রাসুলুল্লাহ সা নব্যুয়্যতের পূর্বে কৈশোরে কৌতুহলবশত এক বা দুইবার কুরাইশ মুশরিক পৌত্তলিকদের পূঁজা অর্চনা দেখতে অনুষ্ঠানস্থলে রওয়ানা দিয়েছিলেন বলে সীরাতে ইবনে হিশামে উল্ল্যেখ আছে। কিন্তু প্রতিবার ই পথিমধ্যে কোন গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে গিয়ে গভীর ঘুমে চলে যান তিনি এবং পৌত্তলিকতার নূন্যতম ছোঁয়া থেকেও আল্লাহ তাঁকে এভাবে রক্ষা করেন।
আজকের সময়ে যে মুসলমানরা শারদীয়, বিজয়া, ক্রিসমাস, স্বরস্বতী, দুর্গা প্রভৃতি অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করে, তাদের মনে রাখতে হবে , পৃথিবীর মানুষকে একমাত্র সত্য দ্বীন আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি আহবান জানানোর দায়িত্ব এই মুসলিম জাতিকে দেয়া হয়েছিল। এই দায় কেবল তাদের নয়, যাদের আপনারা মাওলানা মৌলভী বলে চিনেন, বরং এ দায়িত্ব প্রতিটি মুসলমান আদম সন্তানের। সেই দায়িত্ব পালন না করে এমনিতেই বিরাট জবাবদিহিতা ও আল্লাহর পাকড়াওয়ের ভয় রয়েছে। এর সাথে শিরক ও মূর্তিপূজার এই মহা সনাতন প্রাচীন পৌত্তলিকতার পাপে উত্সাহ দেবার জবাবদিহী যোগ হলে সেটা আরো ভয়াবহ হবে। অতএব সাবধান!
তাহলে অন্য ধর্মাবলম্বী ক্লাশমেট বা পরিচিতজনদের সাথে আমাদের ব্যাবহার কেমন হবে? অবশ্যই কোন ধরনের ঘৃণা ,অবজ্ঞা বা হিংস্রতার কথা ভাবাও যাবেনা। বরং সবসময়ে নিজের মধ্যে একটা আফসোস এবং অপরাধবোধ থাকা দরকার কারন আমরা ঠিকভাবে তাদের কাছে স্রষ্টার পরিচয় উপস্থাপন করতে পারিনি বলেই ইসলামের মত একটা সর্বাধুনিক ও জীবন্ত জীবনব্যাবস্থা থাকার পরেও তারা আজও এই নেয়ামত থেকে বঞ্চিত। তাদের প্রতি আমাদের আচরণ হতে হবে সহানুভূতিতে পরিপূর্ণ। সুযোগ পেলেই বুদ্ধিমত্তার সাথে বন্ধুত্ত্ব বজায় রেখে তাদেরকে বুঝাতে হবে সুন্দরভাবে - যতটা না কথা দিয়ে, তারচেয়ে অনেক বেশি নিজের জীবনে ইসলামের সব গুণাবলী প্র্যাকটিস করে। আপনাকে প্রমান করে দিতে হবে যে আপনি তাদের কল্যাণকামী।
ইসলামের ওপর পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের অধিকার রয়েছে, জন্মসূত্রে মুসলিম পরিবারে আসাটা আপনার আমার বিরাট সৌভাগ্য কিন্তু যতক্ষণ না আমরা ইসলামের প্রাকটিসগুলো করছি ততক্ষণ অন্যদের সাথে আমাদের মর্যাদার পার্থক্য খুবই সামান্য। অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি মানুষের প্রাপ্য সর্বাধিক ভালোবাসা, সহযোগিতা, কল্যাণকামী ও সহানুভূতিশীল আচরণ করুন কিন্তু কখনোই সেটা তাদের পূজা অর্চণার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নয়।