একটা মুভি এতো অসাধারন ভাল লাগতে পারে না দেখলে বুঝানো সম্ভব না । অন্ততো ৫- ৬ বার দেখেছি প্রতিবার মনে হয়েছে এই নিয়ে একটা রিভিউ লিখি কিন্তু কখনোই মনের মত করে লেখা হয়না । এবার ও লেখা হবেনা শুধু বলবো কেন এটা মিসকরতে পারেন না । যারা এখনও এটা মিস করেছে তাদের মধ্যে কেউ নিজেকে মুভি লাভার পরিচয় দিলে তার জন্য সমবেদনা ছাড়া আমার কাছে কিছুই থাকবেনা । বায়েস্কপে অসাধারন একটা রিভিউ থাকাতে নতুন করে আর রিভিউ লিখলাম না । তবে এটুকু বলতে পারি ২০১০ সালে নির্মিত হওয়ার কথা থাকলেও F. Scott Fitzgerald এর ১৯২৫ সালের উপন্যাস দ্যা "গ্রেট গেটসবি" এর এই কাহিনির গভীরতা বুঝতে পেরে Sony Pictures Entertainments থেকে প্রায় হাড্ডা হাড্ডি প্রতিযোগিতায় বিশাল এক অর্থনৈতিক আর ক্ষমতার দাপটে Warner Bros নিয়ে নেয় । অস্ট্রেলিয়ান সরকার ও এতে অর্থয়ন করে । মেগা বাজেটে 3D ভার্সনে ছবিটি নির্মন করা হয় । ছবিটির শুটিং ফক্স স্টুডিওজ অস্ট্রেলিয়াতে হয় । জে গেটসবির বিলাস বহুল ম্যানশনের বহিঃর্দৃশ্য সিডনির ইন্টারন্যাশনাল কলেজ অব ম্যানেজমেন্ট নামক কলেজ বিল্ডিংএ ধারন করা হয়েছে । ইংলিশ ছবিতে এতো অসাধারন নাচ গানের দৃশ্য আর দেখা হয়েছে বলে মনে করতে পারছিনা যা হোক আপনি এর নির্মন শৈলি আর কাহিনীর নাটকীয়তা উপভেগ করুন এই আশা করছি । যারা এই মুহুর্তে ছবিটি দেখতে পারছেন না তাদের জন্য কাহিনী সংক্ষেপ নিচে দিলাম । ওহ একটা কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম .. এতে অমিতাভ বচ্চন ও অভিনয় করেছে । এ প্রসঙ্গে ডিক্যাপ্রিওর ভাষ্য, ‘মিস্টার বচ্চন কেবল প্রতিভা ও অভিনয় দক্ষতা দিয়েই আমাকে মুগ্ধ করেননি। ছবির সেটে তাঁর বিনম্র আচরণ দেখেও আমি মুগ্ধ হয়েছি। তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে সম্মানিত বোধ করেছি আমি। ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করলেও যে উত্সাহ আমি তাঁর ভেতর দেখেছি তার কোনো তুলনা হয় না। ভবিষ্যতে আবার তাঁর সঙ্গে কাজ করতে পারলে আমার অনেক ভালো লাগবে।’
কাহিনী: F. Scott Fitzgerald
অভিনয়: Leonardo DiCaprio, Carey Mulligan, Joel Edgerton, Tobey Maguire
জেনর: Drama/Romance
মুক্তিকাল: 10th May 2013 (USA)
বাজেট : ১২৫ মিলিয়ন ডলার
##@
