somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ অসংলগ্ন কিছু মুহূর্ত

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



স্তব্ধ দুপুরের রঙ গায়ে মেখে যে মেয়েটি একা বসে থাকে অথৈ জলের নিস্তব্ধতায়; তার জন্যে জমানো আছে একটি আকাশ। বুকের ভেতর, খুব নীরবে।

দেবার মত কিছু নেই জেনেও যে ভালবাসার মত অমূল্য ধন লাভ করবার বাসনা ত্যাগ করতে পারে না, কুয়াশাদিনের প্রথম প্রহরে শুধু তার হৃদয়েই সুখের সমীকরণে অসমতা জমে।

জীবনের খানাখন্দে পা আঁটকে গেলে দুটি নরম হাতের অভাববোধ যখন তীব্র হয়ে ওঠে - যখন জীবনপথে যৌথ হতে সাধ জাগে ভীষণ - টুকরো হৃদয়ে তখন লাল ও নীল রঙের নিদারুণ উৎসব শুরু হয়। আর রবীন্দ্রনাথে সব সময় সান্ত্বনা খুঁজে পাওয়া যায় না বলেই ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে’- গানটির আবেদন কখনো কখনো বড় ম্লান হয়ে আসে। একা পথ চলতে অসহ্যবোধ হয়। পৌষের শেষ পৃষ্ঠায় লেগে থাকা কুয়াশার মতো অস্পষ্ট আগামী সামনে নিয়ে তখন মন যে কেমন করে– কে তার খোঁজ রাখে। তাই একদিন আশাহত গাঢ় কিছু দীর্ঘশ্বাসে কুয়াশাখেকো শহরের বাতাস ঘন হতে শুরু করলে, গল্পটি শুরু হয়ে যায়। সন্দীপ একা একা পথ হাঁটে।

এই উন্মুক্ত আকাশের নিচে, এই জনারণ্যে এত একলা কেন লাগে, সে ভেবে পায় না। যদিও এখন রাস্তায় থমথমে শূন্যতা। কাকপক্ষীটিও নেই। ওপরের দিকে তাকালে দেখা যায়, পত্রঝরা বৃক্ষের শ্রীহীন শাখায় কিছুটা অভিমান লেগে আছে শুধু। হাঁটার গতিতে পাথর জমা হয় সন্দীপের। পৌষের সকালটাকে পরিচিত লাগে কিনা – ও ঠিক মনে করতে পারে না। তবে এত ভোরে ওঠার অভ্যাস যে ওর নেই, এ খবরটা ফুটপাতে ফাটলের মাঝে বেড়ে ওঠা একমুঠো পায়ে-দলা ঘাস ঠিকই জানে। ঘাসে চোখ পড়তেই ওর মনে পড়ে, জীবনানন্দ একদা লিখেছিলেন – প্রান্তরের অমরতা জেগে ওঠে একরাশ প্রাদেশিক ঘাসের উন্মেষে।

সন্দীপের পায়ে শহুরে ঘাসের অভিশাপ লেগে নেই, এমনই নিষ্পাপ ওর পা দুটো। এতদিন কোথায় ছিল সে? হঠাৎ আজ এই কাকহীন কাকডাকা ভোরে কোথা থেকে তার পায়ে অদ্ভুত পথ এসে জুড়েছে। অচেনা লাগছে যেন চেনা শহরের ভোর।

মোড় ঘুরতেই সবকিছু আরো অচেনা হয়ে ওঠে। যেন আদিগন্ত অদ্ভুতে জীবন সঁপে দেয়া কোনো পথিক মনে হয় নিজেকে ওর। পায়ের নিচে পিচঢালা পথটা আচমকা উধাও হয়ে যায়। সেখানে জন্ম নেয় ফেলে আসা সময়। একসময় সন্দীপ একটা গেঁয়ো বিলের মধ্যে নিজেকে একা আবিষ্কার করলে - মা মা - বলে চিৎকার করে ওঠে। ওর হাঁক শুনে পাশের খাল থেকে দুটো বক, শাদা পাখনায় কুয়াশা দাপিয়ে, কোথায় যেন অদৃশ্য হয়ে যায়। খালের নিস্তরঙ্গ পানিতে তরঙ্গ খেলা করে। দুলে ওঠে শাপলার হাসি, কলমির সজীবতা। এমন শীতের রস-পাড়া ভোরে এই বিলের মধ্যে সে একা কি করছে – এ প্রশ্নটা তার মন থেকে হঠাৎ মুছে যায়। বরং সময়টাকে একান্ত সহোদর মনে হয় তার। দ্রুত পা চালিয়ে গ্রামে ঢুকে একটা অনুচ্চ খড়ের ছাউনিতে প্রবেশ করলে, এবং ঘর থেকে মা মা গন্ধ বেরুলে, সন্দীপ নিজেকে খুঁজে পায়।

