somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীল অন্ধকারটুকু

২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে সন্ধ্যা ছ’টায় কুলসুম কে নিয়ে গাইনোকলজিষ্ট এর কাছে যাবার কথা। বসের সাথে মোবাইলে কথা শেষ করে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে শাহীনের বুক ধ্বক করে উঠল! এখন সাড়ে চারটা বাজে। শাহিনের অফিস লালমাটিয়া, বাসা মীরপুর, গাইনোকলজিষ্ট এর চেম্বার গ্রীন রোড। আজকে বৃহস্পতিবার। বাসে লালমাটিয়া থেকে মীরপুর গিয়ে মীরপুর থেকে কুলসুম কে নিয়ে গ্রীন রোড আসতে আসতে ডাক্তার তার চেম্বার বন্ধ করে চলে যাবে। কুলসুম এর ন মাস চলছে। আজকে ডাক্তারের কাছে নিলে হয়ত বলবে আজকেই হসপিটালে ভর্তি করে ফেলেন! পেটের ভেতরের সন্তান যাতে আঘাত না পায় সেজন্য শাহীন কুলসুম কে নিয়ে বাসে চড়ার সময় খুব সাবধানে চড়ে। অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে খালি বাসের জন্য। খালি বাস আসলে বাসের সামনের আর পেছনের চাকার মাঝামাঝি সীটে কুলসুম কে নিয়ে বসে। বাস চলার সময় প্রাণপণে খেয়াল করার চেষ্টা করে রাস্তায় গর্ত বা স্পিড ব্রেকার আছে কিনা। গর্ত বা স্পিড ব্রেকার সামনে পড়লে কুলসুম কে সামনের সিটের হ্যান্ডেল ধরে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করে। কারণ স্পিড ব্রেকার পার হবার সময় সীটে বসা থাকলে পেটের ভেতরের বাচ্চার গায়ে ঝাঁকি লাগতে পারে। কুলসুম দের বংশে মিসক্যারেজের প্রবণতা আছে। নিজের সন্তানের ক্ষেত্রে এরকম কিছু শাহীন দূঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনা।
শাহিন ভয়ে ভয়ে কুলসুম কে ফোন দিল।
- ইয়ে কুলসুম, অফিসে একটা জরুরী ডকুমেন্ট হারিয়ে ফেলেছি! সন্ধ্যা ছ’টায় ব্যাঙ্কের লোক আসবে। বসের সাথে মিটিং। এর মধ্যে জরুরী ডকুমেন্ট খুঁজে না পেলে চাকরি চলে যাবে। কি করব বুঝতে পারতেছিনা।
ফোনের অপর প্রান্তে কুলসুম একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। শাহীন যথেষ্ট মেধাবী এবং পরিশ্রমী। কিন্তু তার আত্নবিশ্বাস কম। আত্নবিশ্বাস কম হবার কারনে সে সবসময় মিথ্যে কথা বলে পরিস্থিতি অতিক্রম করতে চায়। কখনো সত্যের মুখোমুখি হয়না। কুলসুম কে বললেই হত, অফিসে জরুরী কাজে আটকে গেছি। জরুরী ডকুমেন্ট হারিয়ে ফেলেছি, চাকরি চলে যাবে, এসব মিথ্যা কথা বলার কোন প্রয়োজন ছিল না। কুলসুম নিজেও এসব পরিস্থিতিতে শাহীন কে আর প্রত্যাঘাত করেনা। শাহিনের মিথ্যের আড়ালের সত্যটুকু অনুমান করে নিয়ে সেই সত্যের প্রেক্ষিতে নিজের সিদ্ধান্তটুকু জানিয়ে