পাকী মিলিটারী ও পরাজিত জামাত ব্যতিত, দেশে বিদেশে শেখ সাহেবের ব্যক্তিগত শত্রু ছিল না; জাসদ ক্রমেই ব্যক্তি শেখ মুজিবের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিলো; কিন্তু শেখ সাহেবের উপর আঘাত হানার মতো ক্ষমতা তাদের ছিল না। কিন্তু ১৯৭৫ সালে, ছোট একটা শব্দ, "বাকশাল" হঠাৎ করে শেখ সাহেবের প্রাণের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ালো; শব্দটা পশ্চিমের পছন্দ হয়নি; পশ্চিম সব সময় তৃতীয় বিশ্বে কিছু করতে হলে স্হানীয়দের ভাড়া নেয়; আমাদের মিলিটারী থেকে কিছু লোক বিক্রয় হয়ে গেলো।
১৫ই আগস্টে পশ্চিমের ভাড়াটিয়ারা শেখ সাহেবকে হত্যা করলো; যারা হতয়া করলো, এদের সবাই কোন না কোনভাবে শেখ সাহেব দ্বারা উপকৃত হয়েছিল, উনার পরিবারের যাওয়া আসা ছিল এসব ঘেসো-সাপদের।
শেখ সাহেবকে হত্যা করার পর, পশ্চিমের কেনা মিডিয়া ও মলিটারী রটনা করলো যে, শেখ সাহেব রাজার মতো আজীবনের জন্য ক্ষমতা দখল করেছিলেন। মানুষ এই ঘটনার আগে শেখ সাহেবের তুঘলকি কর্মকান্ডে কিছুটা আস্হা হারায়েছিল উনার উপর। শেখ সাহেব কিছু বাংগালী থেকে বুদ্ধিমান হলেও আধুনিক বিশ্বের জন্য একজন সাধারণ বাংগালী ছিলেন মাত্র; কিন্তু সব বাংগালীরা চেয়েছিল যে, উনি যেন সুপারম্যান হয়ে সবকিছুর সমাধান ১ দিনে দিয়ে দেন।
শেখ সাহেবের মৃত্যুর পর, মিলিটারী নিজেই 'বহুদলীয় গণতন্ত্র' আবিস্কার করেন, বাংলার জন্য আলাউদ্দিনের প্রদ্বীপ; এর আগে আমাদের মিলিটারীর পুরাতন আব্বাজান আইয়ুব খান 'মৌলিক গণতন্ত্র' আবিস্কার করেছিলেন; আইয়ুব খান উনার মৌলিক ফৌলিক নিয়ে শান্তিতে থাকতে পারেননি; তখন মওলানা ভাসানী পুরোপুরি বুড়ো হননি।
যাক, বহুদলীয় গণতন্ত্র ২০০৬ সাল অবধি ভালো ফল দিয়েছে; এমন কি পাকী পক্ষের যুদ্ধাপরাধীরাও আমাদের মন্ত্রী সভায় স্হান পেয়েছিলেন; এর থেকে বড় গণতন্ত্র বিশ্বে আর কোথায় আছে?
এখন মনে হচ্ছে, শেখ হাসিনা ১৯৭৫ সালের গণতন্ত্রের আবিস্কারকদের পেটেন্ট আর ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না; অন্ততপক্ষে সাময়িকভাবে হলেও।
বহুদলীয় গণতন্ত্রের আবিস্কারকদের কিছুটা থামাতে প্রায় ৪০ বছর সময় লেগেছে; এবং থামাতে গিয়ে তিনি অনেক নিয়ম ইতয়াদি নিজেও ভাংছেন; আশাকরি, এটা সাময়িক হবে; কারণ, জাতি কাজ করতে চায়, নিজকে গড়তে চায়, এবং সেটার জন্য সঠিক রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরায়ে আনতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৮