somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একুশে ফেব্রুয়ারি: এক মহান উপাখ্যান যেভাবে স্বপ্ন থেকে সত্যি হলো

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি?" একুশে ফেব্রুয়ারি ভোলার মত নয়, কিছুতেই ভোলা যায় না-- বাংলাদেশের ইতিহাসে এ এক অনন্য গৌরব-গাঁথা। আমরা বাঙালিরা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি, এই জীবনের বদলে পেয়েছি বাংলায় "মা" বলে ডাকার অধিকার। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি (আটই ফাল্গুন, ১৩৫৯ বাংলা) সূচিত হয়েছিল যে গণজাগরণ আর চেতনার উন্মেষ-- তার ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে একাত্তরের সুদীর্ঘ নয়মাসের যুদ্ধের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ-- বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি জাতীয় শোক দিবস আর জাতীয় শহীদ দিবস হিসাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে। একই পথ পরিক্রমায় অবশেষে ২০০০ সাল থেকে এই দিনটিতে সারা বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

বাংলা ভাষা এবং একুশ-- ইতিহাস কথা বলে:

বাংলা ভাষার ইতিহাস প্রাচীন-- বাংলাদেশ, ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা নিয়ে গঠিত বঙ্গ অঞ্চলের বাঙালি অধিবাসীর মাতৃভাষা বাংলা। এছাড়া ভারতের অসম রাজ্যের দক্ষিণাংশে, এবং ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অধিকাংশ অধিবাসী বাংলা ভাষায় কথা বলে থাকেন। বর্তমানে বাংলাভাষী মানুষের সংখ্যা প্রায় তেইশ কোটি, ভাষক সংখ্যার বিচারে বাংলা এখন পৃথিবীর সপ্তম ভাষা। তবে ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে সুষ্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় যে, গত শতাব্দীতে বাংলা ভাষা বাঙালি জাতীয়তাবাদ গঠনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ব্রিটিশ পরাধীনতার সময়েই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীর প্রমাণ পাওয়া যায়। ১৯১৮ সালে প্রখ্যাত ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষাকে অবিভক্ত ভারতের রাষ্ট্রভাষার মর্যাদাদানের দাবি জানিয়েছিলেন। ১৯২১ সালে নবাব সৈয়দ নবাব আলী চৌধুরী বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছে লিখিত প্রস্তাব পেশ করেন। ১৯৩৭ সালের ২৩ এপ্রিলে সেই সূত্র ধরেই দৈনিক আজাদ ‘ভারতের রাষ্ট্রভাষা' শীর্ষক এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানায়। এছাড়াও দৈনিক ইত্তেহাদ, সাপ্তাহিক মিল্লাত, মাসিক সওগাত, মাসিক মোহাম্মদীতে অনেকের রচনাতে এবং মুজিবুর রহমান খাঁর 'পাকিস্তান', হাবীবুল্লাহ বাহারের 'পাকিস্তান', তালেবুর রহমানের 'পাকিস্তানবাদের ক্রমবিকাশ' এবং 'সর্বহারাদের পাকিস্তান' ইত্যাদি গ্রন্থেও এই দাবীর প্রমাণ মেলে। (সূত্র : আটচল্লিশের ভাষা আন্দোলন, ধীরেন দত্তের প্রস্তাব ও আজাদ-এর সমর্থন, মোহাম্মদ মাহফুজউল্লাহ, দৈনিক জনকণ্ঠ, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৪)। তবে এই দাবী মূলতঃ কলমযুদ্ধেই সীমাবদ্ধ ছিল, যা রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয় ১৯৪৭ সালের দেশ-বিভাগের পর।

