হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী, খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার বিছাল শরীফ-এর মাস হচ্ছে ‘জুমাদাল উখরা’। অর্থাৎ তিনি এ পবিত্র মাসের ২২ তারিখ বিছাল শরীফ লাভ করেন।
তাই সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী বা জীবনী মুবারক জেনে উনাকে যথাযথ মুহব্বত ও অনুসরণ করে
মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রেযামন্দী হাছিল করা।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আফযালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার প্রকৃত নাম মুবারক হলো হযরত আবদুল্লাহ আলাইহিস সালাম, উপনাম মুবারক হলো হযরত আবু বকর আলাইহিস সালাম। বিশেষ উপাধি মুবারক হলো আতীক্ব ও ছিদ্দীক্ব¡। পিতার নাম মুবারক হলো হযরত উছমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, উপনাম মুবারক হলো হযরত আবু কুহাফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। মাতার নাম মুবারক হলো হযরত সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, উপনাম মুবারক হলো উম্মুল খাইর বিনতে সখর। তিনি ‘আমুল ফীল’ অর্থাৎ আবরাহার হস্তী বাহিনী আগমনের বৎসরের প্রায় আড়াই বছর পরে ৫৭২ ঈসায়ী সনে বিলাদত শরীফ লাভ করেন। তিনি দুনিয়াবী বয়স মুবারক হিসেবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রায় সোয়া দু’বছরের ছোট ছিলেন। ইসলাম গ্রহণকারী বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে তিনিই প্রথম। তিনি পূর্ব-পুরুষ র্মুরাহ উনার দিক দিয়ে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্ব-বংশীয় ছিলেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, উনার বুযুর্গী ও ফযীলত বর্ণনার অপেক্ষাই রাখে না। কুরআন শরীফ-এ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি একাধিক স্থানে উনার ছানা-সিফত করেছেন। উনার প্রশংসায় অসংখ্য হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে। হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরে যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী তিনিই ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম এবং এই ছিদ্দীক্বে আকবর লক্বব উনার একক বৈশিষ্ট্য। উনার মর্যাদা স^ল্প পরিসরে উল্লেখ করা সম্ভব নয়। এমন কোন ভাষা নেই, যে ভাষায় উনার জীবনীগ্রন্থ মুবারক রচিত হয়নি। তিনি ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন, প্রথম কুরআন শরীফ সংগ্রহ করেন এবং নাম দিলেন মুছহাফ এবং উনাকেই প্রথম খলীফা বলে অভিহিত করা হয়েছে। হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি ইসলাম জগতে এক নজিরবিহীন বিরল ব্যক্তিত্ব। নুবুওওয়াতের পর উনার ইমামত ও খিলাফত সকলেই বিনা দ্বিধায় মেনে নেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘তিরমিযী শরীফ’-এর হাদীছ শরীফ-এ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যেই জামায়াতে হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনি উপস্থিত থাকবেন সেখানে তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইমামতি করা উচিত হবে না।
আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ করেন, আমি আমার রব (আল্লাহ পাক উনাকে) ছাড়া যদি আর কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম তাহলে হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনাকেই বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, একদা জনৈক মহিলা আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে কোন বিষয়ে কথাবার্তা বললো। তিনি তাকে পুনরায় আসতে বললেন, তখন মহিলাটি বলল: ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আবার এসে যদি আপনাকে না পাই, তখন কি করবো? উত্তরে তিনি বললেন: তুমি যদি আমাকে না পাও, তবে হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব¡ আলাইহিস সালাম উনার নিকট এসো। রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তিনি আমার (ছওর) গুহার সঙ্গী এবং হাউযে কাউছারে আমার সাথী।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফ-এর পূর্বে উনার অসুস্থ অবস্থায় হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি ১৭ ওয়াক্ত নামাযে ইমামতি করেছিলেন। আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফ-এর পর হযরত ছাহাবায় কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অনতিবিলম্বে সকলেই হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব¡ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেন। তিনি সমগ্র মুসলিম জাহানের খলীফা মনোনীত হন এবং যোগ্যতা ও সুনামের সাথে সর্বমোট দু’বছর তিন মাস দশ দিন খিলাফত পরিচালনা করেন। এই অল্প সময়ের মধ্যে সকল প্রকার বিদ্রোহ ও ষড়যন্ত্র সাফল্যের সাথে দমন করে তিনি সমগ্র মুসলিম জাহানে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। (সুবহানাল্লাহ)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার সূত্রে আল-ওয়াক্বিদী এবং আল-হাকিম বর্ণনা করেন যে, হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব¡ আলাইহিস সালাম ৭ই জুমাদাল উখরা ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীমি বা সোমবার শরীফ গোসল করেন। আর এই দিনটি ছিল শীতল। এর পর ১৫ দিন ধরে উনার জ্বর হয়। এ সময় তিনি মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়তে পারেননি। হিজরী ১৩ সনে ২২ই জুমাদাল উখরা ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার শরীফ দিবাগত রাতে অর্থাৎ ইয়াওমুছ ছুলাছায়ি বা মঙ্গলবার রাতে ৬৩ বছর বয়স মুবারকে তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেন। তাই প্রত্যেক বান্দা ও উম্মতের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে, উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী বা জীবনী মুবারক জেনে উনাকে যথাযথ মুহব্বত ও অনুসরণ করে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রেযামন্দী হাছিল করা।
সূত্রঃ
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১২ সকাল ১১:২৯