প্রেসিডেন্ট জিয়া খাবারের মেনু সবাইকে জানিয়ে রাখতেন। দুপুরে খাবার মেনুতে মাছ, ডাল, ভাত আর ফিরনি থাকত। রাত্রের বেলায় বঙ্গভবনে নান রুটি, গরুর মাংস, ডাল আর ফিরনি থাকত। মন্ত্রীরা কেবিনেট মিটিংয়ের পরে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে খেতেন। একমাত্র শাহ আজিজ সাহেব ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি বলতেন, স্যার, আমি এসব খেতে পারি না। বাসায় গিয়ে খাব।
জাতীয় পার্টি দলীয় এমপি এ.কে.এম মাঈদুল ইসলাম মুকুল তার লেখা ‘আত্মসত্তার রাজনীতি এবং আমার ভাবনা’ শীর্ষক গ্রন্থে এসব কথা লিখেছেন। তিনি জিয়াউর রহমানের কেবিনেটের সদস্য ছিলেন।
এ.কে.এম মাঈদুল ইসলাম মুকুল আরও লিখেছেন, একবার প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে রংপুরে খাল কাটার প্রোগ্রামে গেলাম। আড়াইটা পর্যন্ত খাল কাটার কাজ চলল। আমাদের প্রচন্ড ক্ষুধা পেয়েছিল। রংপুর সুগার মিলের গেস্ট হাউজে খাবারের আয়োজন করা হলো। সেখানে পোলাও মুরগি ইত্যাদিসহ ৬/৭ রকমের আইটেমের খুব ব্যয়বহুল খাবার এনে সামনে দেয়া হলো। এমন সময় বিয়ের বাড়ির মত এক বেয়ারা মুরগির রোস্ট নিয়ে এলো।
এটা দেখে প্রেসিডেন্ট সাহেব এডিসি সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেন, এত খাবারের আয়োজন কেন করা হয়েছে, আগে খাবারের মেনু পাঠানো হয়নি কেন? এডিসি সাহেব বললেন, মিলের জেনারেল ম্যানেজার সাহেব এসব ব্যবস্থা করেছেন। পরে প্রেসিডেন্ট সাহেব জিএম সাহেবকে ডাকলেন এবং বললেন, গতবার মিলের কত টাকা লাভ হয়েছে।
জিএম সাহেব বললেন, স্যার গতবার মিলের দেড় কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। প্রেসিডেন্ট সাহেব এসব দামি খাবার দেখে বললেন, এতগুলো খাবার তৈরি করা হয়েছে কার টাকায়? আপনার বাবার টাকায়? তারপর না খেয়ে প্রেসিডেন্ট সাহেব চলে আসলেন। কারও আর খাওয়া হলো না। তারপর হেলিকপ্টার থেকে নেমে হাত বুলিয়ে আমাকে বললেন, সরি মাঈদুল ইসলাম, আজকে খাওয়া হলো না। আমি বললাম, স্যার আপনি খেলেন না। আমি আর কি খাব।
মানবজমিন থেকে সংগ্রহিত
লেখাটি ভালো লাগলো তাই শেয়ার করলাম। দয়া করে খারাপ মন্তব্য করবেন না।