দরকষাকষির মত গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজের দায়িত্ব--যেটার প্রভাব সুদূরপ্রসারী--যার বা যাদের উপর দেয়া হবে, তাদের কেমন হওয়া উচিত? কি ধরণের প্রতিবন্ধকতা তাদের মোকাবেলা করতে হতে পারে? কিভাবে তারা প্রতিপক্ষের আক্রমণ সামাল দেবেন? দরকষাকষি মূলতঃ একটা মনস্তাত্ত্বিক খেলা, কাজেই শুধুমাত্র জ্ঞানের চেয়ে অভিজ্ঞতা এবং শক্ত কিন্তু একইসাথে নমনীয় মানসিকতার লোকজনই এখানে প্রাধান্য পাবে। নিজের দুর্বলতা আর শক্তিমত্তার সাথে সাথে প্রতিপক্ষের প্রতিটি পদক্ষেপ বুঝে নেয়া এবং সে অনুযায়ী নিজের পদক্ষেপ ঠিক করা ভাল নেগোশিয়েটরের কাজ, কারণ যত প্রস্তুতি-ই নিন না কেন, আলোচনার টেবিলে অনেক কিছুই আপনার বিপক্ষে চলে যেতে পারে। দরাদরির পদ্ধতি বা অ্যাপ্রোচ কেমন হবে সেটার উপরও নির্ভর করে দলে কেমন লোকজন নিতে হবে। একটা সাধারণ হিসেব করলে দেখা যায়, সহযোগী বা ইন্টিগ্রেটিভ অ্যাপ্রোচের জন্য "এক্সট্রোভার্ট" বা বহির্মূখী লোকজন উপযোগী, আর কাড়াকাড়ি বা "ডিস্ট্রিবিউটিভ" অ্যাপ্রোচের জন্য আবেগী দিক থেকে স্থির, ঠাণ্ডা মাথার লোকজন উপযোগী। সাধারণভাবে ইন্টিগ্রেটিভ অ্যাপ্রোচে পুরুষের চেয়ে মহিলারা ভালো করে থাকেন,, কারণ তারা শ্রোতা হিসেবে ভাল, সহানুভূতিশীল এবং অহেতুক নিজের মতামত অন্যের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেয়ে আলোচনার মাধ্যমে "সর্বোত্তম সমাধান" বের করতে আগ্রহী, পক্ষান্তরে কাড়াকাড়ি-মারামারির জন্য এখনো পুরুষরাই সাধারণভাবে উপযোগী।
যেকোন মুলাবাজ বা নেগোশিয়েটর একজন ভাল শ্রোতা। এই অধম বাঙালির একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য ধারণ করে, শুধু বলতেই চাই, শুনতে চাই না, বিবেচনা করা তো পরের কথা। কিন্তু একজন ভাল নেগোশিয়েটরের প্রধান ক্ষমতা হলো অনেক বেশি "অপশন" বা বিকল্প ভেবে রাখার ক্ষমতা, এবং একটা মাত্র সিদ্ধান্তে গ্যাঁট হয়ে বসে না থেকে দ্বি-পাক্ষিক দিক থেকেই চিন্তা করার । এজন্য আলোচনার টেবিলেও অপর পক্ষের প্রতিটা কথা শোনা খুব জরুরী। প্রতিপক্ষ কথা বলার সময় এমন কিছু বলে ফেলতে পারে, বা এমন গুরুত্বপূর্ণ কোন তথ্য দিতে পারে, যেটা পুরো আলোচনাকে ঘুরিয়ে দিতে পারে। কাজেই তিনি নিজে যা বলবেন, প্রতিপক্ষকে বলতে দেবেন তারচেয়ে অনেক বেশি, সবার মনোযোগ ধরে রাখবেন অপরপক্ষের দিকেই এবং সম্ভব হলে একটু উস্কে দিয়ে হলেও তাকেই কথা বলতে দেবেন, নিজস্ব কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত।
