নয় বছর ধরে অবৈধভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ ধরে আছেন নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস
সন্তোষ শর্মা ও মজুমদার বাবু: গ্রামীণ ব্যাংকের সার্ভিস রুল অনুসারে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কর্মরত থাকতে পারেন। কিন্তু ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বর্তমান বয়স প্রায় ৬৯। যা সার্ভিস রুলের পরিপন্থি। এ হিসাবে বিগত ৯ বছর ধরে অবৈধভাবে তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বহাল আছেন। এর আগে ২০০০ সালেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর বিশদ পরিদর্শন প্রতিবেদন’-এ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বয়সের মেয়াদ উত্তীর্ণের বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গ্রামীণ ব্যাংক অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ ও পরবর্তীকালে সংশোধীত অধ্যাদেশ ১৯৯০-এর ধারা ১৪ অনুযায়ী, গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একজন সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যাংকের বিধিবিধান মেনে চলবেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হওয়ায় তার ক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠানটির সার্ভিস রুল অনুযায়ী চাকরির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬০ বছর প্রযোজ্য। তাই ১৯৪০ সালে জš§ নেয়া ড. মূহাম্মদ ইউনূসের বয়স বর্তমানে ৬৯ হওয়া সত্তে¡ও তিনি প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে বহাল থাকা প্রতিষ্ঠানটির সার্ভিস রুল পরিপন্থি। এছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক আইন দ্বারা সৃষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে প্রধান নির্বাহীর মেয়াদ অনির্দিষ্ট হতে পারে না। আইনে উলিøখিত বয়সসীমার সীমাবদ্ধতার কারণে ড. ইউনূসের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বিগত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দীন আহমদ এবং এসইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান ও বিগত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবিএম মির্জ্জা আজিজুল ইসলামকে স্বীয় পদ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে।
এদিকে গ্রামীণ ব্যাংক অর্ডিন্যান্স ১৯৮৩ (১৯৯০ পর্যন্ত সংশোধিত) অনুযায়ী, বোর্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেবে এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেয়া হলেও পরে তার মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীপাল চন্দ্র বড়-য়া’র সঙ্গে একাধিকবার টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি বলেন, বর্তমানে পারিবারিক কারণে আমি মানসিকভাবে চাপের মধ্যে আছি। আমি এ বিষয়ে কথা বলতে পারব না।
তথ্যসূত্র