দেয়। তবে শাহিনের এই মিথ্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সবগুলো সত্যকে কুলসুম মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। সপ্তাহ খানেক আগের ঘটনাটা মনে করে আবারো মনে মনে শিউরে উঠল কুলসুম। কিভাবে সম্ভব! আজীবনের ভালোছাত্র, ভালোছেলে, স্ত্রী এবং অফিসের বসের ভয়ে ভীত ছা পোষা শাহিনের পক্ষে কিভাবে সম্ভব একটা পরকিয়া প্রেমে জড়ানো?? না, প্রচন্ড রাগে ফুঁসে উঠেনি কুলসুম। শাহিনের সাথে কোমর বেঁধে ঝগড়াও করেনি। সে এটাও ভাবেনি এই সংসারের ভরণপোষণের জন্য তিলে তিলে নিঃশেষিত হতে থাকা শাহীনের নিজের স্ত্রী’র প্রতি, অনাগত সন্তানের প্রতি ভালোবাসা নিঃশেষ হয়ে গেছে। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে শাহীন যখন কুলসুমের পেটে হাত বুলিয়ে আদর করেছে, বুকে ঠোঁটে এঁকে দিয়েছে অজস্র চুম্বন তখন এক মুহুর্তের জন্যও ঘৃণায় কুঁকড়ে উঠেনি কুলসুমের অন্তর। আবেগে গলে যেতে যেতে ভেতরের অসহ্য কাঁটা টার অনিবার্য উৎপত্তি স্থল টাকে সে বুঝতে চেয়েছে। এই ফুল কাঁটা ঝড় জলের পৃথিবীতে অসংখ্য অসহায় প্রানী’র একজন কুলসুমের পারিবারিক এবং সামাজিক উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত অধিকারবোধের কতটুকু আসলে সত্য সেটা বুঝতে চেয়েছে কুলসুম।
- ডকুমেন্ট খুঁজে বের কর। আমরা দরকার হলে দূদিন পরে গাইনোকোলজিষ্টের কাছে যাব। আজকে সকাল থেকে শ্বাশুড়ি মার অবস্থা আবার খারাপের দিকে। ডায়াবেটিস প্রচন্ড হাই। জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। হসপিটালে ভর্তি করানো দরকার। আমি এই শরীর নিয়ে একা একা কি করব? তুমি বাসায় ফেরার সময় আম্মার জন্য কি সাথে করে একজন ডাক্তার আনতে পারবে?
মায়ের অবস্থা খারাপের কথা শুনে শাহীন মনে মনে ভড়কে গেল। ডায়াবেটিস হাই হবার কারন নিয়মিত ডায়াবেটিসের অষুধ না খাওয়া। নিয়মিত ডায়াবেটিসের অষুধ না খাবার কারণ শাহীনের নিয়মিত ডায়াবেটিসের অষুধ কিনতে না পারা! প্রতি মাসে বাসা ভাড়া যোগ বাস ভাড়া যোগ খাওয়া যোগ তেল সাবান যোগ ইলেক্ট্রিক বিল যোগ পানির বিল যোগ গ্যাসের বিল যোগ ডিশ এন্টেনা যোগ মাসে মাসে কুলসুমের চেকা্প যোগ করতে করতে মায়ের ডায়াবেটিসের অষুধের আগেই শাহিন বিধ্বস্থ হয়ে গেছে এবং আহত জন্তু’র মত গুঙ্গিয়ে গুঙ্গিয়ে শাহিন তার বড় ভাইকে অভিশাপ দিয়েছে নিজের বৌয়ের দাপটের কাছে পরাজিত হয়ে মা কে শাহিনের ঘাড়ে গছিয়ে দেবার জন্য।
- তুমি আম্মার মাথায় একটু জলপট্টি টট্টি দিয়ে কোনমতে রাখ। আমি দেখি কি করতে পারি। জ্বর কমে যাবে ইনশাল্লাহ!
