জামাতে ইসলামী, চরমোনাইর পীর বা দেওয়ানবাগী খোদার খাসী.. এরা ইসলাম পালন আর ইসলাম প্রতিষ্ঠার বুলি আওরায় যেহেতু, চাইলে এরা এমন কিছু এক্সেপশনাল কাজ করতে পারতো যা তাদের প্রসংশিত করতো। .. কিন্তু কোন একটা জিনিস প্রতিষ্ঠা করা মানে যে বাস্তব জীবনে তা করে দেখানো, এটা এদের রাজনৈতিক নীতিমালা এলাউ করেনা। জামাতে ইসলামী আর চরমোনাইর পীরেরা পল্টনে গলার রগ ফুলায়া হাসিনা দ্বীপুমনিরে গালিগালাজ আর অভিশাপ না দিয়া শান্তভাবে ঘোষণা দিতে পারে , হে বাংলার শাসক শ্যাডাম শেখ হাসিনা - আমরা ওয়াদা করতেসি আমাদের প্রত্যেক মুরিদ বা প্রত্যেক রুকন সাথী একজন করে রোহিঙ্গার মুসলমানের দায়িত্ব নিবো! আমাদের মুরীদেরা আর আমাদের রুকুনেরা তাদের ফ্লাটবাসা আর ঘরবাড়ি একজন করে রোহিঙ্গার সাথে ভাগাভাগি করে নিবে। আপনে তাদের ঢুকবার অনুমতি দেন!
যদিও হাসিনা দ্বীপুমনি এইটা মানবে না, তবুও এমন ঘোষণা ইসলাম নামধারী দলগুলো থেকে এলে প্রমান হতো ইসলামের ওপর তারা সত্যিই আন্তরিক! কিন্তু স্রেফ বায়তুল মোকারমী গলার রগ ফুলায়ে কুশপুত্তলি দাহকারী মিছিল প্রমান করে এরা ইসলামের সত্যিকারের কর্মসূচীর নীতিমালা সম্পর্কে অজ্ঞ অথবা ভাওতাবাজ ধুরন্ধর রাজনীতিজীবি! অন্য আর দশটা জাতীয়তাবাদী, নাস্তিক্যবাদী আর ধর্মনিরপেক্ষ ভাওতাবাজ রাজনীতিবিদের সাথে এদের পার্থক্য সামান্যই! এমন নয় যে এদের অর্থসম্পদের সংকট রয়েছে!
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যে ভয়ানক নীপিড়ন নির্যাতন চলছে, ইসলাম খুব যুক্তিসঙ্গতভাবে তা সমাধান করতে পারে! খেয়াল করবেন, আমি বলেছি ইসলাম পারে - মুসলমান পারে , এটা বলিনাই।
রাসুলুল্লাহ সা: এর হিজরতকালীন সময়ের সাথে যদি বর্তমান সময়কে তুলনা করি - অর্থাৎ মুসলিম উম্মাহ সামরিক ও প্রযুক্তিগতভাবে দুর্বল - অসহায় .. তাহলে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হলো, রোহিঙ্গারা যেকোন মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে হিজরত করবে এবং ওই অঞ্চলের "মুসলমান"গন তাদেরকে প্রতিষ্ঠিত হতে সব রকম সাহায্য করবে। যেমন করেছিলো মদীনার আনসারগন মক্কার মুহাজিরদেরকে। বাড়িতে দুটি ঘর থাকলে একটা ছেড়ে দিয়েছেন মক্কার মুহাজির ভাইকে.. মুহাজির ভাইও আত্মসম্ভ্রমের পরিচয় দিয়েছেন, ধার নিয়েছেন আনসারের কাছ থেকে সামান্য কিছু দিরহাম.. বাজারে গিয়ে ব্যবসা শুরু করে লাভের অংশে ধার শোধ করেছেন।
যদি ওমর বিন খাত্তাব রা: এর সময় হতো এখন... হাজার রোহিঙ্গার রক্ত ঝরার প্রশ্ন-ই আসতো না! কোন একজন মাত্র রোহিঙ্গা মা বা বোনের আর্তচিৎকার কানে এলে ইসলামী দুনিয়ার লীডারের ওপর ফরজ হয়ে যেত জিহাদ ঘোষণার! যেমন করে দেবলের কারাগারে একবোনের চিঠির জবাবে মুহাম্মাদ বিন কাশিম শত মাইল ছুটে এসে সিন্ধুকে মুক্ত করেছেন অনাচার অত্যাচারের নাগপাশ থেকে..
অবশ্য আমাদের অবস্থা এখন হলো হযবরল - এলোমেলো.. গন্তব্যবিহীন - জীবনের উদ্দেশ্যবিহীন দিশাহীন আলোহীন পাশবিক জীবন! কোন লীডারশীপ নেই - ইসলামের জ্ঞান নেই - কেন্দ্র নেই - কমান্ড নেই - আনুগত্যের ধারনা নেই। বিচ্ছিন্ন মেষপাল চরে খাচ্ছি নেকড়ের জঙ্গলে.. বাচা মরা কোনটার ই উদ্দেশ্য নাই! যে মহান লক্ষ ও উদ্দেশ্য নিয়ৈ আল্লাহ আদম সৃষ্টি করেছেন, তার ধারনাও নেই আমাদের মাঝে। তাই আমাদের গলার শাহরগ ফুলানো শ্লোগান, হম্বিতম্বি, কুশপুত্তলি আর পতাকা পুড়ানো, ফেইসবুকে বিপ্লবী ছবি পোস্ট করে লাইক ও শেয়ার গননা করা-- এগুলোই হয়তোবা যৌক্তিক -
মানুষের মাঝে যে প্রচন্ড আবেগ - রোষ আর চেতনা এসব ঘটনায় দেখা যায় - তাহরীর স্কোয়ারের সমাবেশ দেখে বুকের মাঝে বাষ্পচাপ বেড়ে যায় - নাফ নদীতে মুসলিম নারী পুরুষের আহাজারি দেখলে চোখ ফেটে পানি গড়ায় - ভারতের বিরুদ্ধে সাইবার যোদ্ধাদের হুঙ্কার শুনে গর্বে উদ্ধত হয়ে যায় মস্তক... শুধু একটা যোগ্য নেতৃত্বে যদি পেয়ে যেত এই উম্মাহ! যে নেতৃত্ব যুগের চাহিদা অনুযায়ী ইসলামকে জীবনের সমস্ত সমস্যা সমাধানের বাস্তবিকভাবেই উপস্থাপন করতে পারতো.. পরিপূর্ণভাবে ইসলামকে উপস্থাপন করতে পারতো এই চেতনাদীপ্ত জনগনের মাঝে - পৃথিবী আবার সেই সাহাবাদের সোনালী পৃথিবী হয়ে যেত! দুনিয়ার কোন কোনায় মজলুমের আহাজারী থাকতো না - থাকতো না বঞ্চিত - অত্যাচারিত আর ক্ষুধিত কোন আদমসন্তান..

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





