয়ে করার পর স্ত্রীর কাছে মুরীদ হয়েছে। ব্যংক থেকে বাপের নমিনি বাদ দিয়ে নমিনি করেছে স্ত্রীকে। বিয়ে করার পর বাপের সংসারে আর টাকা পাঠায় না। পাঠায় স্ত্রীর কাছেই। পুরাতন টাকা আর নতুন ঠাকা সবই স্ত্রীর হাতে। থাকবেই না কেন? সেই-তো সব। এত বছর পর খুঁজে পাওয়া। এমন তো খুঁজতে হয়নি কাউকে। অন্য সকলকে তো মাগনা-ই পাওয়া গেছে।
পুরুষরা বিয়ে করার পর স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ী, শালা-শালিদের আদর যত্নে উম্মাদ হয়ে যায়। নিজের পিতা-মাতা, ভাই-বোনকে আর আপন ভাবতে থাকে না। তাদের মনে হয়, খামাখা ঝামেলা। এদের অস্তিত্ব না থাকলেই ভাল। মাঝে মাঝে ভাবে, আহারে! এরাই যে আমার একমাত্র আপন, শুধুমাত্র ভালোবাসা আর অদ্বিতীয় প্রেম, কয়েক বছর আগে যদি একবারও জানতাম, তাহলে সব কিছু ছেড়ে দিয়ে বিনা পয়সায় এ বাড়ির চাকর খাটতাম।
আমিও যে কখনো এমন হইনি, এ রকম ভাবিনি, তা নয়। এ উম্মাদনা থেকে কারো কারো হেদায়েত নসীব হয়, অনেকেরই হয় না।
কবীর গাজী এবার দেশে আসল। দেশে আসার আগেই স্ত্রীর বাড়ি থেকে তার বাড়িতে জানিয়ে দেয়া হল, সে যেন শ্বশুড় বাড়ী না আসে।
কারণ, স্ত্রী তার সাথে ঘর করবে না। তার অভিযোগ, সে নাকি পুরুষত্বহীন।
কবীর বলল, আপনারা আমাকে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন, আমি সত্যিই কি . .। যেভাবে পারেন, পরীক্ষা করেন।
-না, কোন পরীক্ষার দরকার নেই। তোমার স্ত্রী-ইতো বলেছে। সে কি পরীক্ষা ছাড়া বলেছে?
-তা হলে বিগত তিন বছরে আমি চার পাঁচ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছি এগুলো ফেরত দেন। বাহরাইনের মরুভূমিতে কত কষ্ট করে রোদে পুড়ে বিদ্যুতের খুটি বসাই। বাপের ঋণটাও এখনো শোধ করা হয়নি।
-না এগুলো তো তোমার বউ, পোলার খরচ, মোহরানা, খোর-পোষ ইত্যাদিতে শেষ হয়েছে।
কবীর গাজীর সামনে দুটো টার্গেট; বউ ফিরে পাওয়া আর টাকা। নয়তো শুধু দ্বিতীয়টি। প্রথমটি পেলে তো দ্বিতীয়টি এমনিই পাওয়া যাবে।
দেন-দরবার শুরু করল, তার সীমা-সাধ্যের মধ্যে। শেষে স্ত্রী তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা ঠুকে দিল। নালিশ; খোর-পোষ না দেয়া, খোজ-খবর না রাখা আর যৌতুক দাবী করা।
কবীর গাজীর অবস্থা এখন, খয়রাত লাগবে না, কুত্তা ফিরাও। মামলাটা তুলে নাও। আমি আবার বিদেশে যাই। এই বার যাইতে পারলে আর আমু না দ্যাশে।
এরপর পরের খবর আমার কাছে আপডেট নেই।

আমার যদি কোন পত্রিকা থাকত, যদি সে পত্রিকায় পুরুষ নির্যাতনের কাহিনী জমা দেয়ার আহবান করা হত, তাহলে কত হাজার হাজার মর্মান্তিক কাহিনী আপনারা শুনতে পেতেন, কত হৃদয় বিদারক চিত্র দেখতেন, একটু ভাবুন তো। ভাবুন।
(চলবে)
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×