আমাদের এই পৃথিবীতে ভালবাসতে হয় গোপনে অথচ যুদ্ধ, হত্যাযজ্ঞ, সন্ত্রাস চলে প্রকাশ্য দিবালোকে।
কেন? ভালবাসার মত পবিত্র বিষয় কেন গোপনে থাকবে?
প্রেম-ভালবাসা নিয়ে আমরা অনেক কথা বলি, বই পড়ি, গল্প লিখি- সবই ঐ বুয়েট টেস্টের মানদন্ডের সীমার মধ্যে রেখে। বিজ্ঞান বলে- পাগলের মষ্তিষ্কই সবচেয়ে দ্রুত কাজ করে, কেননা সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়ার মধ্যে কোন 'অবস্ট্যাকল' নেই, যা মনে আসে সে তাই করে। ছোট্ট শিশু যত বড় হতে থাকে তার মধ্যে থেকে ইনোসেন্স তত কমতে থাকে আর কপটতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। বড় হয়ে আমরা সবাই অভিনয়ই করে যাই, মনের সাথে কপটতা করে যাই সারাজীবন।
পৃথিবীর সেরা প্রেমের উপন্যাসে ঠাঁই পেল যে 'আন্না কারেনিনা' আর 'মাদাম বোভারি'- সেগুলো ঐ মানদন্ডের বাহিরে এসেই, যদ্বরুণ দীর্ঘকাল 'ব্যানড' করে রাখে এদের ব্রান্ডের সমাজ। আর আমরা শুধু সে গল্প পড়ে আফসোসই করবো আর মুখে বলেই যাব- 'এমন অদ্ভুত প্রেমের মিলন হোক', কিন্তু নিজের জীবনে বাস্তবে এলে, আরও শতবর্ষ পরে যখন পৃথিবী আরও আধুনিক হবে তখনও তাদের গালি দিয়ে যাব- এ প্রেমিক যুগলকে সমাজ থেকে বহিষ্কার করা হোক।
শেক্সপীয়র এর নাটক আর রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসকে অলস সময় কাটানোর বিনোদনের মাধ্যম হিসেবেই নিয়ে আসছি, ভেবে দেখিনি।
প্রায়ই 'হুমায়ূন আহমেদ এর বাণীসমগ্র' চোখে পড়ে কিন্তু সেখানে তার এ বাণী নেই যেঃ 'নর-নারীর মিলন ও সন্তান উৎপাদন অত্যন্ত পবিত্র জিনিস'। পরকীয়া শব্দে আমরা একে অন্যকে গালি দিতে পারব কিন্তু ৩০ বছর বয়সে এসেও বন্ধুর বউয়ের প্রেমে পড়ার কথা কখনও ব্যক্তিগত ডায়েরিতেও লিখে যেতে পারব না। আর সেখানে বালক বয়সের সাধারণ-স্বাভাবিক প্রেম......সে তো বয়সন্ধিকালের ভ্রম!
প্রেমে পড়লে আমি সবাইকে মন-মরা হয়ে থাকতে দেখেছি, বলতে না পারার কষ্টে কুঁকড়ে যেতে দেখেছি, উভয় পক্ষের সম্মতির পরেও সমাজের চাপে ভুগতে দেখেছি। পরিবারের পছন্দে বিয়ে করে সন্তান উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল রাখা এখানে সামাজিকতা, ভালবাসা এখানে অপরাধ। এবং এ একই অপরাধের দুশ্চিন্তা আমাদের পরিবারের কর্তা-কর্ত্রী দেরও পার করে আসতে হয়েছিল, তবুও সামাজিকতার পরিবর্তন হয় নাই।
১. ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭ ০