০১।
এবার বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার জন্য যে স্টেডিয়ামগুলো তৈরি করা হয়েছে, তার পেছনে খরচ হয়েছে ব্রাজিলের প্রায় তিনশো কোটি ইউরো৷ এতে কিন্তু ব্রাজিলিয়ানরা মোটেও খুশি নন৷ এই ছবিঘরে স্টেডিয়ামের কিছু নমুনা দেখুন৷
এটা পুরনো মারাকানা – ১৯৭৩
এই স্টেডিয়ামটি দেখলেই ব্রাজিলিয়ানদের পুরনো মারাকনার কথা মনে পড়ে যায়, ৯০-এর দশকে যা কিনা সব সামাজিক কর্মকাণ্ডের মিলনস্থল ছিল৷ ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজনের জন্য এটা নতুন করে নির্মাণ করা হয়৷ এতে খরচ হয় ৪০০ মিলিয়ন, যা অনেক ব্রাজিলিয়ানের কাছেই জনগণের সম্পদ নষ্ট করার প্রতীক৷
০২।
সাঁও পাওলো – অ্যারেনা দে সাঁও পাওলো ‘ইটাকুয়েরাও’
এটা ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় ফুটবল স্টেডিয়াম, যেখানে ২০তম বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার উদ্বোধন হয়েছে ১২ই জুন৷ ইটাকুয়েরাও নামটি কিন্তু শ্রমিকদের বসবাস এলাকার নামেই নামকরণ হয়েছে৷ স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজের সময় দু-দু’টি দুর্ঘটায় তিনজন শ্রমিক মারা গেছেন৷ স্টেডিয়ামটি নতুন করে নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ৩১০ মিলিয়ন ইউরো৷ এখানে খেলা দেখতে পারেন মোট ৬৫,৮০৭ জন ফুটবলপ্রেমী৷
০৩।
সালভাদোর দা বাইয়া – অ্যারেনা ফন্টে নোভা
১৩ই জুনের প্রথম শীর্ষ খেলাটি হয়েছে এই স্টেডিয়ামে৷ বিশ্বকাপ ফুটবলে গতবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেন এবং রানার্স আপ হল্যান্ডের মধ্যে ৷ সোমবারে এখানেই খেলা হবে জার্মানির সাথে পর্তুগালের৷ বিশ্বকাপের পরেও এই স্টেডিয়ামে খেলা হবে প্রথম বিভাগের একটি স্থানীয় দলের, যারা আন্তর্জাতিক খেলাতেও অংশগ্রহণ করে৷ স্টেডিয়ামটি তৈরি করতে খরচ পড়েছে ২৩০ মিলিয়ন ইউরো৷ স্টেডিয়ামটিতে মোট ৪৮,৭৪৭ জন ফুটবলভক্তের জন্য জায়গা রয়েছে৷
০৪।
ফর্টালেজা – এস্টাডিও কাস্তেলাঁও
২,৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার এই মেট্রোপলিটান শহরে দুটো ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব রয়েছে৷ এই ক্লাবগুলো সেরকম সফল না হলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওদের খেলা দেখতে বিশাল সংখ্যক ভক্তের সমাগম হয়৷ এবারের বিশ্বকাপে ঘানার বিরুদ্ধে জার্মানির গ্রুপ পর্যায়ের দ্বিতীয় খেলাটি হবে এখানে৷ স্টেডিয়ামটির নতুন করে নির্মাণ কাজ করতে মোট খরচ পড়েছে ১৮০ মিলিয়ন ইউরো৷ এর ধারণ ক্ষমতা ৬৪,৮৪৬৷
০৫।
কুইয়াবা – অ্যারেনা পান্টানাল
বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রতিযোগিতা যেসব শহরে হবে, সেগুলোর মধ্যে কুইয়াবাই হচ্ছে সবচেয়ে ছোট, যার জনসংখ্যা মাত্র পাঁচ লাখ৷ এটা জলাভূমি পান্টাল এলাকার ঠিক মাঝখানে অবস্থিত আর এ কারণেই এই নামকরণ৷ এখানে সেরকম কোনো শীর্ষস্থানীয় ক্লাব নেই৷ তবে ২০১৬ সালে রিও ডি জানেরোতে যে অলিম্পিকের আসর বসবে, তার কিছু অনুশীলন অনুষ্ঠিত হবে এখানে৷ স্টেডিয়ামটির জন্য খরচ পড়েছে মোট ১৯০ মিলিয়ন ইউরো আর এর ধারণ ক্ষমতা ৪২,৯৬৮৷
০৬।
রেসিফে – অ্যারেনা প্যারনামবুকো
এই স্টেডিয়ামের নামকরণ এ রাজ্যের নামের সাথে মিল রেখে করা হয়েছে৷ শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্টেডিয়াম, যার নির্মাণ খরচ আনুমানিক ২৫০ মিলিয়ন ইউরো৷ এখানে মোট ৪২,৮৪৯ জন ফুটবলপ্রেমী এক সাথে খেলা উপভোগ করতে পারেন৷
০৭।
মানাউস – অ্যারেনা দা আমাজনিয়া
বিশ্বকাপের শুরুতেই ইংল্যান্ড ও ইটালি – এই দুটি শক্তিশালী দলের মধ্যে খেলা হবে এই স্টেডিয়ামে৷ এখানে অনেকদিন হয়ত আর কোনো খেলাই হবে না, কারণ মানাউস-এর কোনো ক্লাবই জাতীয় লীগে খেলে না৷ ক্লাবটির নির্মাণ কাজের সময় চারজন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হয়েছিল৷ স্টেডিয়ামটির ধারণ ক্ষমতা ৪২,৩৭৪৷
০৮।
ব্রাজিলিয়া – এস্টাডিও ন্যাশনাল
এই স্টেডিয়ামটি বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য সবচেয়ে ব্যায়বহুল ও মর্যাদাপূর্ণ স্টেডিয়াম, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়৷ তাছাড়া এখানে তেমন কোনো ফুটবল ক্লাবও নেই৷ ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাজিলিয়ার এই স্টেডিয়ামটি শহর থেকে বেশ দূরে অবস্থিত, যার নির্মাণ কাজে খরচ পড়েছে মোট ৬৩০ মিলিয়ন ইউরো৷ এখানে মোট ৬৮,০০৯ জন মানুষ এক সাথে খেলা দেখতে পারেন৷
০৯।
রিও ডি জানেরো – এস্টাডিও ডো মারাকানা
সাবেক জাতীয় মনুমেন্টটি এখন অনেক ভক্তের চোখে অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়৷ ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলা হয়েছিল এখানে, যে খেলায় দর্শকের সংখ্যা ছিল ১৭০,০০০৷ তবে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে হয়ত এর অর্ধেক দর্শকও হবে না৷ তা সত্ত্বেও এটাই বিশ্বকাপ ফুটবলের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম, যার নির্মাণ কাজে খরচ হয়েছে ৪,০০০ মিলিয়ন ইউরো৷ এখানে ৭৩,৫৩১ দর্শকের এক সঙ্গে খেলা উপভোগ করার জন্য জায়গা রয়েছে৷
......................................................
সুত্র: এখানে ক্লিক করুন