somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি সিনেমা এবং বেনগাজিতে আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের হত্যালীলা

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ৮:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আদিল মাহমুদ মুসলমান সমাজে প্রচলিত ইসলাম কেন্দ্রিক গোঁড়ামি জাতীয় যেসব সমস্যা আলোচিত সমালোচিত হয় সেসব কিছুর মূল কারন আসলে এক যায়গাতেই ঠেকে। সেটা হল কোরান হাদীসের বিধিবিধান/মূল্যবোধ মেনে জীবনের প্রতি পদক্ষেপ চালাতে হবে এই আজগুবি ধারনা মনেপ্রানে বিশ্বাস এবং প্রচার করে যাওয়া। বলাই বাহুল্য বাস্তবে সেটা কোনদিন সম্ভব না, কোরান হাদীসের বহু বিধান কায়েম করার কথা ৯০% মুসলমানই চিন্তা করবে না। মুশকিল হল এটা সরাসরি স্বীকার করা ইসলামী মূল বিশ্বাসের পরিপন্থী। এই সমস্যা মুসলমান সমাজে জন্ম দিয়েছে এক চিরন্তন কনফিউশনের যা থেকে সহজ পরিত্রান নেই। যারা মূল মানতে চায় তাদের নাম হয়েছে মৌলবাদী। অধিকাংশই যদিও চায় বাস্তবতার সাথে মানিয়ে চলতে, কিন্ত তাদের ভেতরেও কোরান হাদীস নবী রসূলের সরাসরি বিরোধীতা করার বিপক্ষে এত ভয়াবহ সব পরলৌকিক শাস্তির ভীতি জন্ম থেকে ঢোকানো হয়ে যে তারাও সরাসরি বিরোধীতা করতে পারে না। যেমন আমিনী হুজুর মহিলাদের সমান উত্তরাধিকার প্রস্তাবের প্রতিবাদে রাস্তায় তান্ডব করলে প্রগতিশীল মুসলমান সকলেই তাকে মৌলবাদী কাঠমোল্লা এসব বলে গাল দেবে, কিন্তু আমিনী যে কোরানের ধারা অনুযায়ীই কথা বলে সেই কোরানের সীমাবদ্ধতা আছে সেটা আবার সরাসরি স্বীকার করবে না। তখন নানান অজুহাত দাঁড় করাবে, আমিনী ইসলাম জানে না, কোরান বোঝা এত সহজ নয়, অনুবাদ বিকৃত হয়েছে হেনতেন। ইসলামের সাথে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ইউনিক পার্থক্য এখানে রয়ে গেছে। এটা আসলে পরিষ্কার ভাষায় বলতে গেলে এক ধরনের শিশুসূলভ মানসিকতা।

মুসলমান সমাজ মুখে যতই জোর দাবী করুক আর আত্মপ্রবোধ দেওয়া স্বান্তনা বাক্য সাজিয়ে মন বুঝ দিক দূর্বলতাটা আসলে ঠিকই বোঝে। বোঝে বলেই নিজেদের সব সময় এত থ্রেটেন্ড মনে করে। এই থ্রেট মোকাবেলার মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে তারা নিজেদের ইউনিক আইডেন্টিটি কেন্দ্রিক জাতীয়তাবোধে গুরুত্ব দেয় অত্যাধিক। পশ্চীমের ওপর মোল্লা মুনশীদের রাগও এ কারনে বেশী, একে তারা কাফের তার ওপর তাদের দেখানো আধুনিক সভ্যতার বর্তমান ধারায় ইসলামী সমাজে প্রচলিত অনেক বিধিবিধান মুসলমানরাই ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে। আরো কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মত শ্রেষ্ঠ জীবন বিধানের জন্মভূমি ফেলে দলে দলে মুসলমানরা কুফরি ভিত্তিক সমাজে সপরিবারে পাড়ি জমাচ্ছে। কাজেই ইসলাম রক্ষার উপায় হল নিজেদের স্বকীয় জাতি হিসেবে প্রকাশ করা যেখানে কোনরকম বিরোধীতার সুর না পাওয়া যায়। এই জাতীয়তার বন্ধন হল নামাজ রোজা হজ্জ্ব যাকাত জাতীয় রিচ্যূয়ালগুলি ঢাকঢোল পিটিয়ে পালন করা। যারা এসবে সেভাবে অংশ নিতে পারে না তারা সামাজিকভাবে সব মুসলমান দেশে হেয় না হলেও পেছনে থাকে। আমাদের দেশেই রোজার মাসে নানান ক্যারিক্যাচার দেখা যায়। ঘুষ খেতে দিতে আপত্তি নেই, কিন্তু অফিস আদালতে কে রোজা রাখছে না তা বড় সমালোচনার বিষয় হয়। আমি এমনও ঘটনা জানি যে অসূস্থতার কারনে রোজা না রাখতে পেরেও কেউ সারাদিন রোজা রাখার ভান করেছে, ওষূধ খেয়েছে গোপনে।