বলে তাড়াতাড়ি ফোন রেখে দেয় শাহিন। ফোন ধরে থাকা মানেই ডিজাস্টারের তৃতীয় পর্ব, চতুর্থ পর্ব ধারাবাহিক ভাবে আসতে থাকা! কুলসুমের ডেলিভারি’র জন্য অফিসের কলিগদের মধ্যে যারা শাহিন কে অন্তত করুণা করে তাদের কাছ থেকে প্রায় ভিক্ষা করে তিরিশ হাজার টাকা জোগাড় করেছে শাহিন। ক’দিন আগে তার এক কলিগের বাচ্চা হল। সিজারের বিল ই নাকি এসেছে ছত্রিশ হাজার পাঁচ শ। শাহিন নির্লজ্জের মত চিন্তা করেছে- নাতি জন্মালে ত নানাবাড়ি থেকে নাতিকে সোনার আংটি, স্টিলের দোলনা টোলনা দেয়, সেসব না দিয়ে যদি ওরা আগেই কুলসুমের হাতে হাজার দশেক টাকা দিত!
মায়ের অবস্থা মোটেও ভাল না। বিছানায় কুঁকড়ে মুকড়ে থাকা মা কে দেখলেই বোঝা যায় প্রদীপের তেল ফুরিয়ে গেছে। সারাজীবন দারিদ্র্য, কু সংস্কার এর বলি হয়ে নিয়তি নামক ঘৃণ্য প্রহসনের সাথে অসম লড়াই করতে করতে অকালে বৃদ্ধ হয়ে বৃদ্ধকালে নিজের ছেলেমেয়ের কাছেই অসহ্য অপমানের স্বীকার এই বৃদ্ধা যে কোন রহস্যময় জড়তার কারণে এখনো টিকে আছে সেটা শাহিনের কাছে একটা বিস্ময়! এবং সে চায় তাকে বিস্মিত করে মা আরো কিছুদিন বেঁচে থাকুক। যাতে কুলসুমের ডেলিভারির পরে সে যেভাবেই হোক আরো কিছু টাকা সঞ্চয় করতে পারে। তার বন্ধু বা কলিগ যাদের বাপ মা কেই শেষ বারের মত হসপিটালে ভর্তি করিয়েছে মরার পরে সবার ক্ষেত্রেই প্রায় সত্তুর আশি হাজার টাকা বিল হয়েছে। শাহিন হয়ত একটু সস্তার হসপিটালে ভর্তি করাবে। কিন্তু কমসে কম ত্রিশ চল্লিশ হাজার টাকা ত লাগবেই। বৌ এর দাপটের কাছে তিন শুন্য গোলে( শ্বশুরের আর্থিক সাহায্য, বৌ এর রূপ যৌবণ, বৌ এর প্রভাব শালী আত্নীয় স্বজন) পরাজিত বড় ভাই এর কাছে চোখের পানি আর স্বান্তনা ছাড়া আর কিছু আশা করা ঠিক হবে বলে মনে হয়না শাহিনের। হসপিটালের খরচ ছাড়াও মরার পর চারদিনের দিন মেজবান দিতে হয়। ফাতেহা তে গরু না দিলে ইজ্জত থাকেনা। মায়ের মেজবান দেবার জন্য গরু চুরি করার একটা উদ্দাম কল্পনা মাথায় আসাতে নিজেই নিজেকে মনে মনে অভিশাপ দেয় শাহিন। এই একজীবনে জীবন টাকে সে কিছুতেই দাঁড়া করাতে পারল না। সংসার নামক নগ্ন কামনামদির প্রেয়সীর সামনে পৌরুষের গর্ব নিয়ে দাঁড়াতে যে নূন্যতম উত্থান শক্তি দরকার, সামান্য টাকার অভাবে সেই উত্থান শক্তি তার কখনোই হল না!