বাবা, আইছোস?
হ্যাঁ, মা, এইত আসছি।
এদ্দিন কই ছিলি বাপ আমার?
জানি না মা !
খাইতে বস বাজান। পান্তা দিমু, পিঁয়াজ-মরিচ?
দাও মা।

মা ঠিক তেমনই আছেন। রোগাটে। জীবনের পথ-হাঁটা ক্লান্ত পথিকের মত মায়ের কণ্ঠে ঝরে পড়ে রাজ্যের ক্লান্তি। মা কি আমার জন্যেই অপেক্ষা করছিল? এমনি শীতের ভোরে নিরুদ্দেশ সন্তানের জন্যে রুগ্ন মায়েরা কি ঠিক এভাবেই অসম্ভবের গায়ে মাথা খোঁড়ে? মাথার ভেতরটা যেন শূন্য হয়ে যাচ্ছে। আমি কি হারিয়ে গিয়েছিলাম কোথাও! এমন বিস্ময় জাগে কেন পরিচিত সকাল মুখে নিয়ে?

হারিয়ে গেলে আর কখনো ফেরা যায় কিনা – সন্দীপ চুপচাপ ভাবে। তারপর পান্তার সানকিতে পিয়াজ-মরিচের মহাসম্মিলন সফল করে বেশ অনেকটা তৃপ্তি পায়। অতঃপর ভেজা হাত মুছতে গিয়ে গামছা চাইবার সময় টের পায়- ওর কোনো ‘কাজলা-দিদি’ আছে কিনা সে তথ্যটাও মাথা থেকে বেমালুম হাপিস হয়ে গেছে। খুব দুঃখ হয় সন্দীপের। রুগ্ন শরীরে কুঁজো হয়ে হেঁটে এসে মা গামছা বাড়িয়ে দিলে নিজেকে দাগী আসামি মনে হয় ওর।

মা, তুমি কেমনডা আছো?
ভালা আছি বাজান। তুই এরোম শুকাই গেছুস ক্যান?
ভালো থাইকো মা। যাই।
তুই আবার কই যাইতাছো বাজান?
জানি না মা।
কয়ডা দিন থাক না আমার লগে?
তোমারে ভালো করার কড়ি জোগাড় কইরাই চইলা আসুম মা।

বাড়ির বাইরে পা বাড়াতেই সময়টা যেন কেমন করে ডাকাতি হয়ে গেল। নতুন বউয়ের মতো ঘোমটা দেওয়া রোদ্দুর আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল। আর ভূ-তলে মুখ ডোবাতেই আবারো সব ভজঘট পাকিয়ে গেল। আমি এ কোথায় এসে পড়লাম অচেনা আকাশের তলে। আগে কোনোদিন এ মফস্বলে এসেছি বলে তো মনে হয় না।

সাময়িক বিস্ময়বোধ কাটাতে সন্দীপের বেশ অনেকটা সময় লাগে। ছ্যাঁদলাধরা ইটের সলিং- এ দাঁড়িয়ে নিজেকে ওর পুরোনো বইয়ের মত ব্যবহৃত মনে হয়। তবু পরনে ধবধবে ধূতি, পাঞ্জাবি আর ন্যাড়া মাথার ইতিহাস ভেদ করতে পারে না সহজে। ওর কেউ আছে কিনা, কিছুতেই আর মনে পড়ে না।

‘এখানে কি করছেন, চলেন বাড়িতে চলেন, আব্বাজান আপনারে খুঁজছে’- সুরেলা কণ্ঠ কান ভেদ করে হঠাৎ হৃদয়বীণায় ঝংকার তুললে সন্দীপ সচেতন হয়ে ওঠে। মেয়েটির মুখটাকে বড়ো চেনা মনে হয় তার। ওকে দেখে মিলনাত্মক সিনেমার শেষ দৃশ্যের দর্শকের মত আচমকা মন ভালো হয়ে যায়। পিছু পিছু হাঁটে। বাড়িতে গিয়ে মেয়েটির বাবাকে চাচা না খালু - কি বলে ডাকবে, মনে মনে এ সমস্যার মীমাংসা করবার আগেই মেয়েটির বাবা বলে ওঠেন,

তুমি এতো বে-খেয়াল হলে চলবে কেন? মেয়েটা এবার অতটা ভালো করেনি পরীক্ষায়। পরের বার কিন্তু ভালো করা চাই-ই চাই।