পরিবর্তনের ছোঁইয়া অবশ্যই বিবর্তনের নিয়মে আসছে, তবে গতি অনেক ধীর। তবে পরিবর্তন ধীর এবং ফলপ্রসূ হচ্ছে না সেই মূল সমস্যার কারনে। সেটা সরাসরি স্বীকার না করলে মুসলমান সমাজের অবস্থা থাকবে চিরকালই অন্যদের থেকে পেছনে। ইসলামের সমালোচনামূলক নানান অভিযোগ খন্ডনে আজকালকার ইসলাম ডিফেন্ডারগন আধুনিক কালের জাকির নায়েক জাতীয় ধূর্ত স্কলারদের ব্যাখ্যা হাজির করেন, প্রাচীন কালের বিখ্যাত তাফসিরকারকদের ব্যাখ্যা চেপে যান কারন সেগুলি অভিযোগ সমর্থনই করে। সরাসরি চেপে ধরলে তখন কোনমতে বলে দেন যে অমূকে ইসলাম জানে না, বড় আলেম হলেও তার সব কথাই ঠিক না ইত্যাদী। যেটা ওনারা বুঝতে পারেন না তা হল আজ যে জাকির নায়েক সেভিয়ার তার হাস্যকর তথ্য যুক্তি সম্পর্কেও ১০০ বছর পরের ইসলাম ডিফেন্ডারগন এভাবেই বলবে যে জাকির নায়েক ইসলাম জানত না, তার অনেক কথাই ব্যাক্তিগত মতামত, ইসলামের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। মূল সমস্যা সরাসরি স্বীকার না করলে এই চক্র হতে সহজ মুক্তি নেই।
৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ড. ইউনূস যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন: সেভেন সিস্টার্স দখল করতে বলেননি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০২ রা মে, ২০২৫ রাত ৮:৩২


পাকিস্তান-ভারতের এক্স মিলিটারি কর্মকর্তারা জোশে অনেক কথাই বলে থাকেন তাদের জনগণকে আলী বুঝ দেয়ার জন্য। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানে হামলার বিষয়ে ভারতের সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইস্টার আইল্যান্ড রহস্যময় মোয়াই

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৫ রাত ৮:৪৩



১৭শ শতাব্দীতে ইউরোপীয় নাবিকদের মাঝে একটা মিথ প্রচলিত ছিল। মিথটা হচ্ছে দক্ষিণ গোলার্ধে ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে বিশাল অঞ্চল জুড়ে একটা মহাদেশ রয়েছে। এটাকে তারা টেরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এনসিপিকে আমাদের দেশের তরুণ-যুবা'রা ক্ষমতায় দেখতে চায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৩ রা মে, ২০২৫ রাত ১২:৪৫

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে পাড়া-মহল্লায় জনতার আদালত গঠনের ডাক দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি তথা এনসিপি। দেশের বৃহত্তম ইসলামী দল 'ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ' তথা চর মোনাইয়ের পীর সাহেবের দল এনসিপিকে আগে থেকেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাতৃ ভাণ্ডার

লিখেছেন ঠাকুরমাহমুদ, ০৩ রা মে, ২০২৫ রাত ৩:২৬



আমাদের দেশে মিষ্টি পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া বিরল ব্যাপার। ঢাকা চট্টগ্রাম রুটে যারা যাতায়াত করেন মাতৃ ভাণ্ডারের সাথে পরিচিত নন এমন মানুষও মনে হয় খুব বেশি নেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

এনসিপি জামায়াতের শাখা, এই ভুল ধারণা ত্যাগ করতে হবে

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৩ রা মে, ২০২৫ সকাল ১০:৪৪

প্রিয় রাজীব ভাই,
আপনি আমার আগের পোস্টে কমেন্ট করেছেন যে, এনসিপি জামায়াতের শাখা। আপনার এনালাইসিস ভুল! ওরা জামায়াতের শাখা নয়। এনসিপি-কে বুঝতে হলে, আপনাকে জামায়াতকে জানতে হবে। আমি একটু বিস্তারিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×