আমি হোম সিক মানুষ। পড়াশুনা বা কাজের কারনে বিদেশে গেলেও কখনোই তা বেশীদিন উপভোগ করতে পারতাম না। আমার মনে আছে প্রতিবার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েই আমি প্রথম যেটা করতাম সেটা হচ্ছে আবার কবে দেশে আসব সেটার পরিকল্পনা, দিন গুনা এবং ক্যালেন্ডারে সেটা লিখা। ধরেন আমি ২০০ দিন পরে আবার দেশে যেতে পারব, তাহলে আমি ক্যালেন্ডারে আজকের দিন থেকে প্রত্যেকটা দিনের সাথে বাকী আছে কতদিন সেটা লিখে রাখতাম। আমার অস্ট্রেলিয়ার ব্যবহৃত ক্যালেন্ডার গুলোতে তাই দুটি সংখ্যা দেখাত: তারিখ এবং পরবর্তীতে দেশে ফেরার বাকী দিনের সংখ্যা।
প্রথম বার যখন ফিরছি তখন মনে আছে আমি অন্তত ৩৬ ঘন্টার জার্নিতে (ট্রানজিট সহ) একেবারেই ঘুমাতে পারিনি। কারন কেন যেন আমার মনে বদ্ধমুল ধারনা হচ্ছিল আমি কোন মতেই দেশে পৌছাতে পারব না। হয় প্লেনটি ধ্বংস হবে বা অন্য কিছু হবে, কিন্তু দেশে ফেরা আমার হবে না।
যতই সময় যাচ্ছিল ততই আমার টেনশন এবং ভয় বাড়ছিলই। কেবল দেশে ফেরার জন্য আমার আকুতি প্রায় অসুস্থতার পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল।
সেবার যখন মনিটরে দেখলাম দেশের সীমানায় প্লেনটি ঢুকেছে কেবল তখনই আমি শান্ত হলাম। মনে হচ্ছিল এখন প্লেনটা ধ্বংস হলেও দেশের মাটিতেই গিয়ে পড়বে। আর পুরো শরীর ছেড়ে দিয়ে আরাম করে ঘুম দিতে পেরেছিলাম।
এই আমিও মাঝে মাঝে হতাশ হয়ে পড়ি। মাঝে মাঝে নিজের মনে প্রশ্ন জাগে, কেন ফিরলাম?
খুন, রাহাজানি সব দেশেই হয়। বরং উন্নত অনেক দেশে আমাদের চেয়ে বেশী হয়। আমি বাজী ধরে বলতে পারি, আমেরিকায় যত ধরনের অর্গানাইজড ক্রাইম হয়, বাংলাদেশের মানুষ সেগুলো কল্পনাও করতে পারে না। সমস্যা হলো উন্নত দেশগুলোতে ক্রাইম হলেও সেগুলোর প্রতিরোধ বা অন্তত প্রতিকারের ব্যবস্থা সাধারনত থাকে। আর আমাদের দেশে সে আশার গুড়েবালি। এটাই আমার হতাশার কারন।
যখন দেখি একটার পর একটা বড় ধরনের অন্যায় হয়েই যাচ্ছে আর সেটার কোন বিচার তো দুরের কথা, বরং সেটার পেছনে হয়তো শাসক কুলের অংশগ্রহন, নুন্যতম আস্কারা বা অন্তত পরিহারযোগ্য ব্যর্থতা ছিল, তখন খুব হতাশ হই।
হুমায়ুন আজাদ, ব্লগার রাজীব আর আজরাতে ব্লগার অভিজিৎ। আচ্ছা ফারাবী কোথায় জানি আছে এখন? হত্যাকান্ডের আসামী (যে কিনা আত্ব স্বীকৃতও) কি করে জামিন পায়? আর আগের এ ধরনের হত্যাকান্ড গুলোর একটারও বিচার কি হয়েছে? তাহলে হত্যাকান্ড গুলো থামবে কেন?
আসেন সবাই মিলে বলি জয় বাংলা।