মুক্তচিন্তা হচ্ছে, কোন ফিলোসোফিকেল, সায়েন্টিফিক, তাত্বিক বিষয়ের উপর নতুন লজিক্যাল ভাবনা ভাবার সময়, অতীতের প্রতিস্ঠিত সত্যকে প্রথমে 'ধ্রূব হিসেবে না' নিয়ে, ভাবতে, মডলিং করতে,যাতে নতুন ফলাফল, নতুন সত্য এসে গেলে তারও যেন সাংকুলান হয়। একটু কঠিন মনে হচ্ছে?
আসলেই একটু কঠিন; গোপাল ভাঁড়ের গল্পের চেয়ে ঢের কঠিন; কঠিন কিছু বুঝতে হলে, ভাবনায় লজিক থাকতে হয়, সায়েন্স জানা থাকতে হয়, অংক জানা থাকতে হয়, দর্শন জানা থাকতে হয়; এমন কি ইতিহাস জানা থাকতে হয়।
রেনেসাঁ ইউরোপে আধুনিকতা এনেছে; ইউরোপ আবিস্কার করেছে যে, মানব জীবনকে ক্রমাগতভাবে উন্নয়নের জন্য শিক্ষাকে উঁচুতে নিতে হবে, সায়েন্স ও টেকনোলোজীতে ক্রমাগতভাবে রিচার্চ করে, জ্ঞানের পরিধিকে বাড়াতে হবে।
ইউরোপ যখন লেখাপড়া করে বিপুল উন্নতি করেছে, আমরা কলোনীতে ছিলাম, রাজা মহারাজার ছেলরা পড়েছে; ২০০ বছর, স্কুল কলেজ বাড়েনি; কিংবা বেড়েছে; বলা মুশকিল; কারণ, নবারেরা কি এর থেকে বেশী স্কুল বানাতো? বলা মুশকিল।
বৃটিশ আমাদের মানুষদের তেমন ভার নিতে চায়নি; কলোনীর জন্য আলাদা নিয়ম ছিলো বৃটিশের। তারপর পাকিস্তান, পাকিস্তানেও পড়ালেখা গৌণ ছিল; আজও পাকিস্তানে প্রয়োজনের তুলনায় স্কুল কম।
এবার বাংলাদেশ; ৪৪ বছরে ৫০ ভাগ মানুষও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পায়নি; আবার আমাদের উচ্চ শিক্ষ মানে, বিশ্বের অনেক এলাকার নীচু শিক্ষার সমান। যাক, আমাদের শিক্ষায়, রিচার্চ নেই মোটামুটি; বইতে যা আছে, তার থেকে বেশী জানতে হলে রিচার্চ করতে হয়।
শুধু বইয়ে যা আছে, তা জানতে হলে 'মুক্তচিন্তার' কোন দরকার নেই; আবুল হাবুল যা লিখেছে, সেটা শিখে ফেললেই হলো!
বইতে যা বলা হয়েছে তার থেকে বেশী জানতে হলে, সেই বিষয়ে বেশী বুঝতে হলে, সেই বিষয়ে রিচার্চ করতে হবে; রিচার্চ করলে নতুন নতুন মডেল সামনে আসবে, ফলাফল বদলাবে বা নতুন কিছু যোগ বিয়োগের সম্ভাবনা দেখা দিবে; তখন প্রতিস্ঠিত ভাবনাকে হয়তো বদলাতে হবে; যদি ভাবনায় নতুন ফলাফলকে মেনে নেয়ার মত মন থেকে, সেটাই মুক্তচিন্তা।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৯