পাকিস্তান আমলে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে দু'দফা আন্দোলন হয়েছিল-- প্রথমবার ১৯৪৮ সালে এবং দ্বিতীয়বার ১৯৫২ সালে। তখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পাকিস্তান' নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়নি, ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসের কথা। এ সময় দাক্ষিণাত্যের নিজাম শাসিত হায়দ্রাবাদের অন্তর্গত সেকেন্দ্রবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে প্রধান অতিথির ভাষণে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দিন আহমদ প্রস্তাবিত পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুর পক্ষে দারুণভাবে ওকালতি করে বলেন, "ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সংহতি বজায় রাখার জন্য যেমন হিন্দি ভাষাকে সেই দেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেয়ার বিষয়টি এক রকমভাবে চূড়ান্ত হয়ে গেছে, ঠিক তেমনিভাবে প্রস্তাবিত পাকিস্তানের সংহতি রক্ষার লক্ষ্যে উর্দুকেই পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার বিষয়টিও চূড়ান্ত করা অপরিহার্য।" কিন্তু ড. জিয়াউদ্দিন কৌশলগতভাবে যে কথাটি এড়িয়ে গেছেন তা হলো, যেখানে ভারতের সংখ্যাধিক্য লোকের মাতৃভাষা হিন্দি, সেখানে পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু লোকের (শতকরা ৫৪- ৫৬ ভাগ) মাতৃভাষা বাংলা। ড. জিয়াউদ্দিনের এ ধরনের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন কলকাতা থেকে প্রখ্যাত ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। ১৯৪৭ সালের ২৯ জুলাই কলকাতার দৈনিক আজাদ-এ ড. মোঃ শহীদুল্লাহর 'পাকিস্তানের ভাষা সমস্যা' নামে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার দাবিকে অগ্রগণ্য উল্লেখপূর্বক লিখেন, ‘যদি এরপরেও অন্য কোন ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতিদানের কথা উঠে, শুধু তা হলেই উর্দুর কথা চিন্তা করা যেতে পারে।' তার এই বক্তব্য সে আমলে দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।


১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভাগ হল ব্রিটিশ ভারত-- তৈরি হল ভারত ও পাকিস্তান। পাকিস্তান আবার দুটি খন্ডে বিভক্ত-- পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান। এই দুই ভূ-খন্ডের ভেতর ভৌগলিক দূরত্ব ছিল ১৮০০ কিঃমিঃ; আর ভাষা- কৃষ্টি- সংস্কৃতির ব্যবধান ছিল যোজন যোজন। বহু জাতিসত্ত্বা নিয়ে গড়া তৎকালীন পাকিস্তানের মাত্র ৬ শতাংশের ভাষা ছিল উর্দু, যেখানে ৫৪ শতাংশ মানুষের মাতৃভাষা ছিল বাংলা। বাঙালির আত্ম-অম্বেষায় ভাষাচেতনার যে উন্মেষ, তারই সূত্র ধরে পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকায় ১৯৪৭ সালের নভেম্বর- ডিসেম্বরে ভাষা-বিক্ষোভ শুরু হয়। তমদ্দুন মজলিস "পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কি হবে? বাংলা নাকি উর্দু?" নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ এ, যেখানে সর্বপ্রথম বাংলাকে পাকিস্তানের একটি রাষ্ট্রভাষা হিসাবে ঘোষণা করার দাবী করা হয়। তমদ্দুন মজলিশের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আবুল কাশেম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কি হওয়া উচিত সে ব্যাপারে একটি সভা আহবান করেন, যেখানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে পাকিস্তান সরকারের কাছে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য সেই সময়ে সরকারী কাজকর্ম ছাড়াও সকল ডাকটিকেট, পোষ্টকার্ড, ট্রেন টিকেটে কেবলমাত্র উর্দু এবং ইংরেজিতে লেখা থাকতো। তবে ইতিহাসে তমদ্দুন মজলিশের ভূমিকা বিতর্কিত এবং এই সংগঠন সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ১৯৪৮ সালে রেসকোর্স ময়দানে গভর্ণর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা দেন, "উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা"। এই অন্যায্য সিদ্ধান্তে তখন ক্ষোভে ফেটে পড়ে পূর্ব বাংলার সাধারণ জনগণ-- বাংলা ভাষার সমমর্যাদার দাবীতে সেই সময়ে সীমিত পর্যায়ে আন্দোলন হয় এবং ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারিতে তার চরম প্রকাশ ঘটে।

বায়ান্ন' এবং পরবর্তী কিছু খন্ডচিত্রঃ

২০শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২। আন্দোলন দমিয়ে রাখতে সেদিন ১৪৪ ধারা আইন জারী করা হয়। নিষিদ্ধ করা হয় সকল প্রকার সভা সমাবেশ ও মিছিল, গ্রেফতার করা হয় একের পর এক ছাত্রনেতাকে।

২১শে ফেব্রুয়ারি। সকাল থেকে ছাত্ররা সমবেত হতে থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে-- ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবী নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন এবং একসময় পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের অভিমুখে রাজপথে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে বেশ কয়েকজন তরুণ হতাহত হন। আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, রফিকউদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থলেই শহীদ হন । পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে আবদুস সালাম ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীনে ছিলেন এবং দেড় মাস পর ৭ ই এপ্রিল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এ সব ঘটনার প্রতিবাদে সেদিন ক্ষুব্ধ ঢাকাবাসী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে সমবেত হন।

