somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‌আশাভঙ্গ এবং কিছু বাস্তবতা...

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারত: ৩৭০/৪(৫০)
বাংলাদেশ: ২৮৩/৯(৫০)
ফলাফল: ভারত ৮৭ রানে জয়ী...

স্কোর ক্রিকেটের খুব মজার একটা বিষয়। একসাথে যেমন পুরো চিত্রটা তুলে ধরে তেমনি আবার তুলে ধরেনা অনেক কিছুই। স্কোর কখনো তুলে ধরবেনা শেবাগের ঔধত্য, দাপট, অহংকার আর অমানবীয়-হিংস্র ব্যাটিং, তেমনি তুলে ধরবেনা বাংলাদেশী বোলারদের অসহায় আত্মসমর্পণ..। ঠিক তেমনি স্কোর কার্ড কখনোই তুলে ধরবেনা কিছুটা নিষ্প্রভ তামিমের দাঁত কামড়ে লড়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস, আর সাকিব-রকিবুলদের সাধ্যমত ব্যাটিং প্রয়াস। কিন্তু শেষমেষ মুখ্য হয়ে দাঁড়ায় ওই স্কোরটাই..। ভারত ৮৭ রানে জয়ী..

কালকের খেলা আসলে আমাদেরকে জাতিগত ভাবে একটা নাড়া দিয়ে গেল। অনেক স্বপ্নের-নিজের দেশের মাটিতে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জয়টাই প্রত্যাশিত ছিল আমার মতোই বাকি সকলের। আমাদের আশার ফানুসে বড়সড় একটা খোঁচা খেয়ে, পুরো ফানুসটাই যেন মিইয়ে গেছে। স্বপ্নগুলোও কেমন যেন ফ্যাকাশে হয়ে গেল বাকি সময়গুলোর জন্য..।

তারপরও আমরা জাতিগত ভাবে অনেক বেশী আবেগী। দুই দলের ভিতর শক্তির পার্থক্য যতই বেশী হোক না কেন, মন সেটা না মেনে কল্পনায় মেতে উঠতে চায়! আমাদের আবেগ আমাদেরকে স্বপ্ন দেখায় জয়ী হওয়ার আর বাস্তবতা আমাদের কে দেখিয়ে দেয় তার নগ্ন রূপ। কিন্তু কাল আমাদের ছেলেদের বোলিং বিভাগের অসহায় আত্মসমর্পণ কি একটুও অপ্রীতিকর নয়??? এই যে বোলিং সংকট, তার দায়ভার কি অনেকখানি কোচ-নির্ধারকদের উপর বর্তায়না..??? কিন্তু কেন এই সমস্যা??? প্রধান কিছু কারণ হতে পারে এরকম-

১। কোচ জেমি সিডন্স যতই ভালো হোন না কেন, তার কর্তৃত্ব বজায় রাখতে গিয়ে বাদ দিয়েছেন অভিজ্ঞ মাশরাফিকে। মাশরাফি অনেক সিনিয়র, অভিজ্ঞ, দলে তার একটা ভুমিকা রয়েছে। মাশরাফি যদি বাদ যায় তাহলে আশরাফুল, রাসেল(বোলার), নাফিস সবাইকেই ইচ্ছা মতো বাদ দেওয়া যবে। অথচ রাসেল গত বিশ্বকাপে খুবই ভালো বোলিং করেছিল এবং তার এবারের প্রিমিয়ার লীগের পারফর্মেন্সও অন্তত শফিউলের থেকে ঢের ভালো ছিল। সেই সাথে ১৮/২/২০১১ তারিখে প্রথম আলোসহ সব পত্রিকাতেই বলা হয়েছে যে, মাশরাফি এখন পূর্ণ গতি এবং ছন্দে বোলিং করছেন।
২। সাকিবের সাথে মাশরাফির দ্বৈরথ। বেশ কিছুদিন ধরেই পত্র-পত্রিকাসহ মিডিয়াতে বেশ একটা ঠান্ডা লড়াই চলে আসছে। বেপারটাকে আরো উশকে দিয়েছিল প্রথম আলো-যুগান্তর সহ বেশ কিছু দৈনিক। সাবেকদের মন্তব্য নিয়ে রীতিমত বেশ আনুষ্ঠানিক একটা "মজায়" পরিণত করেছিল "কে হবে অধিনায়ক"!!! আর সিডন্স এই সুযোগটাই নিয়ে সাকিবকে করে তুললেন "অধিনায়ক" আর মাশরাফিকে করে দিলেন "জিরো"।
৩। আশরাফুল-বাংলাদেশের অন্যতম এক প্রতিভা। কোন ফুলকে যদি ফুটে ওঠার আগেই নষ্ট করে দেয়া হয়, তাহলে যেমনটি ঘটতে পারে, ঠিক তেমনি ঘটেছে এই তরুণটির সাথে। সবাই যেমন টেন্ডুলকার হতে পারেনা, তেমনি সবাই আশরাফুল ও হতে পরবেনা। অথচ এই আশরাফুলকে বয়ে নিয়ে বেড়াতে হয়েছে টেন্ডুলকারের ছায়া, তার বদলে যা হয়েছে তা হল সে নিজেকেই নিজে পাল্টে ফেলেছে। পাল্টে ফেলেছে বললে ভুল হয়, সে আসলে নিজেকে "হারিয়ে ফেলেছে"। গতকালের ম্যাচে না নেওয়ার পর সেই হতাশাটা আরও বেড়েছে।
৪। শাহরিয়ার নাফিস, সৈয়দ রাসেল(সম্ভবত), আফতাব আহমেদ, অলক কাপালি, ধীমান ঘোষ, রাজিন সালেহ.. কতগুলো উজ্জ্বল নাম-স্বপ্ন আর হতাশার গল্প। হীন এবং কুটিল ভারতের "আইসিএল" ফাঁদে পা দিয়ে তারা যে পথচ্যুত হয়েছেন, সেই পথকে মসৃণ করার কোন চেষ্টাই বিসিবি করে নি। পাকিস্তান ঠিক একই ফাঁদে পড়লেও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে দেরী না করে ফিরিয়ে এনেছে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারদের। আর বিসিবি ক্রিকেটারদেরকে ভুলে গিয়ে শাস্তি দিয়ে তাদের কর্তব্য-দায় দুটোই সেরেছে। কালকে যখন ম্যাচ দেখছিলাম তখন বারবার মনে হচ্ছিল.. ইশ! এখন যদি আফতাব থাকতো! রকিবুলের বদলে যদি অলক থাকতো!! জ্ঞান-গুণ বিহীন মুশুফিকুর রহিমের বদলে যদি ধীমান থাকতো! তাহলে কালকের ম্যাচের চেহারা অন্য রকম হতে বাধ্য থাকতো।

সব মিলিয়ে শেষে হতাশা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট থাকেনা। বারবার মনে হয় ইশ! যদি মাশরাফি থাকতেন!!! আর এ কথা আমার নয়-ভারত কাপ্তান ধোনিরেও!! ধোনি তো সংবাদ সম্মেলনে বলেই বসেছিলেন, এবার তো মাশরাফি নেই। দেখা যাক বাংলাদেশ কতদূর কি করতে পারে!!!

তাহলে কি আমরা আর স্বপ্ন দেখবো না??? এ প্রশ্নের উত্তর কে দিবে- বিসিবি না জেমি সি
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:৫৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×