যেখানে দেশের সকল সাধারণ মানুষ প্রতক্ষ্য পরোক্ষ ভাবে ভ্যাট দিয়ে যাচ্ছে সেখানে ছাত্ররা ভ্যাট দিবে না - এ কেমন কথা !? ছাত্ররা কি এ দেশের নাগরিক নয়? দেশের ছাত্র ও শিক্ষানবিশদের নিকট থেকে এই ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ ও প্রতিবাদের নামে রাস্তাঘাট অচল করাটা অত্যন্ত লজ্জাকর ও দুঃখজনক।
বিগত কয়েকদিনের আন্দোলনের প্রতি সন্মান জানিয়ে সরকার বলেছে ছাত্রদের নিকট থেকে ভ্যাট নেওয়া হবে না বরং এই ভ্যাট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে নেয়া হবে৷ এটি অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত কথা৷ কিন্তু কিছু সংখ্যক ছাত্র সরকারের বক্তব্যে অনাস্থা জানিয়ে বলছে ভ্যাটের টাকা শেষপর্যন্ত ছাত্রদের নিকট থেকে আদায় করা হবে। ছাত্রদের পক্ষ থেকে এই ধরনের কথা বলাতে মনে হচ্ছে আমরা মগের মুল্লুকে বাস করছি। ছাত্ররা যখন ফি জমা দেয় তখন রশিদ বুঝে নেয়ার দ্বায়িত্ব তার। এখন ছাত্রদের খেয়াল রাখতে হবে তারা যখন টিউশন ফি দিয়ে রশিদ নিবে সেটা যেন পাকাপোক্ত রশিদ হয়। আগে বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে কেবল মাত্র অংক বসিয়ে সাদামাটা একখানা প্রাপ্তি রশিদ ধরিয়ে দিত, এখন থেকে ফি জমা করার পর ছাত্রদের বিল আকারে রশিদ নিতে হবে যেখানে বিস্তারিত করযোগ্য বিররণ , ভ্যাট যোগকরে সর্বমোট টাকার পরিমান লেখা থাকবে।
উদারন সহকারে বলি, একটি বিশ্ববিদ্যালয় এক সেমিস্টারের জন্য ফি বাবদ ৬০.০০০ টাকা নিয়ে টাকাটি বুঝিয়া পাইলাম লিখে রশিদ দিত৷ এখন সরকার কর্তৃক আরোপ করা ৭.৫% ভ্যাটের কারণে কর্তৃপক্ষকে বিলটি ভেঙ্গে দেখাতে হবে এইভাবে,
৫৫.৮১৪ টাকা ( করযোগ্য ) + ৪.১৮৬ টাকা ( ভ্যাট ) = ৬০.০০০ টাকা। আমাদের মনে রাখতে হবে দেশের জি ডি পি বৃদ্ধির সাথে কিছুটা মূল্য স্ফীতি দেখা যায়৷ তখন মূল্যস্ফীতির সাথে সামঞ্জস রেখে প্রতিবছর দ্রব্যমূল্য কিছুটা বেড়ে যায়। সুতরাং সূচক বৃদ্ধির কারণে প্রতি নতুন অর্থ বছরের শুরুতে এসে ছাত্রদের বিলে টাকার পরিমানে হেরফর দেখা দিতে পারে কিন্তু কখনই এই পরিমান অস্বাভাবিক হবে না। ধরি চলতি অর্থ বছরে ভোক্তা মূল্যসূচক ৩% বৃদ্ধি পেল, তখন বিলটি ৫৫.৮১৪ টাকার স্থানে ৩% বেড়ে ৫৭৪৮৮,৪২ টাকা দাড়াবে এবং ভ্যাট সহ বৃদ্ধি পেয়ে সর্বমোট ৬১৮০০.৪২ টাকা পরিমানে আসবে। অর্থাৎ মোট বৃদ্ধির পরিমান ১৮০০,৪২ টাকা।
কাজেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ভ্যাটের আওতায় আনা হলে তারা যা খুশি ভাবে অযৌত্তিক পন্থায় ফি বাড়িয়ে দিবে তা কখনই সম্ভব নয়৷ যদি তারা এ ধরনের অনৈতিক কাজ করতে চেষ্টা করে তখন আজকের ন্যায় ছাত্ররা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠবে। অবশ্যই সেই সময় দেশের জনগণ ও সরকার ছাত্রদের সমর্থনে অবস্থান নিবে। এযবত ছাত্রদের দেয়া লক্ষ লক্ষ টাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর ফাঁকি দিয়ে নিজেদের পকেটস্থ করে যাচ্ছে অথচ এর কিয়দাংশ টাকা যদি সরকারের কোষাগারে জমা হত তাহলে কোন দুর্দিনেও টাকাগুলো ছাত্রদের কল্যানে ব্যয় হত৷