অফিসের চেয়ারে বসেই শাহিনের মাথা নিচের দিকে ঝুঁকে গিয়েছিল। ঝুঁকে যাওয়া অবস্থাতেই দেখল মোবাইল এর ডিসপ্লে টা অপার্থিব এক নীল আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে। সাথে একেবারেই আলাদা একটা রিং টোন পাখির কূজনের মত শাহিনের সমগ্র অস্তিত্বে ছড়িয়ে পড়ে অদ্ভুত এক শিহরণে শাহিন কে অস্থির করে দিচ্ছে। শাহিন বিস্মিত অস্ফুট স্বরে মনে মনে আবৃত্তি করল- পাপ! তুমি এত পবিত্র কেন??
সংসদ ভবনের সামনের লেকের কাল পানিতে নিস্পাপ দুটো কাল ছায়া তির তির করে কাঁপছে। লেকের পানি শান্ত, তবু কাঁপছে। সেই নিস্পাপ ছায়ার যারা কায়া তারা পাপী। তারা দুজনেই নিজ নিজ স্বামী এবং স্ত্রী’র সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এখানে বসে আছে। দূজনের মধ্যে আরো একটা ব্যাপারে অদ্ভুত মিল! তারা দূজনেই বিশ্বাসঘাতকতার জন্য নিজেকে ঘৃণা করলেও নিজের পাপ সঙ্গীকে কেউ ই ঘৃণা করেনা!
- আচ্ছা, আমি যদি তোমার বৌ হতাম তাহলে আমার সঙ্গ কি তোমার এত রোমান্টিক লাগত? শুধু আমার পাশে বসে দুটা বাদাম খাবার জন্য কি তুমি জান বাজি রেখে ছুটে আসতা?, বাদামের খোসা ছাড়িয়ে শাহিনের হাতে দিতে দিতে তৃণা জিজ্ঞেস করল।
- না আসতাম না। স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা হচ্ছে দায়ীত্ত্বপূর্ণ ভালোবাসা। খাওয়া পরা, সন্তান মানুষ করার নিরন্তর বাস্তবতার চৌহদ্দি’র মধ্যে এ ভালোবাসা আটকে যায়। স্বভাবগত ভাবেই মানুষের মনের মধ্যে এক ‘দায়ীত্ত্ব জ্ঞান হীন চরিত্র হীন মহান লম্পট’ বাস করে এবং এই মহান লম্পট ভালোবাসার কোন সীমানা নির্ধারণ কে স্বীকার করেনা!
- মহান লম্পট??
- হ্যাঁ, সুমহান লম্পট!
- এই ল্পম্পট কেন বাস করে?
- এটা ব্যাখ্যা করার জন্য আমার কিছুটা বৈজ্ঞানিক বক্তৃতা দিতে হবে। বৈজ্ঞানিক বক্তৃতা শুনতে কি তোমার ভাল লাগবে?
- তোমার মুখের সব কথাই আমার শুনতে ভাল লাগে!
- আর তোমার স্বামী’র মুখের?
তৃণা চুপ করে অনেক্ষণ মাথা নিচু করে রাখল। তারপর কিছুটা ভারী গলায় বলল- কই? তোমার বৈজ্ঞানিক বক্তৃতা শুরু কর!
