আমাদের দেশের সেই মানুষটির কথা নিশ্চয়ই আপনারা এরই মধ্যে ভুলে যাননি।আমি যাঁর কথা বলছি,তিনি হলেন মুসা ইব্রাহীম।তাঁর কৃ্তিত্বকে খাটো করে দেখার উপায় নেই।তিনি বহু কষ্টে হিমালয়ের চূড়ায় পৌঁছুতে পেরেছিলেন।তাঁর যাত্রা পথে লুকিয়ে ছিল অনেক বিপদ।আসুন,এবার জানি তেমনই এক বিপদের তথা রহস্যের কথা।
তুষার শৃঙ্গ এভারেস্ট থেকে মাত্র ৭৮৬ ফুট থেকে নিচে অবস্থিত একটি স্থানের নাম রংবুক।জায়গাটার আয়তন ২৬৫ কিলোমিটার।সবসময় সেখানে তীব্র ঝড়ো বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।রংবুক যেন হল এক রহস্যময় ,অশান্ত স্থান।বেশ কজন পর্বতারোহী সেখানে গিয়ে হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল।১৯২২ সালে সেখানে যে অভিযাত্রী দলটি গিয়েছিল,তাতে একজন চিকিৎসক ছিলেন।তার নাম আলেকজান্ডার কিউলাস।সেখানে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন তিনি।তারপর কয়েক ঘন্টার মধ্যে মারা গেলেন।মারা যাবার পূর্বে তিনি প্রলাপ বকছিলেন।তখন তিনি এক লোমশ দানবের কথা বলেন।
১৯২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রংবুকে যান লে জে নর্টন ও তাঁর দল।সেখানে যাবার পর হঠাৎ ঘন কুয়াশার মেঘ তাঁদের ঘিরে ফেলে।সঙ্গী শেরপারা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করল,সে কুয়াশার মধ্যে নর্টন অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছেন ধীরে ধীরে।তারা বাধা দানের চেষ্টা করে,কিন্তু পারে না।তাদের চোখের সামনে সে ভদ্রলোক হারিয়ে যান চিরজীবনের মত।
১৯৩১ সালে ইংল্যাডের এক পর্বতারোহী সেখানে যান লুকিয়ে।সেই লোকটি আর ফিরে আসেননি।যাবার পূর্বে তিনি একটি চিঠি দিয়েছিলেন তার ইংরেজ অফিসারের কাছে।তখন তিনি বলেছিলেন,যদি তিনি দুই মাসের মধ্যে না ফিরেন তবে যেন চিঠিটা খোলা হয়।সেই চিঠিতে লেখা ছিল মাত্র কয়েকটি শব্দ।সেগুলো ছিল-"মেটো কাংনি দেখতে পারছি।স্থানটি আমি চিনি।তবে ভয় হচ্ছে ফিরে আসতে পারব কি?"
এ ঘটনার চার বছর পর রহস্যময় রংবুকে পাওয়া গেল ব্যক্তিটির ছেঁড়া পোশাক।তার পকেটে পাওয়া গেল একটি বিবর্ণ কাগজ।তাতে লেখা ছিল-"পেয়েছি,আমি তার দেখা পেয়েছি।"
অনেকেই সেখানে এভাবে হারিয়ে গেছে।অনেক পর্বতারোহী বলেছেন যে তারা সেখানে দেখেছেন ডানাওয়ালা এক অদ্ভুত জীব।অনেকের মতে রংবুক হল একটি শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র।একারণে মানুষজ়ন সেখানে হারিয়ে যায়।
১৯২৪ সালে এভারেস্ট শৃঙ্গ আরোহণ কালে ইংরেজ যুবক ম্যালোরি সেখানে হারিয়ে যান।কয়েক বছর আগে তাঁর লাশ আবিষ্কৃত হয়।তাঁর লাশ পাওয়া যায় বরফের নীচে।আরভিন নামক আরেক পর্বতারোহী তাঁর সাথে ছিলেন।তাঁরও লাশ পাওয়া যায়।তাদের লাশগুলো অবিকৃ্ত অবস্থায় ছিল।কারণ রংবুকে আছে প্রচুর ঠান্ডা।
অনেকে মনে করেন তাঁরা দুজন এভারেস্ট জয় করতে পেরেছিলেন।নেমে আসার পথে আকস্মিক বরফ ধসে তাঁদের মৃত্যু ঘটে।তাঁদের লাশের সাথে একটি ক্যামেরাও পাওয়া যায়।
আমাদের ভাগ্য ভালো যে মুসা ইব্রাহীমের তেমন কিছু হয়নি।
রেফারেন্স : আলী ইমামের 'রহস্যের খোঁজ়ে'
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৫৯