এর আগে বৌদ্ধ সন্যাসীদের ওপর চালানো প্রায় একই ধরনের একটি পরীক্ষায়ও ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গিয়েছিলো। কিন্তু দিনের প্রায় বেশিরভাগটাই মেডিটেশনে আত্মনিমগ্ন থাকা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তুলনায় এবারের এ গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা ছিলেন বোস্টন এলাকারই বিভিন্ন কর্মজীবী সাধারণ মানুষ। আর এতে যে জিনিসটি প্রমাণিত হয় তা হলো, দিনের মাত্র কিছুটা সময় নিয়মিত মেডিটেশন করলেই এ ফল পাওয়া যায়। শুধু মনোযোগ বা স্মৃতিশক্তি নয় সারা লাজারের গবেষণার আরেকটি চমকপ্রদ আবিষ্কার হলো বয়স
বাড়ার সাথে সাথে কর্টেক্সের যে অংশ পাতলা হতে থাকে মেডিটেশন সেটাকেও রোধ করতে পারে। নিয়মিত মেডিটেশন করলে মনোযোগ এবং আরো বেশি সচেতনতা নিয়ে কাজ করা যায়। কেউ কেউ বলেন, তাহলে দুপুরের খাওয়ার পর কিছুটা ঘুমিয়ে নিলেও কি একইভাবে চাঙ্গা হওয়া যায় না? না, বলেছেন ইউনিভার্সিটি অব কেন্টাকির বায়োলজির প্রফেসর ব্রুস ওহারা। তিনি একদল কলেজ ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে এক গবেষণা চালান, যাতে কিছু সময়ের জন্যে তাদের কিছু সংখ্যককে মেডিটেশন, কিছু সংখ্যককে ঘুম এবং বাকিদেরকে টেলিভিশন দেখানো হয়। এরপর একটা নির্দিষ্ট স্ক্রীনে বাতি জ্বলে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বলা হয় একটি নির্দিষ্ট বোতাম টিপতে। এ পরীক্ষায় দেখা গেল যারা মেডিটেশন করেছে তারা অন্যদের চেয়ে দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে তা করতে পারলো। যারা ঘুমিয়ে ছিলো তাদের তৎপরতা ছিলো বেশ ধীর। অর্থাৎ মেডিটেশনের ফলে মস্তিষ্কের সমন্বয় এবং তৎপরতা বাড়ে। মেডিটেশনের এ ইতিবাচক প্রভাবের কারণেই ডয়েচ ব্যাংক, গুগল বা হাগস্ এয়ারক্রাফটের মতো বড় বড় ব্যবসায়িক কর্পোরেশনগুলো তাদেরকর্মীদের জন্যে মেডিটেশন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে। তারা দেখছে এতে করে তাদের কর্মীদের মেধা শাণিত হবার পাশাপাশি উৎপাদন ক্ষমতাও বেড়েছে। তাদের অসুস্থতার হার কমেছে, কমেছে কাজে অনুপস্থিতির হারও।
[টাইম, ২৪ জানুয়ারি ২০০৬ অবলম্বনে]
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০০৮ সকাল ১১:৩৬