হলুদ ছাড়া কোনো তরকারির কথা বোধহয় কেউ কল্পনাও করতে পারেন না। এ ছাড়া, স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রতিদিনের পরিচিত মসলা হলুদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা অনেকেই জানেন। কিন্তু হলুদে কারকিউমিন নামের একটি রাসায়নিক উপাদান পাওয়া যায় এবং এ উপাদানে অন্ত্রের ক্যান্সার কোষ বিধ্বংসী ক্ষমতা আছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া, স্ট্রোক এবং স্মৃতিভ্রংশতার চিকিৎসায়ও সুফল দেয় এ উপাদানটি।
হলুদের এই উপাদান অর্থাৎ কারকিউমিনের ক্যান্সার বিধ্বংসী ক্ষমতা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছে ব্রিটেনের লেইসেস্টারের দু’টি হাসপাতাল। কেমোথেরাপির সাতদিন আগে অন্ত্র-ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের কারকিউমিনের বড়ি খাওয়ানো হবে। এ বড়ি কোনো কাজ করছে কিনা তারপর তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রাথমিকভাবে ৪০ রোগীর ওপর এ চিকিৎসা চালানো হবে।
অন্ত্র-ক্যান্সার দেহে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে সাধারণভাবে তিনটি ওষুধের মিশ্রণ দিয়ে কেমোথেরাপি দেয়া হয়। কিন্তু ক্যান্সারে আক্রান্ত অর্ধেক সংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে এ চিকিৎসা কোনো কাজ করে না।
লেইসেস্টারের দু’টি হাসপাতালে চালানো এ পরীক্ষায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রফেসর উইলিয়াম স্টুয়ার্ড। স্টুয়ার্ড বলে, প্রাণী দেহে কারকিউমিনের বড়ি অথবা কেমোথেরাপি যে কোন একটি ব্যবহারের পরিবর্তে দু’টি একযোগে ব্যবহার নিয়ে যে পরীক্ষা চালানো হয়েছে তাতে ‘একশ গুণ' বেশি ভালো ফল পাওয়া গেছে।
সে আরো বলে, অন্ত্র ক্যান্সার দেহে ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসা চালানো বেশ জটিল হয়ে যায়। এর অন্যতম কারণ হলো, কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কারকিউমিন দেয়া হলে তাতে ক্যান্সার-কোষের স্পর্শকাতরতা বাড়তে পারে এবং কেমোথেরাপিতে সহজে দেহ সাড়া দিতে পারে বলে মনে করছে অধ্যাপক স্টুয়ার্ড। সে আরো জানায়, এ গবেষণা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। অবশ্য উদ্ভিদের রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে ক্যান্সার চিকিৎসার সম্ভাবনা নিয়ে এ ধরনের গবেষণার ফলে ভবিষ্যতে নতুন নতুন ওষুধ বের হওয়ার পথ সুগম হবে বলে মনে করেছে সে।