কি বিষয়ের নাম পড়ে কি একটু মুচকি হাসছেন? আমারো আপনার মতোই অনুভূতি হয়েছিলো। হয়েছিলো কৌতুহল। তাই শুধু পড়লাম না আপনাদের জন্য অপরিপক্ক হাতে অনুবাদ ও করতে হলো। পূর্বের ন্যায় লিঙ্ক দিলাম না। অনুবাদের দুর্বলতা দেখে আপনাদের হাসাহাসির সুযোগ দিতে চাই না।
এটা গোপনীয় নয় যে আমরা ব্যর্থতাকে ভয় করি। কিন্তু ব্যর্থতা কি সত্যি কোনো ভালো কিছু?
আলবার্ট আইনেস্টাইন বলেছিলেন, 'ব্যর্থতা হলো সাফল্যের প্রক্রিয়া"।
ভয় এবং ব্যর্থতাকে ধাওয়া করতে পারলে আমাদের জীবনে এবং ব্যবসায় উল্লেখ্যযোগ্য পরিবর্তন আনা সম্ভব। এখানে কিছু বিষয় উল্লেখ্য করা হলো কেনো প্রত্যেক ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কিছু ব্যর্থতা প্রয়োজন- উন্নতি এবং সাফল্যের ধারায় প্রবাহমান হওয়ার জন্য।
১) ব্যর্থতা অসাধারণ পরিবর্তন আনতে পারেঃ ব্যর্থতা দু ধরনের বীজের কাজ করতে পারেঃ হতাশার পথ তৈরি করতে পারে অথবা উন্নতির স্প্রিং বোর্ড এর কাজ করতে পারে। সম্পূর্নভাবে যে মানুষটি ব্যর্থ হয়েছে তার মধ্যে প্রথমিকভাবে কি জন্ম দিবে?
এ সময় বঞ্চিত হতে পারেন এবং পরিকল্পনা কাজ না করলে আপনার অনুপ্রেরণা ভেঙ্গে পরতে পারে। এসব বাদ দিয়ে আপনার ব্যর্থতাকে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করুন। আপনি নতুন করে পরিকল্পনা সাজাতে পারেন, চিন্তার পরিবর্তন করে নতুন করে শুরু করতে পারেন যা দিকনির্দেশনার জন্য প্রয়োজন।
যেকোনো কিছুতে একটা ঝাঁকুনির জন্য ব্যর্থতা প্রয়োজন। নয়তো আমরা কেবল গা ঢেলান দিয়ে যাবো কাঙ্খিত উচ্চতায় কখনো উঠতে পারবোনা।
২) ব্যর্থতা আমাদের চামড়াকে শক্ত করেঃ ব্যর্থতার প্রতিক্রিয়া হচ্ছে গায়ের চামড়াকে গন্ডারের চামড়ার মতো মোটা করে। এটা আমাদের শরীরে একধরণের আবরন তৈরি করে প্রায়সই যখন আমরা বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছি কিছু সময়ের জন্য অথবা দুম করে আঘাত পাচ্ছি। নরম এবং অপ্রতিরোধক অবস্থায় আমরা সহজেই আঘাত পাই। ব্যর্থতা চামড়াকে মোটা করে যাতে বড় খেলায় নির্ভীক চিত্তে মাঠে নামা যায়।
৩) ব্যর্থতা ইগোকে নিয়ন্ত্রন করেঃ আজকালকার ব্যবসার জগতে সততার সাথে টিকে থাকাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যখন চুক্তির পর চুক্তি হচ্ছে একপাক্ষিক এবং ব্যবসা তড়তড় করে উঠে যাচ্ছে তখন বড় আসন পাওয়াটা বেশ সহজই বটে।
অসততার সাথে হয়তো ব্যবসায় ধারাবাহিক সাফল্য আসতেও পারে, কিন্তু তারপর, তারা কি সব হারাচ্ছেনা যা তাদের ছিলো? এটা অনুধাবন করার আগেই তারা সাফল্যের ক্রীতদাসে পরিনত হয়েছে। শীর্ষের থাকার জন্য তারা যা খুশি তাই করতে পারেন, যা তারা কোনোদিন চিন্তাও করতে পারেন নি। বন্ধুত্ব, অংশীদারিত্ব সব ধ্বংস হচ্ছে। পারিবারিক দ্বন্দ্ব বাড়ছে। কেবল ব্যাংক হিসাবের বৃদ্ধি ছাড়া আর সব কিছুতেই পতন হতে থাকে।
ব্যর্থতা আমাদের বিনয়ী করে যখন আমাদের খুব খুব করে নত হওয়া প্রয়োজন। এটা আমাদের স্মরণ করতে সাহায্য করে যে কোথা থেকে আমরা এসেছি এবং আমাদের আরো আত্মনিয়ন্ত্রিত করে।
৪) ব্যর্থতা "আহা" মুহুর্ত তৈরি করেঃ ব্যর্থতা একটা মুহুর্ত তৈরি করে যখন অন্তিমটি দেখা দেয় অথবা সেই পথে বোঝা বা খুঁজে বের করা যায় যা পূর্বে সম্ভব হয়নি - এটি আহা মুহুর্ত। কিন্তু কেন?
এটা কেবল একটা জটিল অংকের সমাধান বের করার মতো। প্রথমে এটা বোঝাটা কষ্টকর, কিছুক্ষণ ঘাটাঘাটি করলে কিছু একটা বের হয়। উত্তরটা একটা শূন্যতা থেকে বের হয়।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা শূন্যতা থেকে বের হয়না। এটা আমাদের চেতনা থেকে বের হয় যেখানে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠেছে ভয় আর ব্যর্থতার সংকুচিত চিন্তা। এর ফলাফল অমিয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। নিজের ভেতর একটা অন্তর্দৃষ্টির জন্মদিতে পারে যা হতে পারে আরো শক্তিশালী, সৃষ্টিশীল এবং স্বচ্ছ। আর তখনই আহা মুহুর্তটি উপভোগ করা যায়।
৫) ব্যর্থতা একজন উদ্যোক্তাকে উন্নতির দিকে ধাবিত করেঃ ব্যর্থতা আমাদের সামনের দিকে ধাবিত হতে প্রস্তুত করে। উদ্যোক্তাকে প্রায় প্রতিদিন এমন কিছুর মুখোমুখি হতে হয় যা সে জানেনা যা তার জানা প্রয়োজন। ব্যর্থতা এই সব জ্ঞানকে বিশ্লেষন করে যা ঘটনার অনুঘটক হিসেবে কাজ করে কেননা এটা সম্পূর্ন অপ্রত্যাশিত। আর আমরা কি রূপে অজানাকে জানতে পারি বা জানতে পারি যা জানা দরকার এই ব্যর্থতা ছাড়া। এটা কিছুতেই পরিকল্পনার মধ্যে আনা সম্ভব নয়।