দরকষাকষি একটি মনস্তাত্ত্বিক খেলা, তাই নেগোশিয়েটরের আই কিউ এর মত "ই-কিউ" বা ইমোশোনাল ইন্টেলিজেন্স বা আবেগিক বুদ্ধিমত্তাও হতে হবে ভাল। উদাহরণ দিই। যার ই-কিউ ভাল, তিনি নিজে যেমন আবেগিক দিক থেকে স্থির, তেমনি অন্যের আবেগকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তুলনামূলক ভালভাবে। মোদ্দা কথা, তিনি অন্যকে কাঁদাবেন, কিন্তু নিজে না কাঁদার ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন, প্রেমের ফাঁদে ধরা দেবেন না। একই সাথে তার "কগনিটিভ অ্যাবিলিটি" বা বোঝার ক্ষমতা, অর্থাৎ সমস্যা সমাধান ও জটিল পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার ক্ষমতা থাকবে, সেই সাথে "পার্স্পেকটিভ-টেকিং অ্যাবিলিটি" বা অন্যের দৃষ্টিকোণ থেকেও পরিস্থিতি ভাবার ক্ষমতা থাকতে হবে। একজন নেগোশিয়েটরকে অবশ্যই বরফের চেয়েও ঠাণ্ডা মাথার অধিকারী হতে হবে, কারণ শুধু জিনিসপত্রের দরাদরিতেই নেগোশিয়েশন সীমাবদ্ধ নয়, ধরুন সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে বন্দী মুক্তি বা যুদ্ধবাজ হুতু আর তুতসিদের মাঝেও সমঝোতা করতে হয় কাউকে কাউকে, আপনার সামান্য উগ্র বা অসাবধানে মুখ ফস্কে যাওয়া একটা মন্তব্যের মাশুল দিতে হতে পারে অনেকগুলো মানুষের জীবন দিয়ে, তাই "রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন", প্রবাদটা একজন নেগোশিয়েটরের জন্য যতটা সত্যি, আর কারো জন্য অতটা নয়।
তাত্ত্বিক কচকচি অনেক হলো, বরং দেখা যাক সত্যিকারের আলোচনায় একজন নেগোশিয়েটরকে কি মোকাবেলা করতে হতে পারে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক দরাদরিতে দেহভাষা বা বডি ল্যাঙ্গুয়েজ একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, একজন ল্যাটিন আপনাকে চুমু খেলেই যে সে "গে" নয়, তেমনি একজন আমেরিকানের কঠিন, শক্ত হ্যান্ডশেকও তার শক্তি প্রদর্শন নয়। একজন ব্রাজিলিয়ান, দেখা গেছে প্রতি ১০ মিনিটে ২৮ বার আপনার কথার মাঝখানে বাধা দেবে এবং মোটামুটি কখনোই চুপ থাকবে না, পাশে বসলে আধা ঘণ্টায় কোন না কোনভাবে আপনাকে স্পর্শ করবে, সেখানে একজন আমেরিকান গড়ে ১০ বার বাধা দেবে ১০ মিনিটে, এবং আপনার স্পর্শ বাঁচিয়ে থাকবে সবসময়। ব্রিটিশরা রক্ষণশীল এবং কেতাবী, আমেরিকানরা হাসিখুশি এবং ইনফর্মাল, কিন্তু এটা ভাবার কোন কারণ নেই যে আমেরিকানটা কোন অংশে আপনাকে ছাড়া দেবে! চোখাচোখিটা গুরুত্বপূর্ণ প্রেমের মত দরাদরিতেও, সারাক্ষণ অন্যদিকে তাকিয়ে থাকলে প্রতিপক্ষ ধরেই নেবে আপনার গোপন করার কিছু আছে, আবার একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকাকে হুমকি বা বলপ্রয়োগের চেষ্টাও ধরে নিতে পারে। খুব বেশি আরামদায়ক ভঙ্গিতে বসে থাকা যেমন অমনোযোগের প্রমাণ, তেমনি হঠাৎ ঘুরে যাওয়া বেয়াদবি হিসেবেও নিতে পারে কেউ কেউ। প্রতিপক্ষের কথা বলার সময় সামান্য মাথা নাড়া, বা গ্রহণযোগ্য হাত নাড়াও পরিস্থিতিকে সহজ করে আনতে পারে আপনার জন্য।
একজন নেগোশিয়েটরের সবচেয়ে বড় গুণ সম্ভবত "যোগাযোগ" বা "কম্যুনিকেট" করা, নিজের এবং প্রতিপক্ষের সাথে, এবং প্রতিপক্ষের চিন্তাকে পড়তে পারা,এবং অবশ্যই যে তথ্য হাতে আসে সেগুলোর নির্মোহ ও নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করা। যে কোনরকম " বায়াস" বা পক্ষপাত আপনার চিন্তাকে ঘোলা করে দেবে, অন্য বিকল্প ভাবার পথ আটকে দেবে, একজন নেগোশিয়েটরের জন্য এরচেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না। এক্ষেত্রে আমাদের মাঝে যে একচোখা নীতিগুলো কাজ করে, সেটা নিয়ে একটু আলোচনা করা যেতে পারে।
স্টেরিওটাইপিং: সবচেয়ে সাধারণ পক্ষপাত বা চিন্তার বৈষম্য। সবচেয়ে সহজ উদাহরণ হলো-- নোয়াখাইল্যা মানেই ধান্দাবাজ, রংপুর মানেই মফিজ। সবচেয়ে সর্বনেশে পক্ষপাত এটাই, কোন সাদাসিধে নোয়াখালির লোককে ধান্দাবাজ ভেবে আপনি যেমন দরাদরির ১২টা বাজিয়ে দিতে পারেন, তেমনি কোন রংপুরের চতুর লোকও আপনাকেই "মফিজ" বানিয়ে লাভটা পকেটে নিয়ে যেতে পারে।
হ্যালো ইফেক্ট: স্টেরিওটাইপিংয়ের কাছাকাছি। কারো ১টা কোন
আচরণ দেখেই তার সম্পর্কে ঝটপট একটা ধারণা করে নেয়া। যেমন, কেউ আপনাকে দেখে একটু হাসলো, ধরে নিলেন সে আপনার প্রেমে পড়ে গেছে, বা ছেলে হলে, আহা, লোকটা বেশ তো! ভাল নেগোশিয়েটর মাত্রেই হাসি দিয়ে পরিবেশ সহজ করে নেবে, তাই বলে তাকে একেবারে জানি দোস্ত ভাবার কোন কারণ নেই।
সিলেক্টিভ পারসেপশান: কারো সম্পর্কে আগে থেকেই কোন ধারণা নিয়ে যাওয়া, এবং আলোচনার সময় শুধু সেই ধারণার সাথে মেলে এমন বৈশিষ্ট্য খোঁজা। যেমন আপনি শুনে গেলেন অমুক লোক মহা বদমেজাজী, গিয়ে দেখলেন লোকটা হয়তো কখনো ভ্রু কুঁচকে আছে, ব্যস, হয়ে গেল! অথচ এর মাঝে হয়তো তিনি ৩ বার হেসে কথা বলেছেন, আপনি খেয়ালই করলেন না!
