somewhere in... blog

আমাদের নির্বাচনে বহির্বিশ্বের তিন এর প্রভাব

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নির্বাচনে বাংলাদেশ বরাবরই ৩টি দেশকে মূল্য দিয়ে থাকে- ভারত, চীন আর যুক্তরাষ্ট্র। সেজন্যে প্রত্যেক দলেরই এই ৩ দেশের সাথে লবিং থাকে এবং নির্বাচনকালীন সময়ে কুটনৈতিক তৎপরতায় এদের সাপোর্ট পাওয়ার জোর চেষ্টা চালায়। কিন্তু, এদের মনোভাব কেমন তা কি আমরা জানি?

চীন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে সমর্থন করেনি। ১৯৭৫ সালের পর করেছে। সে জন্য বিএনপিপন্থীদের ধারণা হয় চীন বিএনপির অকৃত্রিম বন্ধু। আসলে চীন কখনও কারও অকৃত্রিম বন্ধু হয়নি। বন্ধুত্বের দাম এক সময় দিত সোভিয়েত ইউনিয়ন। পুঁজিবাদী চীন সব রাষ্ট্রেই সমান মনোযোগ দেবে। চীন সুপার পাওয়ার। হ্যা, বাংলাদেশের কৌশলগত মূল্য আছে তার কাছে, তবে চীন উৎসাহী বিনিয়োগে। :-*

ক্ষমতায় যে-ই থাকুক তাতে ভারতের কিছু যায় আসত না শুধু একটাই বিষয়- তার নিরাপত্তা ও বাণিজ্যিক স্বার্থ অক্ষুন্ন ও অটুট থাকলেই হত। সব দল ভারতের বন্ধু, সব দলই ভারতের শত্রু। X( কিন্তু, ভারত আওয়ামী লীগকে সাপোর্ট করে তার নিজের স্বার্থেই। (পরে বলছি সে কথা)! কিন্তু, এবারে সে পরিস্থিতি লীগের অতটা অনুকূলে নেই। কেননা, ভারতে আওয়ামী লীগ প্রীতি দেখানো কংগ্রেসের এখন নড়বড়ে অবস্থা।

যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে বেশ কিছু বলার আছে। গ্রামের ২ বাড়ি কিংবা ২ ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া না বাঁধলে যেমন গাঁয়ের মোড়লের কাছে যাওয়া পড়ে না, মোড়লেও মোড়লগিরি থাকে না, তেমনি যেকোন ২ দেশের মধ্যে বিবাদ না থাকলে এই বিশ্ব মোড়ল দেশটারও মাতব্বরি থাকে না। তাই, মৌলবাদী নিয়ে হাজারবার অভিযোগ করা এই দেশটিই বিশ্বের মৌলবাদীদের পালছে-পুষছে (বড় প্রমান- তালেবান ও পাকিস্তান জামাতে ইসলাম), যাতে এই মৌলবাদীদের দিয়ে কোন দেশের বারোটা বাজাতে পারে এবং মৌলবাদী নির্মূলের অযুহাতে সে দেশে যুদ্ধ করতে পারে।
আমেরিকা বহুদিন ধরে চেষ্টায় আছে ভারত-পাকিস্তান এর মধ্যে যুদ্ধ বাঁধানোর। অন্যতম কারণ, আমেরিকাকে টেক্কা দিয়ে দ্রুত গতিতে বিশ্ববাজার দখল করতে যাওয়া ভারতকে কব্জায় আনা। যুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষ নিবে আমেরিকা, আর ভারতের? চীনের সাথে ভারতের সম্পর্ক ভাল নয়, তাই সে নাক গলাবে না। রাশিয়ার তো পেটই চলে অস্ত্র বেঁচে, যুদ্ধ-টুদ্ধ বাঁধলেই তো তার লাভ। (তাইতো, বিশ্বের বেশিরভাগ যুদ্ধে কোন না কোনভাবে রাশিয়ার হাত থাকে।) পাকিস্তানের থেকে আগ্নেয়াস্ত্রে ভারত এগিয়ে থাকলেও এসব কারণে যুদ্ধে সে হেরে যাবে। এবং, যুদ্ধও হবে ক্ষণস্থায়ী- কেননা যুদ্ধের সময়ে ১০০ কোটি জনসংখ্যার খাদ্যের চাপে দুর্ভিক্ষে পড়বে সে, মানে ভারতের অর্থনীতি ধ্বংস।

