আমি আজ এখানে দুটো চিত্র তুলে ধরব । প্রথমে যার কথা বলব তিনি ধিরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী, আমার স্বামীর পৈতের সময়
দীক্ষা গুরু হয়েছিলেন । ভদ্রলোক এক কথায় ভদ্রলোক বলতে যা বোঝান হয় তাই ছিলেন । অত্যন্ত উচ্চ শিক্ষিত কলেজের
অধ্যাপক ভদ্রলোক আজীবন অবিবাহিত ছিলেন । নিজের জীবনে যত অর্থ উপার্জন করেছন তা তিনি দুঃস্থ ছাত্রদের মঙ্গলার্থে
দান করে গেছেন । নিজে থাকতেন একচালা একটা মাটির ঘরে । সেই ঘরে একটি তক্তাপোষ আর চারিদিকে স্তূপ স্তূপ বই ছাড়া
আর কিছু ছিল না । তাঁর বক্তব্য ছিল, যারার সময় সঙ্গে করে জ্ঞানটাই শুধু যাবে আর বাকি সব কিছুই পড়ে থাকবে ।
এই মানুষটি সমাজের এমন কিছু অবিচারের সাথে আপোষ করতে পারেননি বলে তাকে আত্মহত্যা করতে হয়েছিল ।
এর পর যার কথা বলব তিনি হলেন মাস্টার মশাই দিলিপ যশ । আমি বিদ্যাসাগরকে দেখার সৌভাগ্য পাইনি ঠিকই, কিন্তু মাস্টার মশাইকে দেখে আমার চলমান এনসাইক্লোপিডিয়া
বলে মনে হত । পৃথিবীতে এমন কোন বিষয় নেই যে সেই বিষয়ে তার জ্ঞান ছিল না । সংবিধান গড়গড় করে বলে যেতেন ।
এই মাস্টার মশাই ও আজীবন অবিবাহিত এবং স্কুল থেকে অবসর নেবার পরও স্কুলের একটা ঘর নিয়ে মাস্টার মশাই থাকতেন এবং নিজে
একজন অত্যন্ত উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়া সত্ত্বেও নিজের সমস্ত সম্পত্তি স্কুলকে দান করে দিয়েছিলেন ।একবার আমার মেয়ের জন্মদিন
উপলক্ষে আমি স্কুলে যাই ওনাকে আমন্ত্রণ জানাতে । গিয়ে দেখি এক হাত একটা ঘর যাতে কোন জানালা নেই মাস্টার মশাই একটা তক্তপোষের
ওপর বসে আছেন । তক্তপোষের চারপাশে স্তূপ স্তূপ সব বই ।
যে মাস্টার মশাই তাঁর সবটুকু স্কুলকে দান করেছিলেন তাকেই পরে স্কুল থেকে বিতাড়িত হতে হয় । কারণ একহাত ঘরটায় উনি থাকায় স্কুলের
বিশেষ একজনের সমস্যা হচ্ছিল ।
এতো গেল একটি চিত্র । এবার আমি তুলে ধরব আরেকটি চিত্র । আমার পরিচিত একজন বিয়ে করেছেন একজন দুষ্কৃতিকে । যার কাজই
হচ্ছে সবরকম চালান পাচার ছারাও আর যা যা সমাজ বিরোধী কাজ হয় তার সব রকমই সে করে থাকেন । মাঝে মধ্যে শ্রীঘরে গিয়েও তিনি থাকেন ।
এরম এটা লোক মানুষের রক্ত মাংস নিয়ে খেলে প্রাসাদ বানিয়েছেন । শুনেছি মাঝে মধ্যে কয়েক কিলো করে সোনা কেনেন বাড়ীর লোক জনের জন্য ।
প্রচুর অর্থ আর পকেটে অস্ত্র থাকায় গুণ্ডার বাড়ীর লোকজন মানুষকে মানুষ জ্ঞান করেন না । তাঁরা যাকে খুশি অপমান করে ।
একদিন সেই গুণ্ডার বাড়ীর একজনের সাথে পথে দেখা । সে আমাকে বলল, গুণ্ডা কিরকম বাড়ী বানিয়েছে দেখেছ ?
আমি বললাম , আজকাল চোখে একটু কম দেখি যে ।
না, কম দেখলে হবে? দেখতে হবে গুণ্ডা কেমন বাড়ী বানিয়েছে ।
আরে মশাই আমি জানি আপনারা সমাজে এখন সংখ্যা গরিষ্ঠ, আপনাদের দেখে দেখে যে চোখের
দৃষ্টিটাই খারাপ হয়ে গেছে । তাই এখন ধীরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী কিংবা দিলিপ যশের মতন লোক গুলোকে
অন্তর দৃষ্টি দিয়ে খুঁজে বেরাই ।
খুব সাবধান, আমি কি দেখব তা আমি ঠিক করব । আমার দৃষ্টিভঙ্গি তুমি ঠিক করতে এসো না ।
I will never satisfy your ego by showing my art expression, the way you want to see. I am not practicing slavery.
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৮