এক
দুই
-হাই নিলয়।
-হাই। কেমন আছো?
-ভাল। তুমি?
-এই আর কি। তা সেদিন যেতে কোন সমস্যা হয়নি তো?
-নাহ্। একদম সমস্যা হয়নি। একেবারে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়েছে।আর কি বলেছে জানো?
-কি বলেছে ?
-বলেছে-তুমি নাকি আমাকে খুব ভালোবাসো।
-আর কি বলেছে?
-বলেছে আমি যেন তোমাকে কষ্ট না দেই।
নিলয় এমন অট্টহাসি দিল যে রুবি অবাক-
-ব্যাটাকে খুঁজে বের করতে হবে।
-কেন কচ্ ট্রিটমেন্ট দেবে নাকি?
নিলয় আবার হাসি দিল- অট্টহাসি। আসলে ইদানিং কারণে অকারণে তার হাসি পায়। শুধু হাসি পায়। ব্যাপারটা ক'দিন ধরেই হচ্ছে মানে রুবির সাথে পুনরায় দেখা হবার পর থেকে।
-নাহ্। ব্যাটাতো দেখছি একেবারে সাইক্রিষ্ট। চোখ দেখে মনের কথা বলে দেয়। তো ওকে একটা চেম্বার করে দিতে হবে।
এবার রুবি ও হেসে দিল।
-তা সেদিন অমনভাবে লোকটাকে বলেছিলে কেন্? যেভাবে বলেছিলে মনে হচ্ছিল লোকটার মাথা তখনই শরীর থেকে আলাদা করে দেবে।
কথাটায় আবার দু'জনে হেসে উঠল। এবার আশেপাশের লোকগুলো ও আড়চোখে তাকাতে শুরু করেছে। নিলয় অবম্য এভাবে অট্রহাসির কারণ খুঁজে পায় না। তবু ও হাসি আসছে এবং হাসছে।তা যে যা-ই বলুক সেদিকে ওর খেয়াল নেই। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এই ক'দিনে এভাবে কারণে অকারণে হাসাতে বোধ হয় ওর হাসির টাংকি খাল হয়ে যাচ্ছে। তাই ওর হাসতে ও যেমন সময় লাগে না আবার হাসি বন্ধ হতে ও সময় লাগে না। ঠিক জিরো ওয়ান পদ্ধতি। ওয়ান কখনও টু থ্রি পর্যন্ত প্রলম্বিত হয় না। তাই হঠাৎ হাসি থামিয়ে দার্শনিকের মত বলে উঠল-
-আসলে বুঝলে ট্যাক্সিওয়ালারা হলো সবচেয়ে বজ্জাত। তাই ভয় দেখালাম আর কি? আর ভয় ব্যাপারটা এমন যে তুমি ভয় দেখালে অন্যজনে ভয় পাবে আর তুমি ভয় পেলে অন্যজনে ভয় দেখাবে।
-বাব্বা! একেবারে দার্শনিক।
-থ্যান্কস। তা এখন ক্লাস আছে?
-হ্যা। প্রাকটিক্যাল। ল্যাবে যেতে হবে।
-ঠিক আছে।
-তা এখানে দাঁড়িয়ে ছিলে কেন?
-তোমার জন্য।
-ফাজলামি করবে না।
-মানে? বলেই নিলয় আবার হেসে ফেলল।
-তুমি আমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকলে আগেই তুমি আমাকে দেখতে। কিন্তু আমি তোমার কাছে আসার পর ও খেয়াল করোনি।
-একেবারে মিসির আলী হয়ে যাচ্ছো দেখি।
-মিষ্টার, মিসির আলী কিন্তু মহিলা না।
-তাতে কি? তুমি মিসির আলীর স্ত্রী লিঙ্গ।
-ধ্যাৎ। বলেই আবার দু'জনেই হাসিতে ভেঙ্গে পড়ল। এবার রুবি হাসির চোটে নিলয়ের গায়ে পড়ে যাবার উপক্রম হলো।মূহুর্তে সে সামলে নিল। আসলে নিলয় নিজেই অবাক। এই পনেরো দিন আগে ও সে যেন কেমন ছিল। মানে ভার্সিটির সবাইই তাই বলত। সারাক্ষন বই নিয়ে মন মরা হয়ে বসে থাকতো। কিন্তু ইদানিং সারাক্ষনই হুল্লোড় করে বেড়ায়। তার মানে যে পড়াশুনার ক্ষতি হচ্ছে তা কিন্তু নয়। বরং আগের চেয়ে আরও বেশি পড়ছে। কেমন ভেতর থেকে উৎসাহ পাচ্ছে। এই ব্যাপারটা আরো একবার ঘটেছিল। মনে পড়লেই ওর মনে হয় আসলে ও কি রুবিকে ভালোবাসে নাকি কৃতজ্ঞতাবোধ? আসালে ভালোবাসা ব্যাপারটা এখনও আসছে না। শুধু ভাল লাগাটাই প্রধান। কেন জানি রুবির সাথে কথা বলতে ভাল লাগে। তাই----