প্রজ্ঞাবান আমেরিকানরা আজ প্রকাশ্যে স্বীকার করে যে, মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার দুই দোস্ত দেশ আছে। এক হচ্ছে- প্রকাশ্য দোস্ত ইসরাইল আর অপরটি হচ্ছে- অপ্রকাশ্য দোস্ত সৌদি আরব।
Click This Link
সমস্ত পৃথিবী জুড়ে মুসলমানদের আজ যে জিল্লতি তার প্রাথমিক বা মূল ক্রিড়ানক হচ্ছে বর্তমান সৌদি রাজবংশ। বিষয়টা হচ্ছে এ রকম, একজন সাবালক সন্তানকে তার মা যদি বলে, ‘তুমি এতদিন যাকে বাবা হিসাবে জানতে সে আসলে তোমার বাবা নয়।’ অপর এক ব্যক্তিকে দেখিয়ে যদি বলে, ‘এই হচ্ছে তোমার প্রকৃত বাবা।’ তখন ঐ সন্তানের যেই পরিস্থিতি, ঠিক একই পরিস্থিতি আজ পৃথিবীর সাধারণ মুসলমানদের। সাধারণ মুসলমানরা ইসলামকে বুঝে সমাজে বসবাসরত আলেম ওলামাগণদের কাছ থেকে। তারাই যদি বলে আমাদের পিতা, পিতামহ যেই ইসলাম অনুসরণ করে এসেছে তা ভুল ছিলো, বর্তমানে সৌদি আরব যে ইসলাম প্রচার করছে তাই সঠিক, তখন সাধারণ মুসলমানেরা যাবে কোথায়? সন্তান যেমনিভাবে পিতাকে চিনে মায়ের মাধ্যমে, ঠিক তেমনিভাবে সাধারণ মুসলমান ইসলামের ধারণা লাভ করে আলেম ওলামাদের কাছে।
বর্তমান যামানার মুসলমানদের ধ্বংসের সুত্রপাতটা হয় ঠিক এখান দিয়েই। সৌদী প্ররোচিত সালাফী/ওহাবী চেতনা হচ্ছে বর্তমান যামানার মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। অত্যন্ত সফলতার সাথে প্রতিটি মুসলমান দেশে সৌদী রাজবংশ ইসরাইল ও আমেরিকার প্রত্যক্ষ সহায়তায় এই জঘন্য কাজটি করে যাচ্ছে। প্রতিটি মুসলমান দেশে শাসকরা হচ্ছে ‘তথাকথিত মুসলমান’ ইসলামের শত্রুদের মনস্তান্তিক আগ্রাসন বুঝার কোনো জ্ঞান, দক্ষতা কিছুই নেই তাদের। ফলশ্রুতিতে আমরা দেখতে পাই, প্রতটি মুসলমান দেশে সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক হানাহানি। আজ পৃথিবীতে মুসলমান দেশের সেনাবাহিনী কখনই পার্শ্ববর্তী অমুসলিম দেশের সেনাবাহিনীর বিপক্ষে যুদ্ধ করে না। ওরা সব সময়ই যুদ্ধ করে নিজ দেশের ওহাবী চেতনার বিভিন্ন নামের সন্ত্রাসী দলের সাথে। সুদূর লিবিয়া থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত সকল মুসলমান দেশেই সৌদি রাজবংশ সফলতার সাথে মুসলমানদের মধ্যে সন্ত্রাসীদল সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। খোদ এই এলাকাতে ১৯৭১ সালে পাক আর্মি যুদ্ধ করেছে এদেশের মুসলমানদের সাাথে আর তারা এখন যুদ্ধ করছে বেলুচিস্তান ও ফাতাহ অঞ্চলের মুসলমানদের সাথে। ইরাক আর্মি যুদ্ধ করছে নিজ দেশের জনগণের সাথে। একই অবস্থা আফগানিস্তান, সিরিয়া, মিশর, লিবিয়া, মরোক্ক, তিউনিশিয়া এমনি সব দেশে। পৃথিবীতে এমন একটি মুসলমান দেশ নেই যে, এ বিষয়টি কোনো আন্তর্জাতিক আলোচনাতে উত্থাপন করছে। কারণ ক্ষমতায় থাকার সময় এরা থাকে অন্ধ, চোখ কান বন্ধ, অদক্ষ নেতৃত্ব এবং অপেশাদার পেশাজীবিরা ব্যস্ত থাকে চাটুকারীতা আর আনন্দ ফুর্তিতে। কখন এবং কিভাবে দেশের জনগণ শত্রুর মনস্তান্তিক বিশারদের দ্বারা মগজধোলাই হচ্ছে সে সম্বন্ধে তাদের কোনো ধারণাই নেই। বরং তারা টাকার বিনিময়ে কিংবা নির্বুদ্ধিতার কারণে শত্রুর মগজধোলাই কার্যক্রমে অনেক ক্ষেত্রে সহায়তা করে। পরে যখন ভ্রান্ত চেতনার দলসমূহ অস্ত্র, গোলাবারুদ নিয়ে মাঠে অবতীর্ণ হয় তখন তারা ঘুম থেকে উঠে মাঠে নামে সন্ত্রাস দমনে।
ইসলামের শত্রুরা সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, একজন জন্মসূত্রের অজ্ঞ মুসলমানকে নাস্তিক করার চেয়ে রেডিকাল কিংবা সন্ত্রাসী করা অনেক সহজ। সে ক্ষেত্রে প্রথম ধাপটিই হচ্ছে সাধারণ মুসলমানদের মাঝে ওহাবী/সালাফী চেতনার অনুপ্রেবেশ ঘটানো। তারপর তাকে প্রচলিত মাযহাব থেকে, আহলে হাদীছ কিংবা লা-মাযহাবী করা। তারপর তাকে জামাত/শিবির, হিজবুত তাহরীর, হিজবুত তাওহীদ, হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি, তালেবান, আইএসআইএল এ ধরণের যে কোনো একটি দলে ভিরিয়ে দেয়া। ব্যাস, একদল মুসলমান সন্ত্রাসী তৈরি হয়ে গেলো।
দুঃখের বিষয় হচ্ছে, যে দেশের মুসলমান সিআইএ’র তৈরি লাদেনের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করে, যে দেশের মুসলমান ‘র’ এর তৈরি জাকির (কাফির) নায়েককে একজন ইসলাম ধর্মের হাদী মনে করে, তাদেরকে দিয়ে ইসলামের শত্রুরা যা খুশী তাই করাতে পারে।
আমরা পরবর্তী পর্বে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো, কিভাবে বর্তমান সরকারের আমলে সালাফী/ওহাবী চেতনা এদেশের জন সাধারণ এবং সামরিক বাহিনীর মধ্যে অনুপ্রবেশ করানো হচ্ছে, ইনশাআল্লাহ!