
দেশের প্রধান পর্যটননগরী কক্সবাজারে নির্মাণ হচ্ছে দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক মানের অ্যামিউজমেন্ট ক্লাব ও পার্ক। কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের রামু উপজেলার চাইন্দা নামক স্থানে ১০০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে এ ক্লাব। গত ফেব্রুয়ারি মাসে নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলো গতকাল শুক্রবার। স্থানীয় জেলা প্রশাসক আশা করছেন, আন্তর্জাতিক মানের এ ক্লাব স্থাপনের কাজ শেষ হলে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের চেহারাই বদলে যাবে।
ইতিমধ্যে পার্কে অত্যাধুনিক মুভিং রেস্টুরেন্ট, সুইমিং পুল, ঝরনা ঘর, লেক, ঝরনা ছাতা, বাগান, মিনি চিড়িয়াখানা, আধুনিক জিমনেসিয়াম, মিনি শিশু পার্ক, মৎস্য খামারসহ আরো বেশ কিছু অবকাঠামোর নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। তিনি পার্কে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচিরও উদ্বোধন করেন। জেলা প্রশাসক কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশে এই প্রথম এ ধরনের বিশাল এলাকাজুড়ে স্থাপিত হতে যাচ্ছে একটি আন্তর্জাতিকমানের পার্ক। এ পার্ক দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে ভ্রমণে আসা লোকজনের জন্য বাড়তি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা রাখবে।
বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রযোজক ও হাসনাবাদ হাউজিং কম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. নাজিম উদ্দিন এ বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণে বিনিয়োগ করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে আহমদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।
রামু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শহীদ মো. সায়েদুল হক বলেন, দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন এবং সীমান্ত শহর টেকনাফে আসা-যাওয়ার পথেই এ পার্কের অবস্থান। তাই এটি দর্শনে পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত সহজ হবে। সেই সঙ্গে উন্নয়ন হবে পার্ক এলাকার।
অ্যামিউজমেন্ট ক্লাবের চেয়ারম্যান জি এম সরোয়ার কালের কণ্ঠকে জানান, পর্যটন শিল্পকে বিকশিত ও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে কক্সবাজারকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যেই এ পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। পার্কের ব্যবস্থাপক এ এম জি ফেরদৌস বলেন, পার্কে দুই হাজার মানুষের আবাসনের জন্য ১২টি পাঁচতলা ভবন এবং বেশ কিছু ডুপ্লেঙ্ ভবন নির্মাণ করা হবে। এর ফলে পর্যটকদের আবাসন সংকটও অনেকাংশে হ্্রাস পাবে। সেই সঙ্গে দেশে প্রথমবারের মতো পার্কে বসে সিনেমা দেখার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে এখানে।
ক্লাবের কর্ণধার এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম একটি বিনোদনের স্থা্ন হিসেবে গড়ে তোলার যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যামিউজমেন্ট ক্লাব তারই প্রতিধ্বনী। পার্কটি স্থাপনে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সরবরাহের জন্য ইতিমধ্যে ভারতের বিখ্যাত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক ডায়মন্ডের সঙ্গে চুক্তিও সম্পাদিত হয়েছে। পার্কে থাকবে সু-উচ্চ টাওয়ারে অত্যাধুনিক মুভিং রেস্টুরেন্ট, অত্যাধুনিক জিম, বিউটি পারলার, মসজিদ, হাসপাতাল, হেলিপ্যাড, ইলেকট্রনিঙ্ পার্ক, ক্যাবল কার, আন্তর্জাতিকমানের সম্মেলন কেন্দ্র, কৃত্রিম পাহাড়, সামুদ্রিক প্রাণী জাদুঘর, বোটানিক্যাল গার্ডেন, আন্তর্জাতিকমানের স্টুডিও, বিউটি পারলার, একাধিক সুইমিং পুল, ফুডকোর্ট, ওয়াটার পার্ক ছাড়াও ক্রিকেট, ফুটবল, লন টেনিস, ভলিবল, বাস্কেট বল, ব্যাডমিন্টন খেলার মাঠসহ আরো অনেক সুযোগ-সুবিধা। এখানে থাকবে শুটিং ও পিকনিক স্পটও। তদুপরি শিশুদের বিনোদনের জন্য পার্কটি হবে একটি আদর্শ স্থান।
সূত্র: এখানে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১১ সকাল ১০:৪৬