নিক ক্যারাওয়ে (Tobey Maguire), একজন মদ্যপ ও ইনসোমনিয়ায় আক্রান্ত মানুষ। সে নিজের চিকিৎসার জন্য অবস্থান করছে একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে। চিকিৎসককে নিজের কথাগুলো বর্ণনা করছে অনেক ভেবে ভেবে, অতীতের দিনগুলিতে চলে গিয়ে। পুরনো সেই দিনগুলি তাকে করে দিচ্ছিল নস্টালজিক। কথাগুলো বলতে বলতে সে যেন সাজিয়ে নিচ্ছিল নিজের জীবনের একটি গল্প। চিকিৎসক নিকের অবস্থা বিবেচনা করে তাকে বললেন তার সেই কথাগুলোকে সাদা কাগজে কালির আচঁরে সাজিয়ে নিতে। নিক খুব অবাক হলো, অস্বীকৃতি জানালো। কিন্তু চিকিৎসকের বাড়িয়ে দেয়া কাগজ আর কলমের দিকে তাকিয়ে তার যেন কী হয়ে গেল। একসময় নিক তার মনের কথাগুলোকে কলমের খোঁচায় বাস্তবে রুপ দিতে লাগলো। চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগলো ১৯২২ সালের সেই দিনগুলি।নিক ক্যারাওয়ে তার লেখার মাধ্যমে ফিরে যাচ্ছিল ১৯১২ সালের সেই দিনগুলিতে। যখন সে আমেরিকার লং আইল্যান্ডের একটি বাড়িতে বসবাসের জন্য স্থায়ী হয়। বাড়িটির চারপাশে ছিল অসংখ্য গাছপালা আর পাশ দিয়ে বয়ে চলা সমুদ্র। শীত, বর্ষায় নিক তার সেই সুন্দর ছায়াঘেরা বাড়িতে একাকী জীবন যাপন করত। গ্রীষ্মকালে মানুষজন যখন সমুদ্রের তীরে আনন্দ করত নিক তখন তার বারান্দা থেকে তা দেখত। তবে মাঝে মাঝে নিক অনুভব করতে পারত কেউ একজন সারাক্ষন আড়াল থেকে তাকে দেখছে। একদিন সে পাশের বাড়িটি, যেটা ছিল একটি বিশাল ম্যানশন সেখানকার এক জানালা দিয়ে একজনকে লুকিয়ে তার দিয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখল। এই সেই লোক যার নাম জে গেটসবি, লোকটা একাই থাকে আর বেশিরভাগ সময় পার্টি, লোকবল আর হৈ চৈ নিয়ে থাকতে ভালবাসে। ধীরে ধীরে গেটসবির সাথে নিকের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। নানা অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রন পেতে থাকে নিক গেটসবির কাছ থেকে। আর একে একে গেটসবি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারে নিক। অবাক থেকে অবাক হতে থাকে সব জেনে। এমন কিছু চরম সত্য সে জানে যে তা গোপন রাখতে নানা অভিনয়ও নিককে করতে হয়।
অপর দিকে , নিকের বাড়ি থেকে খুব বেশি দূরে নয় এমন এক জায়গায় থাকে নিকের কাজিন ডেইজি। ডেইজি বিবাহিত নিকেরই কলেজের এক পরিচিত ব্যক্তি টমের সাথে। নিক ডেইজির সাথে দেখা করতে প্রায়ই তার বাড়িতে যেত। সেখানে গিয়ে সে ডেইজি আর টমের বিবাহিত জীবন সম্পর্কেও অনেক অজানা তথ্য জানতে পারে। সব রহস্যই নিকের কাছে এক সময় পরিষ্কার হয়।
নিক একাধারে একজন ভালো বন্ধু আর একজন ভালো ভাই। বন্ধু গেটসবির জীবনের নানা সমস্যা আর বোন ডেইজির বিবাহিত জীবনের নানা চড়াই-উৎরাই তাকে চিন্তিত করে তোলে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় নিক। কিন্তু যে সত্যগুলো নিক একের পর এক জেনে চলেছে তা কী সে পারবে সমাধান করতে? বন্ধু আর বোনের জীবনের সব সমাধানে কতটুকুই বা সে দিতে পারবে? কী সেই চরম সত্যগুলো? এর মধ্যে কী রয়েছে কোন যোগসূত্র?