আত্মপরিচয় খুঁজে পেয়ে সন্দীপের বেশ আনন্দবোধ হয়। ও বলে – জ্বি, আচ্ছা। তারপর সেই ময়ূরকণ্ঠী মেয়েটিকে খুঁজতে বাস্তবে চোখ ফেরায়।

কিন্তু মেয়েটা যে হঠাৎ কোথায় ডুব দিল পানকৌড়ির মত কে জানে। অনেক্ষণ হলো দেখছি না ওকে। কিছুক্ষণ না দেখতে পেলেই অস্থিরতায় আগুন লাগে। কোথা থেকে যেন হৃদয়পোড়া গন্ধ বের হয়।

এর কোনো নাম হয়ত নেই – কিংবা আছে; ভাবতে ভাবতেই ও চলে যায় বাড়ির পেছনের পুকুরটার কাছে। আর ঠিক তখনই পূর্ণিমা রাতে পরীর গল্প হয়ে মেয়েটি সামনে চলে আসে। চোখ চোখ পড়ে যায়। চোখ জ্বালা করে ওঠে। উচিত অনুচিত বিবেচনা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগেই মুখ ফসকে সন্দীপ ডেকে ওঠে,

শোনো?
জ্বি, হ্যাঁ, কিছু বলবেন।
তোমার নামটা...
আবারো ভুলে গেছেন!

সন্দীপ লজ্জা ঢাকতে মাথার পেছনে অদৃশ্যলোক হাতড়ায়। কতদিন ধরে এদের সাথে থাকা হচ্ছে ভাবার চেষ্টা করে। কীভাবে এসেছিল এখানে, কার কী নাম মনে করতে করতে তাকিয়ে দেখে শান বাঁধানো পুকুরপাড়টায় জলের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ বসে আছে মেয়েটা। অভিমান? কি জানি, অভিমান করবার মতো সম্পর্ক কি হয়েছে তাদের?

অভিমানের পারদে উত্তাপ দিতে নেই – কথাটা মনে হতেই ও দেখতে পায় পশ্চিমের উঁচু তালগাছটা কথাশূন্য একটা পৃথিবী গেঁথে রেখেছে পুকুরের ভেতর। অনুরণনহীন জলে কী খোঁজে মেয়েটির মায়াবী বিহ্বল দুটি চোখ – সে রহস্যের কোনো কিনারা করতে পারে না ও। সে রাতে নিজের স্মৃতিশক্তির উপর একসমুদ্র অভিমান নিয়ে সন্দীপ চোখ বোজে।

তারপর যেন কি হয়ে যায়।

মাতৃহীন শূন্য বসতভিটা এবং আলো ঝলমলে বিয়েবাড়ী - এমন দুটি অসংলগ্ন স্বপ্নদৃশ্যের মিথস্ক্রিয়া শেষে, অপরিচিত শহুরে কংক্রিটের বাক্সে ঘুম ভাঙ্গতেই, সন্দীপের আজ ভীষণ অবাক লাগে। মুখময় খোঁচা খোঁচা দাঁড়ির ফাঁকে কতটা সময় যে হারিয়ে গেছে তার হিসাব কিছুতেই মেলাতে পারে না সে।, একটা কালো শাল – যেটা ওর মা ব্যবহার করত বহুকাল আগে – গায়ে পেঁচিয়ে বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়। পৌষের কুয়াশা-রঙা ভোর মাড়িয়ে কিছুদূর হাঁটতেই নিজেকে এ শহরে আগন্তক মনে হয় ওর। দলছুট কোনো অতিথি পাখির মতো ভীষণ একা। উদ্দেশ্যহীন।

একটা ছন্নছাড়া আকাশ বুকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সন্দীপের কেবলই মনে হয়, কোনো এক পুকুরপাড়ের কথা। নিস্তব্ধ জলের পাশে থমথমে দুপুর মুখে নিয়ে বসে থাকা কোনো ময়ূরকণ্ঠী মায়াবী-চোখ নারীর কথা। আর তারপর গাঁয়ের মাতৃহীন ভিটেয় একটা সান্ধ্য-প্রদীপ জ্বালাবার তীব্র ব্যাকুলতা জাগতেই ও ফুটপাত ধরে হেঁটে হেঁটে রাজপথের মোড়ে এসে, মুমূর্ষু পৌষের দুধ-রঙ কুয়াশাকে বিভ্রান্ত করে দিয়ে, হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।



উৎসর্গঃ ব্লগার মাহমুদ০০৭, প্রবাসী পাঠক, তুষারকাব্য, ক্যপ্রিসিয়াস ও পার্থ তালুকদার-কে। যে পঞ্চরত্নের জন্য অনলাইন-সময়টুকু আনন্দময় হয়েছে।

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ৯:২৩
৫০টি মন্তব্য ৫০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×