অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলে গত সেপ্টেম্বরে হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ভারত।যার প্রভাবে বাংলাদেশের বাজারে জ্যামিতিক হারে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার সেই ভারতই বাংলাদেশকে পেঁয়াজ কেনার জন্য অনুরোধ করছে!
সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার রকিবুল হকের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশকে পেঁয়াজ কিনে নেয়ার এ প্রস্তাব দেন বলে জানা গেছে।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা এক কর্মকর্তা জানান, অন্য দেশ থেকে ৩৬ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির চুক্তি করেছে ভারত। ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে ১৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ পৌঁছে গেছে। কিন্তু সব রাজ্য মিলে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ নিয়েছে। বেশিরভাগ রাজ্যই চাহিদা প্রত্যাহার করেছে। অবশিষ্ট পেঁয়াজ মুম্বাইয়ের জওহরলাল নেহরু বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতের ভোক্তা কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রী রাম বিলাস পাসওয়ান জানান, আমদানিকৃত পেঁয়াজের মহারাষ্ট্র সরকার ১০ হাজার টন, আসাম ৩ হাজার টন, হরিয়ানা ৩ হাজার ৪৮০ টন, কর্ণাটক ২৫০ টন ও ওড়িশ্যা প্রদেশ সরকার ১০০ টন চাহিদা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
গত নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১০০ রুপি পেরিয়ে যাওয়ার পর এসব রাজ্য এই নিত্যপণ্যটি আমদানি করতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। এখন তারা আমদানিকৃত পেঁয়াজের উচ্চমূল্য এবং স্বাদের ভিন্নতার অজুহাত দেখিয়ে সেগুলো নিতে রাজি হচ্ছে না।
রাজ্যগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের আমদানিকৃত পেঁয়াজ নিতে রাজি না হওয়ায় সেগুলো পচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, ভারত এসব পেঁয়াজ প্রতি টন ৫০ হাজার থেকে ৫৯ হাজার (৬০০ থেকে ৭০০ ডলারে) টাকায় আমদানি করেছে। এখন বাংলাদেশকে এসব পেঁয়াজ প্রতি টন ৫৫০ থেকে ৫৮০ ডলারে কিনে নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে মোদি সরকার।
এদিকে সূত্র বলছে, ওই বৈঠকে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার রকিবুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছে। নেপাল হয়ে আরও পেঁয়াজ দেশের বাজারে ঢোকার অপেক্ষায় আছে। সুতরাং বিনামূল্যে পরিবহনসহ ভারতের কিছু প্রণোদনা দেওয়া উচিত।
পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর মাস তিনেক আগে ভারত সফরে গিয়ে এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার আগে আমাদের অন্তত জানাবেন। আমি আমর রাঁধুনিকে পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করার জন্য বলেছি! আমি অনুরোধ করব, এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আগে আপনারা দয়া করে আমাদের অবগত করবেন।’
লিন্ক: https://dkpapers.com/?p=21368
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৪৬