২২শে ফেব্রুয়ারি। নানা বাধা উপেক্ষা করে ছাত্রদের পাশাপাশি হাজার হাজার সাধারণ মানুষ আবারো রাজপথে নেমে আসেন। তারা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে শহীদদের জন্য অনুষ্ঠিত গায়েবি জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। একই দিনে আবারো পুলিশ দ্বারা আক্রমণ ও হত্যার বিভিন্ন ঘটনা ঘটে। নবাবপুর রোডের বিশাল জানাজার মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে শহীদ হন ঢাকা হাইকোর্টের কর্মচারী শফিউর রহমান, ওয়াহিদুল্লাহ এবং আবদুল আউয়াল। একই রাস্তায় অহিদুল্লাহ নামে নয় বছরের এক বালকের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ কিছু লাশ কৌশলে সরিয়ে ফেলে বলে জনশ্রুতি আছে। এই দিনে পুরান ঢাকার মিছিল থেকে উর্দুর পক্ষ নেয়া মর্নিং নিউজ এর প্রেসে আগুন দেয়া হয়।

২৩শে ফেব্রুয়ারি। ভাষাশহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য এক রাতের মধ্যে মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠে একটি স্মৃতিস্তম্ভ-- কাজ শেষ হয় ২৪ তারিখ ভোরে। তাতে একটি হাতে লেখা কাগজ গেঁথে দেয়া হয়, যাতে লেখা ছিল "শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ"। শহীদ মিনার নির্মাণের খবর দৈনিক সংবাদপত্রগুলোতে পাঠানো হয় ঐ দিনই। "শহীদ বীরের স্মৃতিতে" - এই শিরোনামে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় ছাপা হয় শহীদ মিনারের খবর। মিনারটি তৈরি হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র হোস্টেলের (ব্যারাক) বারো নম্বর শেডের পূর্ব প্রান্তে। মিনার তৈরির তদারকিতে ছিলেন জিএস শরফুদ্দিন (ইঞ্জিনিয়ার শরফুদ্দিন নামে পরিচিত), নকশা অঙ্কন করেছিলেন বদিউল আলম। তাঁদের সাথে ছিলেন সাঈদ হায়দার। শহীদ মিনার নির্মাণে সহযোগিতা করেন দুইজন রাজমিস্ত্রী।

২৪শে ফেব্রুয়ারি। এদিন সকালে শহীদ শফিউরের পিতা অনানুষ্ঠানিকভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন।

২৫শে ফেব্রুয়ারি। আবুল বরকতের ভাই একটি হত্যা মামলা দায়ের করার চেষ্টা করেন, কিন্তু উপযুক্ত কাগজের অভাব দেখিয়ে সরকার মামলাটি গ্রহণ করেনি। রফিকউদ্দিন আহমদের পরিবার একই ধরণের একটি প্রচেষ্টা নিলে, ঐ একই কারণে তাও বাতিল হয়।

২৬শে ফেব্রুয়ারি। পুলিশ ও পাকিস্তান সেনাবাহিনী মেডিক্যালের ছাত্রদের আবাসিক হোস্টেল ঘিরে ফেলে এবং প্রথম শহীদ মিনার ভেঙে ফেলে। এরপর ঢাকা কলেজেও একটি শহীদ মিনার তৈরি করা হয়, এটিও একসময় সরকারের নির্দেশে ভেঙে ফেলা হয়।

৮ই এপ্রিল। সরকার তদন্ত শুরু করে-- কিন্তু এর প্রতিবেদনে মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রদের উপর গুলি করার কোনো উল্লেখযোগ্য কারণ দেখাতে পারেনি। সরকারের প্রতিশ্রুত প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ প্রত্যাখান করে।

১৪ই এপ্রিল। গণপরিষদের অধিবেশন শুরু হলে রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নটি অবিসংবাদিতরূপে সামনে চলে আসে।

মূলতঃ ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ১৯৫৩ সাল থেকে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখে মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৯ই মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দেয়া হয়। বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয় ১৯৫৬ সালের ২৯ শে ফেব্রুয়ারি। সংবিধানের ২১৪(১) অধ্যায়ে রাষ্ট্রভাষা সম্পর্কে লেখা হয়:
214.(1) The state language of Pakistan shall be Urdu and Bengali.
[২১৪. (১) উর্দু এবং বাংলা হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।]

