somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Observation

২১ শে জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বৌএর সাথে আবার ঝগড়া হলো ..... আজকে যে ঝগড়া হবে এটা ভাবি নি...কারণ আজ শুক্রবার ....সপ্তাহের এই একটা দিন কেন বউ যে ঝগড়া করবে এটা মানতে পারি না... অবস্য বউরা বোধ হয় ভাবে এই একটা দিনই তো আছে আশ মিটিয়ে ঝগড়া করার জন্য.. অন্য দিন তো অফিসে এ চলে যায় ... ঝগড়া করব কখন ?

মেজাজ প্রচন্ড খারাপ করে তাই বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম দুপুরের খাবার না খেয়ে ... আমার বাসা মিরপুর ১০ এ...বাসস্ট্যান্ড এ এসে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকলাম... তারপর খামোখাই একটা বাস এ উঠে পরলাম......এই বাস টা বোধহয় সদরঘাট যাবে.. ঢাকা শহরের অনেক জায়গায় গিয়েছি. বিভিন্ন কারণে যেতে হয়েছে কিন্তু কেন যেন সদরঘাটে যাওয়া হয়নি. আজকে ভাবলাম ঐদিকটা থেকে ঘুরে আশি... ফোনটা সাইলেন্ট করে দিলাম.... আমার সাথে ঝগড়া ..এখন থাক মানসিক কষ্ট নিয়ে........(দুপুরে যে ঠিক খাওয়ার আগে বের হয়ে এসেছি..এটা নিয়ে নিশ্চয়ই একটা মানসিক কষ্ট ফিল করবে...)

বাস দেখি ফাকা ,বেশি পেসেন্জের নাই. ভাবছিলাম কি নিয়ে আজকে ঝগড়া করলাম আসলে কতটুকু দরকার ছিল..ঝগরাটা না হলে নিশ্চয়ই এতক্ষণে দারুন লাঞ্চ হয়ে যেত... বিছানায় চলে আসতাম... কিছুক্ষণ পর ও চলে আস্ত....ধুত সব ওর দোষ ! কেন এত কথা বলে..কেন এক এ কথা বার বার বলে.... আমার ভালো লাগে না..... আজকে ওর কথা ভাবব না..ভাবব অন্য কিছু একদম অন্য কিছু... আছা সদরঘাটে গিয়ে কি করব........? এইসব আবোল তাবোল ভাবতে ভাবতে দেখি অনেকটা পথ চলে এসেছি.... বাস থেকে নেমে কি বাসায় যাব ? না কোনভাবেই না.............