প্রজেকশান: ধরে নেয়া যে সবাই নিজের মত হবে। হয়তো আপনি ভাবছেন, এই ইস্যুটা সামান্য, কিন্তু অন্যরাও যে সেটাই ভাববে, এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। দরাদরি ব্যর্থ হবার এটা একটা বড় কারণ।
এ তো গেলো তথ্য গ্রহণ করার সময় পক্ষপাতের কথা। কিন্তু যে তথ্য আপনি নিচ্ছেন, সেটাও কিন্তু সবাই একইভাবে প্রসেস বা প্রক্রিয়াজাত করে না, এজন্যই চোখের সামনে একই ঘটনা দেখেও শার্লক হোমস আর ওয়াটসনের সিদ্ধান্ত হতো আলাদা। এই তথ্য প্রক্রিয়াজাত করার সময়ও পক্ষপাত হতে পারে, সেটাকে বলা হয় "কগনিটিভ বায়াস"। মোটামুটি ১২ রকম কগনিটিভ বায়াস আছে, কতকগুলোর উদাহরণ দেয়া যাক।
ইররাশনাল এসকেলেশান অভ কমিটমেন্ট: খটমটে নামগুলোর বাংলা করলে এগুলো আরো ঝামেলা হয়ে যেতে পারে, আক্ষরিক অর্থ হলো নিজের কমিটমেন্ট বা কর্তব্যের দিকে অযৌক্তিক পক্ষপাত। সহজভাবে বললে, আপনার কাছে অনেক অনেক তথ্য আসছে যেগুলো আপনার অবস্থানের বা যুক্তির বিপক্ষে যাচ্ছে, কিন্তু আপনি ভুল স্বীকার না করে অসম্ভব দাবীতে অটল থাকলেন। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা তর্কে এই জিনিস ভাল দেখা যায়, জঘন্য খেলার পরেও নিজের দলকে ভাল প্রমাণ না করলে আমাদের চলবে না!
ফিক্সড-পাই বিলিফ: কাড়াকাড়ি করে খাওয়া মুলাবাজের মূল সমস্যা, সবকিছুকেই জয়-পরাজয়ের মানসিকতায় দেখা। কেকের পুরো ভাগটাই তাদের চাই, সমঝোতা বলে যে একটা জিনিস আছে সেটা এরা ভুলেই যান। যেকোনরকম বন্ধুত্বপূর্ণ দরাদরির ১২টা বাজিয়ে দিতে এমন একটা যুদ্ধংদেহী লোকই যথেষ্ট।
অ্যাঙ্করিং: একদম অ্যাঙ্কর বা খুঁটি গেড়ে বসা, এবং সেই অবস্থান থেকে না নড়া। যতই বোঝান, ঐ যে বলেছি আমাকে কোক ছাড়া পেপসি দিলে খাবো না, তো খাবোই না, পেপসি খেতে আরো ভালো হলেও না। এধরণের লোকজন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিজের ধারনায় আটকে থেকে অনেকগুলো ভাল বিকল্পও এড়িয়ে যান।
ইস্যু ফ্রেমিং: এমনভাবে আলোচনাটাকে ফ্রেমিং করলেন, মানে এমনভাবেই একটা ইস্যুকে ঘিরে বিষয়গুলো সাজালেন, যে প্রতিপক্ষ পুরো ব্যাপারটাই উলটো বুঝলো। মনে করিয়ে দেয়া দরকার, আপনি যেভাবে ভাববেন, অপরপক্ষ সেভাবে না-ও ভাবতে পারে, কাজেই যেকোন ইস্যুকে প্রতিপক্ষের দৃষ্টিকোণ থেকে ফ্রেমে বাঁধাই করুন।
অস্বচ্ছ উপস্থাপন: খুব বেশি তথ্য দিয়ে বসা, এমনকি যা দরকার নেই সেগুলো-ও। ক্ষতি যেটা হয়, আপনি কি চাইছেন সেটাই প্রতিপক্ষ বুঝতে পারে না, পুরো আলোচনাই ঘোলাটে হয়ে ওঠে।