১৯৫৭ সালে সরকারিভাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাজ শুরু হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির তত্ত্বাবধানে ১৯৬৩ সালে শহীদ মিনারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ১৯৬৩ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী শহীদ বরকতের মা উক্ত মিনারটি উদ্বোধন করেন।

একুশ এখন যেমনঃ

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় ২১শে ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা এক মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে একাধিক্রমে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষকবৃন্দ, ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। শহীদ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এইদিনে রেডিও, টেলিভিশন এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দেশের সংবাদপত্রগুলিও বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে গ্রন্থমেলা অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ সরকার বাংলা ভাষা আন্দোলনকে ঘিরে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের একুশে পদক প্রদান করে।

ভাষা আন্দোলনে বাংলার নারীর ভূমিকাঃ


(১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে ১৪৪ ধারা ভংগ করে বেরিয়ে আসা মেয়েদের মিছিলঃ Click This Link )

ভাষা আন্দোলনে বাংলার নারীরাও অগ্রবর্তী ভূমিকা রেখেছিলেন, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ গৃহিণীরাও পর্যন্ত সে সময় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ভাষা সৈনিকেরা পরবর্তীতে অকপটে স্বীকার করেছেন ছাত্রজনতার পাশাপাশি এই ভাষাকন্যাদের বীরত্বমন্ডিত গাঁথা, তাঁদের স্বতঃস্ফুর্ত বলিষ্ঠ অবদান। বায়ান্ন'র ২১ শে ফেব্রুয়ারীতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে প্রথম রাজপথে নেমে আসেন যারা-- তা ছিল দশজন করে মেয়েদের তিনটি দল। এঁদের তৃতীয় দলটি সর্বপ্রথম পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। পরে অবশ্য তাঁদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে এই বীর কন্যাদেরকে নিয়ে গবেষণাধর্মী কাজ হয়েছে খুব কম; বদরুদ্দীন ওমরের ‘ভাষা আন্দোলন প্রসঙ্গঃ কতিপয় দলিল’, আহমেদ রফিকের ‘একুশের ইতিহাস আমাদের ইতিহাস’, তুষার আবদুল্লাহ সম্পাদিত নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা থেকে প্রকাশিত ‘বায়ান্নর ভাষাকন্যা’ বইগুলো সেই স্বল্পসংখ্যক বইগুলোর ভেতর উল্লেখযোগ্য। বায়ান্নর ভাষাকন্যা’ বইটিতে ১৭ জন ভাষা কন্যাকে তুলে ধরা হয়েছে ভাষা আন্দোলনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে; তাঁরা হলেন-- রওশন আরা বাচ্চু, সুফিয়া খান, সারা তৈফুর, ডঃ শরিফা খাতুন, হালিমা খাতুন, প্রতিভা মুৎসুদ্দি, কায়সার সিদ্দিকী, মোসলেমা খাতুন, সুফিয়া আহমেদ, গুলে ফেরদৌস, মনোয়ারা ইসলাম, রওশন জাহান হোসেন, কাজী খালেদা খাতুন, রওশন আহমেদ দোলন, হোসনে আরা বেগম, জুলেখা হক ও নাদেরা বেগম প্রমুখ। নাদেরা বেগম ভাষা আন্দোলনে ছাত্রীদের পক্ষে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে কারারুদ্ধ হয়ে কঠিন নির্যাতন ভোগ করেছিলেন। নারায়ণগঞ্জ মডার্ণ গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকেও একই কারণে গ্রেফতার করা হয়-- এই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল এবং তাকে যাতে ঢাকায় নিয়ে না যেতে পারে সেজন্য কয়েক মাইলব্যাপী রাস্তায় শত শত গাছ কেটে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছিল। নাদেরার স্বামী তাঁকে মুক্ত করার চেষ্টা করেন, কিন্তু বন্ড সই করে মুক্তিলাভে নাদেরা অস্বীকৃতি জানালে তার স্বামী তাঁকে ডিভোর্স দেন। স্কুলে কালো পতাকা উত্তোলনের অপরাধে সিলেটে সালেহা বেগমকে সেখানকার ডিসির নির্দেশে তিন বছরের জন্য স্কুল থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল।

২১শে ফেব্রুয়ারি যেভাবে "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস" হলোঃ

