যখন ক্ষুদ্রঋণের দুঃস্থ গ্রহীতাদের পক্ষ হয়ে তাকে বলা হয় ঋণ/সুদ মাফ করতে, তখন সে দাবি করে যে, সে ত দাতব্য কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে না, ব্যবসা করছে। কাজেই কোন মাফ নাই। আবার যখন বলা হয় যে, কমার্শিয়াল ব্যাংকের মত ট্যাক্স দিতে, শেয়ার-হোল্ডারদের ডিভিডেন্ট দিতে, তখন বলে যে, সে ত ব্যবসা করছে না, জনসেবা করছে!
বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ও গবেষক হাসান মাহমুদ তার এই পোষ্টে এভাবেই মূল্যায়ণ করেন, ড: ইউনুসের গ্রামীণ ব্যাংক -কে ।
এবার গ্রামীনের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখা যাক এটাকে একটা বিজনেস-সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করা যায় কি না। গ্রামীনের সর্বমোট ডিপোজিটের ৫৪% আসে সদস্যদের ‘সাপ্তাহিক জমা’ থেকে (ঋণের কিস্তি নয়)। মোট ইকুইটি’র (শেয়ার) ৯৪% এর মালিক সদস্যরা (২০০৬ সালের হিসাব, গ্রামীন ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া)। কিন্তু তারা কি কখনো ‘ডিভিডেন্ট’ পায়? তারা কি কখনো তাদের তাদের শেয়ার বিক্রী/হস্তান্তর করতে পারে? এই প্রতিষ্ঠানের বোর্ড-অব-গভর্ণরস কি শেয়ার-হোল্ডারদের ভোটে নির্বাচিত হয়? এই প্রতিষ্ঠান কি অন্যান্য কমার্শিয়াল ব্যাংকের অনুরূপ ঋন-ব্যবসা বাবদ সরকারকে নির্দিষ্ট হারে কর পরিশোধ করে?- যদি এই প্রশ্নের উত্তরগুলো ‘না’ হয়, তাহলে গ্রামীন কে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বলা যায় কি?
আবার যদি মনে করেন এটা ব্যবসা প্ড়তিষ্ঠান না, দাতব্য প্রতিষ্ঠান, তবে এর দাতব্য কর্মের নমুনা দেখুন কতটা ভয়াবহ !
যদি বৃষ্টিতে/বন্যায় শাক-শব্জি মরে যায়, অসুখে গরু-ছাগল-হাঁস-মুরগী মরে যায়, বাজারে কোন কারণে যদি চাল-গম-তেল বিক্রী না হয় বা দাম পড়ে যায়, তখন কি ঘটে সেই ঋণগ্রহীতার? ঋণ কিন্তু ফেরত দিতেই হবে, এক্ষেত্রে কোন ছাড় নাই। এই অবস্থায় Sharif (1999) তার গবেষনায় দেখেছেন যে, তারা নীম্নোক্ত পাঁচটি পথ অবলম্বন করেঃ
এক, মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নেয়,
দুই, বসত-বাড়ি বিক্রী করে বা পূর্বের মজুত/বিনিয়োগে হাত দেয়,
তিন, জীবনযাত্রার মান কমিয়ে অর্থ জমা করতে শুরু করে,
চার, ঋণ পূণঃতফসিলীকরণের (রি-স্কেজ্যুল) চেষ্টা করে (সাফল্য বিরল),
পাঁচ, কিছুই করতে না পারলে ঋণ খেলাপী এবং ড্রপট-আউট হয়।
এরই ফলে হয়ে যায় কত শত পরিবার সর্ব হারা, ভিটে ছাড়া !
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:২৫