শাহিন তৃণা’র মাথার চুলে বিলি কেটে দিতে দিতে বলতে লাগল- একটা শিশুর আচার আচরণ দেখলেই বুঝা যায় চারপাশের পরিবেশ থেকে সঞ্চিত স্মৃতির চেয়ে আমাদের জীনে সঞ্চিত স্মৃতি অনেক বেশি শক্তিশালী এবং এর প্রভাব অনেক বেশি। একদিনের শিশু ও দুধ খেতে জানে। তার আনন্দ কষ্ট এবং রাগ প্রকাশ করতে জানে। বলাবাহুল্য জৈব বিবর্তনের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীনে সঞ্চিত স্মৃতিই এর জন্য দায়ী। শৈশব ছাড়াও কৈশোর এবং যৌবনেও তার পারিবারিক সামাজিক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার চেয়ে মানুষের আচরনে অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করে তার জেনেটিক স্মৃতি ভান্ডার। সভ্য হওয়া, নির্দিষ্ট জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনী নির্বাচণ করা এসব মাত্র সেদিনের কথা। এর আগে দীর্ঘ যুগের পর যুগ মানুষ বহুগামী জীবন যাপন করেছে কোনরূপ সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই। এরপর আস্তে আস্তে মানুষ সভ্য হয়েছে। জীবন সঙ্গী নির্বাচণ করতে শিখেছে। সঙ্গী বা সঙ্গীনি’র প্রতি একেক টা আবেগ একেক টা অধিকারে পরিনত হয়েছে। এই অধিকার একসময় প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। এই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করায় সব চেয়ে শক্তিশালী ভুমিকা রেখেছে বিয়ে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক সত্য এবং জেনেটিক স্মৃতির আধিপত্যের মধ্যে যদি তুলনা করা হয় তাহলে দেখা যায় জেনেটিক স্মৃতির আধিপত্য মানুষের চেতনায় অনেক বেশি অগ্রাধিকার পায়। এজন্য বেশির ভাগ বিবাহিত মানুষ ই দাম্পত্য জীবনের পাশাপাশি অন্তত মানসিক ভাবে হলেও একটা লাম্পট্য জীবন যাপন করে। তুমি কি আমার কথা বুঝতে পারতেছ তৃণা?
তৃণা চুপ করে থাকল। এই কথাগুলো তার মধ্যে একটা ঘোর তৈরি করছে। সে বুঝতে পারছে এই মানুষ টার সাথে পরিচিত হবার পরেই তার জীবন টা অভিশপ্ত হওয়া শুরু হয়েছে। দিন গড়িয়ে রাত আসবে, রাতের পরে আবার দিন হবে। কিন্তু অভিশাপ থেকে তার মুক্তি নেই।
- কিন্তু আমি ত এর থেকে মুক্তি চাই। আমি চাই আমার সমস্ত আবেগ, সমস্ত কামনা হবে আমার জীবন সঙ্গী কেন্দ্রিক। সেখানে অন্যকারো স্থান থাকবেনা। তোমার ও না।
- আমিও ত তাই চাই। কিন্তু আমরা দূ’জনেই যে অসহায়!!
দূজন অসহায় মানুষ পরস্পর কে জড়িয়ে ধরে থাকে। তারা দুজন ই একে অপরকে ভালোবাসে অথচ এই ভালোবাসার জন্য প্রত্যেকে নিজেকে মনে মনে ঘৃণা করে!

কুলসুম পুরো পুরি অসহায় হয়ে তার শ্বাশুড়ি’র দিকে তাকিয়ে আছে। রাত এগারটা বাজে। শাহীনের এখনো বাসায় ফেরেনি। তার মোবাইল ও বন্ধ। শ্বাশুড়ি মা বীভৎস চোখে তার পুত্র বধুর দিকে তাকিয়ে আছে। মৃত্যুর খুব কাছাকাছি এসে তার মনে হচ্ছে এই মেয়েটাই তার ছেলে মেয়ে মা বাবা সব। এই মেয়ের চেহারার গভীরে লুকানো কষ্ট তিনি পরিষ্কার ভাবেই উপলব্ধি করতে পারছেন। এই কষ্ট যুগ যুগ ধরে মেয়েরা তাদের তাদের চেহারার গভীরে লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েছে। মৃত্যু যাতনা ভেদ করে তাঁর চিৎকার শুনতে পেল কুলসুম- মা মা মা রে..।।
কুলসুম স্পষ্টতই বুঝতে পারল তার প্রসব বেদনা শুরু হয়ে গেছে। একই সাথে শাহীনের প্রতি প্রচন্ড ঘৃণা, শ্বাশুড়ি মায়ের প্রতি প্রচন্ড মমতা এবং অনাগত সন্তানের প্রতি প্রচন্ড আবেগ তার শরীরের নীল যন্ত্রনাকে অনেক টাই ম্লান করে দিল।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×