বায়ান্ন'র প্রায় ছেচল্লিশ বছর পর, ১৯৯৮ সালের ৯ই জানুয়ারী কানাডার ভ্যাঙ্কুভারনিবাসী বসবাসরত বাঙালি জনাব রফিকুল ইসলাম এক চিঠি লেখেন জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানের কাছে। এতে তিনি ১৯৫২ সালে ভাষা শহীদদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন, সেইসাথে মহাসচিবকে প্রস্তাব করেন ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য। জাতিসংঘের তৎকালীন সেক্রেটারী জেনারেলের প্রধান তথ্য কর্মচারী হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশী জনাব হাসান ফেরদৌস। এ চিঠিটি তাঁর নজরে এলে জাতিসংঘের অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকেও একই ধরনের প্রস্তাব আনার ব্যবস্থা করার জন্য তিনি সুপারিশ করেন। রফিক মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন-- আন্তর্জাতিকভাবে মাতৃভাষার মর্যাদা আদায়ের লক্ষ্যে এই সময়ে এক অন্যরকম যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন সহযোদ্ধা আব্দুস সালামকে সাথে নিয়ে। তাঁরা বিভিন্ন দেশের বহুভাষাভাষী সদস্য সম্বলিত "A Group of Mother Language of The World" নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এবার সেই সংগঠনের পক্ষ থেকে কফি আনানকে চিঠি লেখা হয় এবং চিঠির একটি কপি ইউএনও'র ক্যানাডিয়ান অ্যাম্বাসেডর ডেভিড ফাওলারের কাছে প্রেরণ করা হয়। প্রায় একবছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর ১৯৯৯ সালের প্রথমদিকে রফিক এবং সালাম ইউনেস্কোর ভাষা বিভাগের জোশেফ পডের সাথে সাক্ষাতে জোশেফ তাদেরকে ইউনেস্কোর আনা মারিয়ার সাথে কথা বলতে সুপারিশ করেন। আনা মারিয়ার অবদান আমাদেরকে অবশ্যই কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করতে হবে; তিনি যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে ব্যাপারটাকে দেখেন। ১৯৯৯ সালের এপ্রিল মাসে জনাব রফিক এবং জনাব সালামকে জানানো হল, "তোমাদের প্রস্তাবিত এই বিষয়টি খুবই ইন্টেরেস্টিং। ইউনেস্কো এই ধরণের প্রস্তাব পেলে তা আলোচনা করে থাকে। বিষয়টি অক্টোবরে প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য ইউনেস্কো সম্মেলনে উত্থাপন করতে হবে এবং তা কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে হলে চলবে না; কোন সদস্য রাষ্ট্র কর্তৃক এই প্রস্তাব উত্থাপিত হলে তা বিবেচনা করা হবে।"

জনাব রফিকুল ইসলাম এবং জনাব আব্দুস সালাম বিষয়টির সবিস্তার ব্যাখ্যা বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠান। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সে সময় বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী এম এ সাদেক এবং শিক্ষা সচিব কাজী রকিবুদ্দিন, অধ্যাপক কফিলউদ্দিন আহমেদ, মশিউর রহমান (প্রধানমন্ত্রীর সেক্রেটারিয়েটের তৎকালীন ডিরেক্টর), সৈয়দ মোজাম্মেল আলি (ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত), ইকতিয়ার চৌধুরী (কাউন্সিলর), তোজাম্মেল হক (ইউনেস্কোর সেক্রেটারি জেনারেলের শীর্ষ উপদেষ্টা) সহ আরও অনেকেই প্রস্তাবটির স্বপক্ষে আরো ২৯ টি দেশের সমর্থন আদায়ে জোর প্রচেষ্টা চালান। হাতে সময় ছিল একদমই কম। ১৯৯৯ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনেস্কোর প্রস্তাব উত্থাপনের শেষ দিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন পার্লামেন্টে। তাঁকে ফোন করে অনুরোধ করা হলো তিনি যেন প্রস্তাবটি সই করে ফ্যাক্স করে দেন ইউনেস্কোর দপ্তরে। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্বরিত সিদ্ধান্ত দেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের। "ভাষা এবং সংস্কৃতির বিভিন্নতা সংরক্ষণ" সম্পর্কিত ইউনেস্কোর নীতিমালার আলোকে গঠিত প্রস্তাবনা বাংলাদেশ থেকে ইউনেস্কোর অফিসে অফিসিয়াল সময়সীমা শেষ হবার মাত্র একঘণ্টা আগে ফ্যাক্সবার্তায় পৌঁছায়।