উইনার'স কার্স: আপনি রোজ বাংলামটর থেকে রিকশা করে মালিবাগ যান ৫০ টাকায়, তাও রিকশাওয়ালাদের হাতে-পায়ে ধরে। একদিন কোন এক রিকশাওয়ালা এক কথায় ৩৫ টাকায় রাজি হয়ে গেল। আপনার মনে হবে, আচ্ছা, আসলেই কি জিতলাম? ব্যাটা রাস্তা চেনে তো? আমাকে সোজা লোক পেয়ে বোকা বানালো নাকি? সাধারণত এটা মনে হবে যদি প্রতিপক্ষ সহজেই আপনার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। সমাধান? সহজ, আপনার কোন দাবীটা আদায় হলে সেটা যথেষ্ট হবে, আগে থেকে জেনে রাখুন, নিজের চাহিদা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখুন।
অতি আত্মবিশ্বাস: ব্যাখ্যা করার কিছু নেই, শুধু দরাদরি কেন, যুদ্ধে হারার জন্যেও দায়ী এই জিনিস। প্রতিপক্ষকে সম্মান দিন, ছোট করবেন না, আখেরে নিজের প্রাণটাই বাঁচবে।
ল অভ স্মল নাম্বারস: সোজা বাংলায়, অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী। নিজের স্বল্প অভিজ্ঞতা থেকে হুট করে যাচাই-বাছাই না করে সিদ্ধান্তে চলে যাওয়া। আমাদের দেশে এটা খুব সাধারণ ঘটনা, অভিজ্ঞ দক্ষ ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে খাতিরের লোককে বসিয়ে দেয়া, মূল্যটা যার হয় খুব বেশি।
সেল্ফ-সার্ভিং বায়াস: পরিস্থিতি বিবেচনা না করে ব্যক্তির চরিত্র বিবেচনায় সিদ্ধান্তে আসা। ধরুন, আরে এই লোক সরকারী চাকরি করে, এ নিশ্চয়ই ঘুষ খেয়েই বাড়ি তুলেছে, নাহলে ঢাকা শহরে বাড়ি আসবে কোথা থেকে? বাড়িটা যে তার বাবারও হতে পারে, সেটা ভাবি না। অথবা, এই বিচারক তো অমুক লোকের আত্মীয়, সে তো তার দিকেই সাফাই গাইবে, অথচ ঘটনা এমনও হতে পারে যে আসলেই যার সাফাই গাইছে সে নির্দোষ। ব্যক্তিগতভাবে এই লেখকের এই সমস্যাটা আছে, সমস্যাটা যে বন্ধু চিহ্ণিত করেছিল, এই লেখার মাধ্যমে তাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রাখছি এই বেলা।
সবশেষে, সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, কখনো, কোন অবস্থাতেই, কোন কারণেই, এমনকি তীব্র আক্রমণের মুখেও মাথা গরম করা চলবে না, আর একেবারেই চলবে না কোনরকম রূঢ় ভাষা ব্যবহার করা। প্রতিপক্ষের কৌশল হতে পারে আপনাকে রাগিয়ে দেয়া, কিন্তু যে মুহূর্তে আপনি রেগে যাবেন, গালিগালাজ করবেন, অথবা মাথা গরম করে ফেলবেন, নিশ্চিতভাবে ধরে নিন আপনার দরাদরি এখানেই শেষ, এবং বিজয়ী পক্ষটি আপনি নন।
সব মিলিয়ে আপনি প্রস্তুত নিজের ব্যাপারে, এবার প্রতিপক্ষের ব্যাপারেও ভাবতে হবে একটু, এবং সেটা খেলার আগে যেমন, তেমনি খেলার মাঠেও। এমনকি বন্ধুত্বপূর্ণ দরাদরিতেও অপরপক্ষের কিছু কৌশল থাকে, আর কাড়াকাড়ির ঘটনা হলে তো পদে পদে আপনাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করা হবে। বই বা ব্লগ পড়ে এগুলো ঠেকানো প্রায় অসম্ভব, কিন্তু মোটামুটি ধারণা থাকলে, সেটা সহায়ক হবে, এবং যথারীতি, এ পর্যন্ত অসম্ভব কষ্ট করে যাদের পড়ার ধৈর্য্য হয়েছে, প্রতিপক্ষের টিপস আর ট্রিকস কি হতে পারে, কিভাবে সেটা ঠেকাবেন, সেটা পরের পর্বে আলোচ্য।