এমন তো হতেই পারে আপনার হৃদয়খানা সমুদ্রের মত বিশাল, আর এতটাই বিশাল যে একসাথে চার-পাঁচজনকে ভালোবাসা কোন ব্যাপারও না। কিন্তু এমন যদি হয়, এই চার-পাঁচজন থেকে আপনার একজনকেই জীবন সঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে হবে তখন আপনি কাকে বেছে নিবেন? একজন মানুষের মধ্যে তো গুন-বেগুন, ভাললাগা-খারাপলাগা তো থাকেই, কিন্তু যদি হয় জীবনসঙ্গী তাহলে তো এই গুন-বেগুন, ভালো-খারাপ সবকিছুকেই আতসি কাঁচের নিচে সপে দিতে হয়, পাছে নিশ্চয় কেউ চাইবে না ভুল সিলেকশনে ভুল সঙ্গীকেই জীবনসঙ্গী করে নেওয়া। কারন, তাকে সঙ্গে করেই তো বাকিটা পথ একসাথে চলতে হবে। থাকা-খাওয়া, বাচ্চা লালন-পালন, অসুখ-বিসুখ, সমাজ, রীতিনীতি সব কিছুতেই তাকে পাশে থাকা চাইই।
ওহ! অনেক কিছু বলে ফেললাম, যাক এত বক বক না করে এখন কাজের কথায় আসি কি বলেন?
আজ আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো ২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া কলকাতার বাংলা ফিল্ম "রঙ মিলান্তি"। গল্পের লিড রোলে আছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, চুর্ণী, ঋধিমা, তানাজী দাশগুপ্ত, গৌরব চট্টোপাধ্যায়, ইন্দ্রাশিস রায় সহ আরও অনেকেই।
কমলিকা!! হুম, কমলিকার নামের মেয়েটিকে কেন্দ্র করেই গল্পের শুরু। মেয়েটির একটি-দুটি না, চার-চারটি বেস্ট ফ্রেন্ড আছে যাদের সবাইকে সে ভালোবাসে। কিন্তু বড় বোনের দাম্পন্ত কলহের জের ধরে সে সিন্ধান্ত নেয় যে চারজনের মধ্যে একজনকেই সে জীবন সঙ্গী হিসেবে বেছে নিবে। চারজন বন্ধুকে একসাথে ডেকে এনে মেয়েটি খুলে বলে আসল ঘটনা। কিন্তু চারজন বন্ধু সিন্ধান্ত নিতে পারে না কে কমলিকাকে একান্ত জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিবে কারন চারজনই তো কমলিকাকে খুব ভালোবাসে। তাই তারা কমলিকাকেই বলে সিন্ধান্ত নিতে, বাকিরা শুধু বন্ধু হিসেবেই থাকবে। কিন্তু চারজনের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়, অন্যরা শুনলে যে পাগল বলবে!!! তাই বড় বোনের পরামর্শে দুলাভাইয়ের পরিচিত এক রহস্যময় সাইক্রিয়াস্টিকের সাথে দেখা করে কমলিকা। বুড়ো সাইক্রিয়াস্টিকের কথা মত শুরু হয় একটি খেলা আর খেলাটির নাম?? রঙ মিলান্তি। কমলিকা কি পারবে রংমিলান্তি খেলার মাধ্যমে তার সঠিক সঙ্গীকে খুঁজে বের করতে?? এই খেলাটি কি আশেপাশের মানুষজনকে আবার নতুন করে ভাবতে শেখাবে? কিংবা সম্পর্কের পালাবদল মেনে নিতে? সেটি হয়তো ছবিতেই দেখতে পাবেন।
আপনারা যারা হলিউডের মারদাঙ্গা ছবির পাশাপাশি বলিউডের ইন্টারটেইনিং ছবি দেখতে ব্যস্ত, ভিনদেশী রোম্যান্টিক, থ্রিলার কিংবা হরর দেখে রাতের অবসর সময়টুকু ব্যয় করেন, রংমালন্তি ছবিটি তাদের জন্য ভারী খাবার শেষে করে হালকা সুস্বাদু ডেসার্ট খাওয়ার মত, সময় যে কখন পুরাবে বলাই যায় না।
ছবিটি আমার মূলত দেখা আমার খুব প্রিয় অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় জন্য। যিনি ইতিমধ্যেই ওপারের বাংলা চলচিত্রকে তুলে ধরছেন নতুন রুপে। এই সময়কার সেশন পরমব্রত, ইন্দ্রজিৎদের সাথে পাল্লা দিয়ে অসাধারণ অভিনয় করে যাচ্ছেন এবং ওপারের বাংলা চলচিত্র বিশেষ করে আর্টফিল্মকে নিয়ে যাচ্ছেন নতুন এক উচ্চতায়। কলকাতার আর্টফিল্মে উনার অবদান ওপারের হিট নায়ক প্রসেঞ্জিতের চেয়ে খুব একটা কম নয়। রংমালন্তি ছবিতে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় ছিল মনমুগ্ধকর আশা করি ছবিটি দেখার পর আপনারাও একমত হবেন।
আজ আর নয়। ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন। আসসালামু আলাইকুম