১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ছিল এক ঐতিহাসিক দিন। এই দিনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের বিজ্ঞান, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে (২৬শে অক্টোবর- ১৭ই নভেম্বর) একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে গ্রহণের প্রস্তাব (নম্বর ৩০ সি/ডি/আর-৩৫) উত্থাপন করা হয় সভার প্রথমেই। ইউনেস্কোর অধিবেশনে যোগদানকারী বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য শিক্ষামন্ত্রী জনাব সাদেক, ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী ও ইউনেস্কো মহাপরিচালকের বিশেষ উপদেষ্টা জনাব তোজাম্মেল হকের কূটনৈতিক প্রজ্ঞা, দক্ষতা ও বিচক্ষণতা এ ব্যাপারে মূল্যবান অবদান রাখে। ১৮৮টি দেশ কোন ধরণের বিরোধিতা ছাড়া সাথে সাথেই সমর্থন জানায়। এরপর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৩০তম পূর্ণাংগ অধিবেশনে বাংলাদেশসহ সাতাশটি দেশের সমর্থনে সর্বসম্মতিক্রমে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পায়। এর ফলশ্রুতিতে ২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি সারা বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের সদস্য দেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। সারা বিশ্বজুড়ে আজ সবাই জানতে পারছে বাংলা ভাষার জন্য সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারের আত্মত্যাগের কাহিনী, লাল সবুজ পতাকাশোভিত বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের শাশ্বত ইতিহাস।

একুশ -- একটি স্বপ্নঃ

২১ তাই একটি সংখ্যামাত্র নয়, দিনপঞ্জিকার একটি দিনমাত্র নয়; অমর একুশে আমাদের অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে। একুশের পথ বেয়ে এসেছে চুয়ান্ন'র সাধারণ নির্বাচনে পাক-শাসকদের ভরাডুবি, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান, সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে বাঙালির বিপুল বিজয়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ; এবং অবশেষে পৃথিবীজুড়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন। একুশে মানে তাই মাথা নত না করা। একুশে মানে মৃত্যুকে ভয় না পেয়ে জীবনের গান গেয়ে যাওয়া। একুশে মানে বাঙালির অহংকার। একুশে নিয়ে এই দীর্ঘ ভূমিকার অবতারণার পেছনে আছে আমার অন্তঃস্থলে জেগে থাকা এক স্বপ্নও -- আমরা যেন আমাদের পূর্বপুরুষের এনে দেয়া উপহার এই মাতৃভাষাকে সমুন্নত রাখি। ভাষার সঠিক ব্যবহার না হলে তা খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয়, বা ক্রমশঃ বিলীয়মান হয়ে যায়। বাংলাভাষাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমাদের উচিৎ সঠিকভাবে বাংলা ভাষার ব্যবহার। আপনি বা আমি অন্যান্য যে ভাষাতেই দক্ষতা অর্জন করি না কেন-- ইংরেজী, স্প্যানিশ, জার্মান, হিন্দি, আরবী, উর্দু, চীনা, জাপানীজ- সে যে ভাষাই হোক না কেন, আমরা বাঙালিরা যেন সর্বপ্রথম মাতৃভাষা বাংলাকে শুদ্ধভাবে শিখতে পারি, শুদ্ধভাবে শিখাতে পারি আমাদের উত্তরসূরীকে। এ ব্যাপারে বৃহত্তর সচেতনতা ভীষণভাবে জরুরী।



তথ্যসূত্রঃ

https://en.wikipedia.org/wiki/International_Mother_Language_Day
http://www.un.org/en/events/motherlanguageday/
http://www.bbcbengali.com
https://www.youtube.com/watch?v=m2EkkcYmnfM
https://www.youtube.com/watch?v=m6M3-xbE7W8
https://blog.mukto-mona.com/2010/02/21/5318/
http://www.somewhereinblog.net/mobile/blog/sufia/30015576
http://jolbhumi.blogspot.com/2015/02/blog-post_52.html
(এবং আরও অনেক)



সংযুক্তিঃ

একুশে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, উপলক্ষ্যে সামহোয়্যারইনে ব্লগার অভিমান ইগো এবং ভালোবাসার একুশের সংকলন--
একুশকে ভালোবেসে রাত ১২:০১ মিনিট থেকে লেখা ব্লগারদের লেখাগুলি- শ্রদ্ধা, ভালোবাসার বা নিজস্ব স্বকীয়তা এবং চেতনার প্রতীক
হাসান কালবৈশাখীঃ আমাদের মহান একুশ যে ভাবে হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ( ২০১৫ )
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১১
৭২টি মন্তব্য ৭২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×