মেয়েটার ছবি দেখে দেখে প্রথমে যেটা মনে হয় ঠিক যেন হলিউডি হরর ফিল্ম থেকে উঠে আসা কোন মানুষ। সাইকো কিলারের হাতে নির্যাতিত হলে যেমনটা দেখায়। রুষ্ট শীর্ণ দেহ, এখনে সেখানে ক্ষত চিহ্ন, ব্লেডের দাগ। মুখে পিঠে পুড়ে যাওয়া চামড়া কালো হয়ে জানান দিচ্ছে মানুষের বর্বরতা। না, আমি কখনো মানুষের সাথে কুকুরের তুলনা করি না। কুকুর প্রজাতী হোমো সেপিয়েন নামক দানব হতে অনেক অনেক উত্তম। কারণ একমাত্র মানুষ প্রজাতীর সদস্যরাই নির্যাতন করে রমণ সুখ অনুভব করে। অনলাইনে আরো ছবি পাবেন, আমি সেগুলো শেয়ার করতে চাই না।
নওরীন জাহান নদী
ছবি - দৈনিক সমকাল
আরো ভয়ংকর লাগে যখন জানতে পারি যে রমনীটি এই (নওরীন জাহান নদী, ২৭) ছোট্ট শিশুটিকে ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে যন্ত্রণা দিতেন তিনি নিজেও একজন মা। তার একটি সন্তান আছে। একজন মা হয়ে কি করে তিনি কি করে এতটা বর্বর হয়ে উঠতে পারলেন? এখানে আসল অপরাধী কে? এর আগেও আমরা ঠিক একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখেছি। গৃহ কত্রী বাসার কাজের জন্য নেয়া শিশুর উপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়ে পত্রিকার শিরোনাম হয়েছেন এটাই প্রথম ঘটনা নয়। অপরাধী আমরা সবাই। কারণ আমরাই এইসব ছোট শিশুর পরিবারকে লোভ দেখিয়ে বাসায় নিয়ে আসি। আমরা কেউ কি ভেবে দেখেছি - শিশুটির কেমন লাগে যখন দেখে বড় লোক সাহেবের মেয়েটি কিংবা ছেলেটি নিত্য নতুন জামা, বই, খেলনা পাচ্ছে। এসব গৃহ কর্মীর অধিকাংশের শোবার জায়গা হয় ঘরের মেঝেতে এককোণে।
হুমায়ুন আহমেদ তার "বহুব্রীহি" নাটকে দেখিয়েছিলেন সোবাহান সাহেব 'কাজের বুয়া' রহিমার মাকে নিয়ে একত্রে খাবার টেবিলে বসেন। সে সময় অনেক পত্রিকায় এই দৃশ্যকে কুরুচিপূর্ন দৃশ্য বলেও লেখা বেরিয়েছিল। এরপর দুই যুগ পেরিয়ে গেছে। আমরা বদলাই নাই। মধ্যবিত্তের চরিত্রের কোন পরিবর্তন হয় নাই। ইংরেজীতে যাকে বলে ডোমেস্টিক হেল্প সেই শ্রমিকদের আমরা স্বনামে ডাক দিতে কুন্ঠা অনুভব করি। পিচ্চি-কাজের বুয়া-খালারা কেন আজকাল জীবনের ঝুঁকি নিয়েও ফ্যাক্টরীতে কাজ করতে যায় তা কিছু টের পাই বৈকি। গ্লাস ফ্যক্টরী, বিড়ির কারখানা থেকে নির্মান শিল্পের মত ভারী ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে এখনো শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সেবার যখন সাইট ভিজিটে গেলাম লিকলিকে দেহের ছেলেটিকে দেখে আমার নিজের কথা মনে পড়ল। ওর মতন বয়সে আমি ঈদের টাকা দিয়ে ব্যাট কিনতাম। বিকেল হলেই মাঠের দিকে দৌড়।
বেয়াদব শিশু
আমি কিছুটা খেয়ালি মানুষ। কথা কম বলি। পিচকিটা দুম করে মুখ চোখ বাঁকিয়ে আমাকে যখন ভেঙ্গানো শুরু করল আমি অবাক হয়ে খানিক ক্ষণ তাকিয়ে রইলাম। বেচারা দুই সাকরেদ নিয়ে এসেছে আমাকে ভেঙ্গচি কাটবে বলে। বেচারার মনে বুঝি অনেক রাগ আমি কেন ওদের এরিয়ে যাই। আসলে সকালে বের হয়ে ফিরি সেই রাতে এর মাঝে সময় থাকে না একদম। বোনের পিচকি দুটি আরো এক কাঠি সরেস। নতুন গেম এসেছে খেলতে হবে। ব্যাস - মামাকে ডাকো। আমার সবেধন নীলমনি "বাংলার বাঘ" মডেম খানা হতগত করে দু জন মিলে গেম খেলবেন ইন্টারনেটে। ডিশের লাইনে ডিজনি চ্যানেল নাই। সারাদিন বসে বসে নিক্লোডিয়ানে কার্টুন দেখবে আর দুষ্টুমি করবে। আমি ক্ষেপার ভান করি কিন্তু কখনো রাগ করি না। কারণ ওদের বয়সটাই এরকম। শিশুরা দুষ্টমি করে দেখেই ওদের দেখে এত ভালো লাগে।
যেসকল পিতা (পিতাদের জইন্য ইস্পেশালী মেনশান) এবং মাতা সকল বাচ্চাদের পিটিয়ে মানুষ বানানোর চেষ্টা করেন তাদের জন্য বলছি ওদেরকে ওদের মত থাকতে দেন। মানুষ খুব খারাপ জানোয়ার।