পাকিস্তানকে সাহায্যের জন্যেই আমেরিকা এত বছর ধরে বাংলাদেশের কাছে গভীর সমুদ্র বন্দর চেয়ে আসছে। জামাতের কারণে আমেরিকার সাপোর্টটা বরাবর বিএনপি'র পক্ষেই থাকে। গতবারে বিএনপি সরকারের সময় আমেরিকা অনেক আশায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত সরকার সমুদ্র বন্দর করেনি। আমেরিকার সাপোর্টে ক্ষমতায় আসার জন্য লীগ তখন নির্বাচনী ইশতেহারেই গভীর সমুদ্র বন্দরের কথা বলে বসল। এ খবরে আমেরিকার তখন চক্ষু চড়কগাছ। প্রথমবারের মত আমেরিকা লীগকে সাপোর্ট করে ক্ষমতায় আনল। সবিশেষে লীগ সরকারও ৫ বছরে মূলা ঝুলায় রাখল। এ কারণেই ভারত নিজের স্বার্থেই আওয়ামী লীগকে সাপোর্ট করে। কিন্তু, এবারের নির্বাচনে লীগ পড়ল দোটানায়। ভারত নাকি আমেরিকা? শেষমেশ ইশতেহারে গভীর সমুদ্র বন্দর করার ঘোষণাও দিল, সেই সাথে এও লিখে দিল- 'বাংলাদেশের মাটিকে ভারতের বিপক্ষে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না'।
তবে, আমেরিকা মনে হয় এবার লীগের সাথে থেকে দ্বিতীয়বার রিস্ক নেবে না। কেননা, এ করে করে আমেরিকার অনেক সময় নষ্ট হয়ে গেছে, ওদিকে ভারত এখন বিশ্ব অর্থনীতিতে ৩ নম্বরে চলে এসেছে।

ভয়ানক হলেও আরও একটি সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেয়া যায় না, তা হলো- ইরাক, সিরিয়ার মত আমেরিকার বাংলাদেশে সৈন্য প্রেরণ। /:)
তারানকোর রিপোর্টে সেরকম আভাস কিন্তু আছে। তারানকো জাতিসংঘকে বাংলাদেশের শান্তি ফিরিয়ে আনতে 'প্রয়োজনে জাতিসংঘের সামরিক শক্তি প্রয়োগ' করতে বলেছেন। আর জাতিসংঘ মানেই তো আমেরিকা! X(
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রিয় কন্যা আমার- ৭৫

লিখেছেন রাজীব নুর, ১৬ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:৩৩



প্রিয় কন্যা আমার-
আজ শুক্রবার। তোমার স্কুল নেই। অথচ আজ তুমি ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে বসে আছো। বলছো, মেকাপ বক্স দাও। মাকে মেকাপ করে দিবো। যেদিন তোমার স্কুল থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এক প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাকে ইসলামের হৃদয়ছোঁয়া আহ্বান

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২০

এক প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাকে ইসলামের হৃদয়ছোঁয়া আহ্বান

ক্যালিগ্রাফি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

প্রিয় যামিনী সুধা,

আপনার নাম আমাদের হৃদয়ে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার এক অমলিন আলো জ্বালায়। একজন প্রবীণ নাগরিক হিসেবে আপনি শুধু জীবনের অভিজ্ঞতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তদ্বির বানিজ্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও এনসিপির নেতা

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১৬ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭

জনপ্রিয় অনলাইন এক্টিভিস্ট জুলকারনাই সায়েরের এক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে গতকাল যেখানে রেলভবনে, রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) এর একান্ত সচিবের কক্ষে তদ্বির বানিজ্যে দেখা গেছে এনসিপির সংগঠক (হবিগঞ্জ) নাহিদ উদ্দিন তারেক ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

'লেখা আছে অশ্রুজলে’......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৬ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৩৭

আমার গুম নির্যাতনের উপর লেখা 'গুম এবং অতঃপর' বইয়ের পাঠপ্রতিক্রিয়া লিখেছেন এসোসিয়েট প্রফেসর ডক্টর মো: আদনান আরিফ সালিম( Md. Adnan Arif Salim) । লিংক পাঠিয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক Mesbah Shemul লিংক-... ...বাকিটুকু পড়ুন

টরন্টোর চিঠি - "অতএব জাগ, জাগ গো ভগিনী!"

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই মে, ২০২৫ ভোর ৬:৩৭


গত বছর গ্রীষ্মের শুরুতে টরন্টোয় বসবাসরত আমার জন্মস্থান জেলা-শহর থেকে আগত অভিবাসীদের একটি পিকনিকে গিয়েছিলাম। ৫০–৬০ জন নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরের অংশগ্রহণে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সকলে ছিলেন নারী। তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×