চলে আসলাম সদরঘাট. নামলাম বাস থেকে ....একটু সামনে এগোতেই দেখি একটা পার্ক .নাম "বাহদুর্শাহ পার্ক".. ঢুকে গেলাম পার্ক এ ..কিছুক্ষণ চক্কর দিয়ে বসে পরলাম... একটা সিমেন্ট এর বাধাই করা জায়গায়... ভাবছি কি করব .... একটু মানুষ দেখা যাক.. কয়েকটা বাচ্চা ছেলে এই কড়া রোদে ফুটবল খেলছিল... ভালো খেচ্লছে..কিন্তু আমার ভাবতেই কেমন যেন লাগছিল..এই রোদে একসময় আমিও খেলেছি.... আর আজকে কি অসম্ভবই না লাগছে........ একটা মাঝবয়েসী লোক এই ভর দুপুরে কেডস পরে দৌরাছে .. বেকুব নাকি........ জর আসবে তো গাধাটার......... একটা মেয়ে দেখলাম বসে আছে..একটা এসাইন্মেন্ট নিয়ে .. মনে হয় বান্ধবীর জন্য অপেক্ষা করছে... আহারে... জায়গা আর পেল না... আছা আমাকে দেখেউ লোকজন বোধহয় একই রকম বেকুব ভাবছে তাই না ?... কি করি এখন ? একটু উঠে হাটা শুরু করলাম... আবার চক্কর দিয়ে উঠলাম .........অন্য পাশটাতে গিয়ে বসলাম... ভাবছি কারো সাথে গায়ে পরে গল্প করলে কেমন হয় ? মনে মনে ভাবলাম......একজন মানুষের সাথে কথা বলব আমি.
কিন্তু তার আগে মানুষ টাকে কিছুক্ষণ দূর থেকে দেখে একটা ধারনা করে নিব তারপর কথা বলে দেখব আমার ধারণার সাথে কতটুকু মেলে....... আসে পাশে ইন্টারেস্টিং কাউকে দেখতে পাছিলাম. না .... কাকে ধরি ,কাকে ধরি ? নিজেকে মানুষ ধরা (ছেলেধরার মত ) মনে হছিল..একটা ছেলের দিকে চোখ পড়ল .কালো রং মিডিয়াম হায়িট গান্জাখর টাইপের চেহারা ... গান্জাখর লোকজন সঙ্গ হিসেবে কিন্তু বেশ মজার হয়, কারণ গাজা জিনিসটাই বেশ মজার হয়ত ... কেমন কুজা হয়ে বসে আছে... দেখে রুচি হছিল না কথা বলার জন্য কিন্তু হাতের কাছে আর কাউকে পাছিলাম না ,তাই এই বেকুব্তাকেই টার্গেট করলাম........আমি ছেলেটাকে অবসার্ভ করে যেটা বুঝলাম.. ছেলেটার আত্তবিস্সাশ খুবই কম...নিশ্চয়ই কিছু করে না.. পরিবারের বখাটে সন্তান... গাঁজা খেয়ে খেয়ে ঠোটের নিচের অংশস টা পুড়ে গেছে ... ছেলেটার সবচেয়ে যে জিনিস টা মনে হয় ....এর কোনো লক্ষ্য নাই... কোনো আশা নাই... কোনো স্বপ্ন নাই.. আছে শুধু একটা দিনের পর আরেকটা দিন কাটানোর একটা একঘেয়ে রুটিন ... ছেলেটার কাছে গিয়ে বসলাম... একটা হাসি দিলাম... কোনো মানুষের সাথে কমুনিকেট করার সবচেয়ে ভালো রাস্তা বোধয় এইটাই..একটা হাসি... কোনো প্রশ্ন না, কোনো কৌতুহল না..শুধু একটু হাসি অনেক কিছু সহজ করে দায়.

আমি জিগ্গেস করলাম "আপনি কি এদিকে থাকেন ভাইজান ?"
"না ভাই আমি থাকি মানিকতলা"..মানিকতলা কোথায় ভাই.? "এইত কাছেই ১৫ টাকা রিক্সা ভাড়া"

... এখানে এই দুপুরে এসে বসে আছেন.. কেন ভাই ?
না মানে জুম্মা পড়তে আসছিলাম তো তারপর হোটেলে দুপুরের খাবার খাইলাম... তারপর একটু পার্ক এ বসলাম আরকি ...
" ওহ আছা আছা " আপনার বাড়ি কোথায় ভাই ?
নারায়ন গঞ্জ...
এখানে কার কাছে থাকেন ?
খালাত ভায়ার এর কাছে....
ভাইজান রে কে ডিস্টার্ব করতেছি ?
"না ভাই" বেশ অমায়িক ভাবেই বলল ,বুঝলাম মাইন্ড করবে না বেটা...
আছা আপনি কি করেন ? আমি জুতার দোকানে চাকরি করি ভাই...
ওহ কতদিন?
এইত ধরেন ৮ মাস মত....
ঢাকায় কেমনে আসলেন?
একটা কাহিনী আছে ... আমি আর আমার এক বন্ধু মিলা ব্যবসা করার জন্য বাসা থেকে ২.৫ লাখ টাকা নিছিলাম.. ব্যবসা ভালই চলতে ছিল ,তারপর পার্টনার বেইমানি করে সব টাকা মেরে দিছে .. তখন দুইজন ঢাকায় চলে আসছি টাকা যোগার করার জন্য..তারপর যে ভাই কি একটা কাজ হইছে সেইটা আর বলার না..

কেন ভাই কি হইছে ?
আমি আর আমার বন্ধু দুইজন একসাথে আসলাম.. একদিন আমার বন্ধু সকালে বাইর হইছে আর সারাদিন আসে নাই... এভাবে রাত গেছে তাউ আসে নাই.. তারপর তার আর কোনো খবর নাই.. এরপর হটাত একদিন দেখিও সে পুরা বদলায়া গেছে ..তার গায়ে দামী পোশাক.. সে একটা গাড়ি থেকে নামল... আমারে একটা দামী হোটেলে নিয়ে খাওয়াইল.. তারপর বলল . কেমনে কেমনে যেন সব হয়ে গেছে ... আমি তো অবাক..

কিন্তু আমার ফ্রেন্ড আর কিছু কয় না... খালি বলল আমি খ্রিস্টান হয়ে গেছি ....আমার জীবনে এখন কোনো কিছুর অভাব নাই... আমি আমার পরিবারের কাছে আর কোনো দিন যামু না.. তুই আমার মারে কয়া দিস...এইসব কয়া ওই যে হারাইল আর কোনো খবর পাইলাম না ..'
"তারপর"
তারপর থেকে আমি এর খুঁজে আছি . আমি এরে খুইজা বাইর করুম ই ..
হে এইদিকে একটা গির্জায় আসে. আমি প্রতি রবিবার আইসা বৈসা থাকি. একদিন না একদিন ও আইবই.. তখন আমি অরে ধরমু...ওর কাহিনীটা শুনমু.. তারপর আমি বাড়ি চইলা যামু.. আমি আজকে ৮ মাস ধৈরা এইখানে আসি.. আমি জানি একদিন না একদিন অরে আমি পামুই...

আমার হটাত মনে হলো নিশ্চয়ই ও ওর বন্ধুকে খুঁজে পাবে..
আমি আর জীবনে কাউকে দেখে কোনো কিছু ধারণা করবনা এই প্রতিগ্গা করলাম . আমার আর সহ্য হছিল না.. আমি উঠে গেলাম... তারপর বাড়ির পথ ধরলাম....
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এনসিপিকে আমাদের দেশের তরুণ-যুবা'রা ক্ষমতায় দেখতে চায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৩ রা মে, ২০২৫ রাত ১২:৪৫

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে পাড়া-মহল্লায় জনতার আদালত গঠনের ডাক দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি তথা এনসিপি। দেশের বৃহত্তম ইসলামী দল 'ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ' তথা চর মোনাইয়ের পীর সাহেবের দল এনসিপিকে আগে থেকেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাতৃ ভাণ্ডার

লিখেছেন ঠাকুরমাহমুদ, ০৩ রা মে, ২০২৫ রাত ৩:২৬



আমাদের দেশে মিষ্টি পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া বিরল ব্যাপার। ঢাকা চট্টগ্রাম রুটে যারা যাতায়াত করেন মাতৃ ভাণ্ডারের সাথে পরিচিত নন এমন মানুষও মনে হয় খুব বেশি নেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

এনসিপি জামায়াতের শাখা, এই ভুল ধারণা ত্যাগ করতে হবে

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৩ রা মে, ২০২৫ সকাল ১০:৪৪

প্রিয় রাজীব ভাই,
আপনি আমার আগের পোস্টে কমেন্ট করেছেন যে, এনসিপি জামায়াতের শাখা। আপনার এনালাইসিস ভুল! ওরা জামায়াতের শাখা নয়। এনসিপি-কে বুঝতে হলে, আপনাকে জামায়াতকে জানতে হবে। আমি একটু বিস্তারিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাশ্চাত্যের তথাকথিত নারীবাদ বনাম ইসলাম: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৪

পাশ্চাত্যের তথাকথিত নারীবাদ বনাম ইসলাম: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ

ছবি কৃতজ্ঞতা এআই।

ভূমিকা

নারীর অধিকার নিয়ে আলোচনা ইতিহাসের এক দীর্ঘ অধ্যায়। পাশ্চাত্যে নারী আন্দোলন শুরু হয় ১৮শ শতকের শেষভাগে, যার ফলশ্রুতিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি স্মার্ট জাতির অন্তঃসারশূন্য আত্মজৈবনিক !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪


একটা সময় ছিল, যখন জাতির ভবিষ্যৎ বলতে বোঝানো হতো এমন এক শ্রেণিকে, যারা বই পড়ে, প্রশ্ন তোলে, বিতর্কে অংশ নেয়, আর চিন্তা করে। এখন জাতির ভবিষ্যৎ মানে—ইনফ্লুয়েন্সার। তারা সকাল ১০টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×