somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের প্রতিবাদে সুন্দরবনে পশুসমাবেশ: পোষ্ট আপডেট হবে

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সভার শুরুতেই ফ্লোর না পেয়ে মুখপোড়া হনুমান তুলকালাম কান্ড ঘটিয়ে ফেলল। বনবিড়াল এর মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে চলে আসলে সভাপতি শিয়াল আবার সভা শুরু করল। আবেগঘন বক্তৃতা রাখল বাঘ মামা। পাশ্ববর্তী খালে বসে কান্না জুড়ে দিল কুমির। সবাই এতদিন বাঘের হালুমহুলুম রূপটাই দেখেছে।আবেগের অতিশয্যে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রতিবাদে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতি হিসেবেও স্বেচ্ছায় মানুষের কাছে ধরা দেবার ঘোষনা দিয়ে দিলেন বাঘ মামা, তবুও যদি মানুষের দয়া হয়।পাশ থেকে ধারি ইদুর ফিসফিসিয়ে মনে করিয়ে দিলেন-
-মামা, উত্তেজিত হইয়া উল্টা-পাল্টা ঘোষনা দিয়া লাভ নাই। মানুষেরে বিশ্বাস নাই। এরা খুবই বদ প্রকৃতির। দেখা যাবে, বিলুপ্তপ্রায় হইলেও বাঘের চামড়ার লোভে আপনারে আর মামীরে ধইরা বাচ্চা উৎপাদনের প্রজেক্ট শুরু করবে এরা।
বাঘ নিজের দুর্বলতার কথা স্মরন করে পরবর্তী বক্তাকে সুযোগ দেয়ার অজুহাতে কথা ঘোরাল এবং বক্তব্য শেষ করল।পরবর্তী বক্তা হিসেবে বন্যশুয়ার ঘোৎ ঘোৎ করে মানুষের ফোরটিন জেনারেশন তুলে গালিগালাজ শুরু করল। আধঘন্টা উচ্চগ্রামে গালিবর্ষনের পরে বন্যশুয়ার একটু দম নিতে গেলে সবাই সম্বিত ফিরে পেল। বনমোরগ আর শিয়ালদলের লিডে তুমুল হর্ষধ্বনিতে প্রকম্পিত হল সুন্দরবনের আকাশ বাতাস।বন্যশুয়ারকে আর কষ্ট করে বক্তৃতা দিতে হল না।
এবারে মঞ্চে উঠল খরগোশ। গাজরের ভিটামিনে সমৃদ্ধ খরগোশের কাছে সবাই একটি দিকনির্দেশনামূলক বক্তৃতা প্রত্যাশা করল।ঢিবির উপরে বসে মুচকি হাসলেন কচ্ছপ।খরগোশ মানুষের নির্বুদ্ধিতার উদাহরন দিতে গিয়ে জর্জ বুশ থেকে শুরু করে জাস্টিন বিবার, আদভানী থেকে আবুল, পত্রিকার সম্পাদক থেকে রাজনীতিবিদ কাউকেই বাদ রাখলেননা।সমাবেশ কাভার করতে আসা দৈনিক ‘পশুর আলো’ পত্রিকার সাংবাদিকরা একটু বিব্রত বোধ করলেও নোটবুকে ক্রমাগত লিখতে থাকলেন ‘বান্দর বুলেটিন’ ও ‘খাটাশ জমিন’ এর সাংবাদিকরা।
উপস্থাপক গন্ডার তার ভারী কন্ঠস্বরে পরবর্তী বক্তা হিসেবে যখন ঘোষনা করল বনমোরগের নাম সমাবেশে তখন কিছুটা কানাঘুষা শুরু হল। একে তো বনমোরগ কোন পশু না, তার উপরে এই প্রজাতির সমগোত্রীয় পোলট্রি এবং দেশীবংশের মোরগমুরগীরা মানুষের সাথে যে অবাধ মেলামেশা করে থাকে তাতে সন্দেহ থাকাটাই স্বাভাবিক।বনমোরগ লোকালয়ের মুরগীসমাজকে ডিম দিতে অস্বীকৃতি জানানোর অনুরোধ করবেন বলে আশ্বাস দিলেন।
সুন্দরবন কাউয়া সোসাইটির পক্ষ থেকে প্রকল্প গ্রহণের প্রতিবাদ স্বরূপ মলত্যাগের জন্য মানুষের মাথাকে একমাত্র টার্গেট বলে ঘোষনা দেয়া হয়। এছাড়া বিদেশী কাউয়ার একটি এক্সপার্ট দলকে দিয়ে ‘অপারেশন অব্যর্থ নিশানা’ প্রকল্পের মাধ্যমে একটি স্কোয়াড গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণের কথা বলা হয় যারা কাকদের পশ্চাতদেশের নিশানা ঠিক করতে মাসব্যাপী ট্রেইনিং ক্যাম্পের আয়োজন করবে সুন্দরবনের বিভিন্ন পয়েন্টে।
সুন্দরবন এ্যনোফিলিস মশা মহিলা সমিতি এ্যারোসল ও কয়েলের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও লোকালয়ে মানুষের বিরুদ্ধে ম্যালেরিয়া সংগ্রাম চালিযে যাবার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।
পশুসমাবেশ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয় সুন্দরবনের গাছেদের প্রতি, যারা ভয়াবহ সিডর এর মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি থেকে অনেকটাই রক্ষা করেছে বাংলাদেশকে।
প্রতিবাদ কর্মসূচী চললেও মানুষের ভাষায় একমাত্র যোগাযোগক্ষম প্রানী হিসেবে মানুষের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাবার জন্য ময়না, টিয়া, কাকাতুয়া ও শালিক পাখির সমন্বয়ে একটি লবিষ্ট টিম গঠন করা হয়।

সমাবেশ থেকে দালাল আখ্যায়িত করে তেলাপোকাদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়। একমাত্র এই প্রানীরাই মনুষ্য বসতির ময়লা, উচ্ছিষ্ট আর গৃহস্থলী আবর্জনার লোভে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্প গ্রহনের জন্য নিজেদের মধ্যে মিষ্টি বিতরন করেছে।তাদের বিলুপ্ত হবার ভয় নেই।সবচেয়ে বড়কথা, পরিবেশের ভারসাম্য নিয়ে ভাববার মত মগজ তাদের নেই। পৃথিবীতে তেলাপোকারাই একমাত্র প্রানী যারা মাথা ছাড়াও সাতদিন বেঁচে থাকতে পারে।
সমাবেশের আপডেট চলবে। আপনাদের কাছে কোন আপডেট থাকলে দিয়ে দিতে পারেন।


সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:২৬
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×