গত পোস্টে কিছু বিষয় পয়েন্ট আকারে তুইল্যা ধরছিলাম। তো অনেক খারাপ ছাত্র পোস্ট দেইখ্যা কইলো যে মেট্রিক ইন্টারে পয়েন্ট মুখস্ত করলাম না আর আপনে আইছেন আজাইরা জিনিস নিয়া, যান সইরা মুতেন ছিটা আহে, পারলে কাহিনি কিসসার মতন কইরা কিসু শুনান দেহি মনে রাখতে পারি কিনা....গত বার দিসিলাম "ব্যুফেতে গিয়া কেমনে টাকা উসুল করবেন??(গবেষনা মুলক পোস্ট)" আর এবার গত পরশুর অভিগ্গতা রে গল্প হিসেবে চালায় দিলাম। আর ব্রাকেটের মধ্যে টিপসগুলি বোল্ড কইরা দিলাম। দুইটারে নিয়া আবার কেউ কনফিউজ হইয়া জাইয়েন্না যে শ্বাস কাহাসে নিতাছেন আর................
পোস্ট টা দেয়ার পর থেকে কেমনে কেমনে জানি পরিচিত মানুষজন একজন দুইজন কইর্যা জাইন্যা ফালাইলো যে আমি একজন ব্যুফে এক্সপার্ট (নিজেরে নিজে কিন্তু এক্সপার্ট ঘোষনা করি নাই, মানুষ যদি কয় তাইলে বিনয়ীভাবে স্বীকার করাই ভালো এর প্রচন্ড রকম পজেটিভ সাইড ইফেক্ট আছে)
চানরাইতের আগের রোজায় আমাদের এক বন্ধুর জন্মদিন আসিলো, তার ইচ্ছা ছিলো যে চায়নিজের উপরে দিয়া চালাইয়া দিবো( অনেক সময় চায়নিজ খাওয়ার চেয়ে ব্যুফে খাওয়া উত্তম)..কিন্ত বাধ সাধলাম আমি,কইলাম যে ৬ জনরে চায়নিজ খাওয়াইতে যে খরচ লাগবো সেটা দিয়া ব্যুফে খাওন যাইব..বন্ধু ফেলুডার চারমিনার ও আমার লগে রাজি হইয়া গেলো...বাকি চাইরটারেও রাজী করাইলাম (বুঝলাম বন্ধুরা আমার অভিগ্গতা রে মেলা দাম দেয়, তাই বন্ধুদের মধ্যে নিজেরে অভিগ্গ হিসেবে জাহির করার চেস্টা করেন সময়মতন সুফল পাইবেন)...ঠিক করলাম ঈদের ৮/১০ দিন পরে কোনো একটা ব্যুফে রেস্টুরেন্টে যামু, কারন ঈদের পরের ৭ দিন এমনিতেই আত্নীয়দের বাসায় মাগনা ব্যুফের দাওয়াত থাকে...কোন রেস্টুরেন্ট টা টারগেট করা যায় চিন্তা করা শুরু করলাম...বাটনরুঝ রে নিশানা করলাম...তো যাই হোক গুটি গুটি পায়ে দরজায় নক করলো সেই মাহেন্দ্রক্ষন । ৫ জন সহ ভোজন যোদ্ধা নিয়া আমি রওয়ানা দিলাম বাটনরুজ রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে....১২:৩০ এ গিয়া রেস্টুরেন্টে গিয়া বান্দারা হাজির। একটা মামুরে ডাক দিয়া জিগাইলাম যে মামু ব্যুফে কি রেডি?...মামু কয় যে ভাইগ্না দুই একটা আইটেম এখনো রেডি না.....মনে মনে চিন্তাইলাম বাকি আইটেম খাইতে খাইতে অই গুলান রেডি হইয়্যা যাইব....তো বইস্যা না থাইক্যা সহযোদ্ধাদের দিকে তাকাইয়া ছোটখাট একটা ইন্সপায়ারিং ভাষন দিলাম এবং প্লেট নিয়া ঝাপাইয়া পরলাম ভোজন যুদ্ধে (লিডারদের উচিত সবরকম যুদ্ধে আগে আগে ঝাপাইয়া পড়া তাই গ্রুপ থাকলে লিডার হওয়ার চেস্টা করবেন, কেমনে খাদ্যসংক্রান্ত বিষয়ে লিডার হওয়া যায় সেটা আরেক পোস্টে আলোচিত করা হইবে)
প্রথম দফায় প্লেট ভর্তি কইর্যা মুরগি নিয়া ফিরলাম....দুই একজন বন্ধু তো খালি দেখে যে আমি কি কি নেই..যেই আমি একটু সালাদ নিতে গেসি তেমনি একজন কইয়া উঠল ঐ তুই না কইসিলি যে সালাদ না খাওয়ার জন্য তো তুই নিজেই দেখি আবার সালাদ নিলি? বুজলাম যে আমার লেখায় জোর ভালো, এক্কেবারে কইলজায় গিয়া লাগছে ..শালারে ধমক দিতে গিয়া মনে পরল যে বিল দিবো তারে ধমক না দেয়াটাই শ্রেয়। মিষ্টি করে কইলাম বন্ধু সবার অ্যাবেলিটি তো আর একরকম না.....যে যেইটা করতে পারে তার সেটা করা উচিত... দুই প্লেট সালাদ খাইয়া তারপর আসল খাওন শুরু করার অ্যাবেলিটি আমার আছে....তোমার থাকলে তুমিও কর..তয় জিনিষটা সাধনার ব্যাপার..চর্চা না থাকলে এক্সপেরিমেন্ট না করাই বুদ্ধিমানের কাজ, কি বল!!! তুমি বরং কাবাব দিয়া শুরু কর...(যে খাবারের বিল দিবো তার সাথে সর্বদা মিস্টি ব্যবহার করতে হয়)
একজনের সাথে আরেকজন পাল্লা দিয়া বেশ ভালোই তিন চাইর দফা কোপাইলাম...ততক্ষলে রেস্টুরেন্টে প্রচার হইয়া গেসে যে একদল কামলা হাভাতের মতন খাওয়া শুরু কইরা দিসে (ব্যুফে খাইতে গেলে ম্যানার দেখাইলে চলবোনা) প্লেট ভইর্যা খাওন নিয়া আসি আর ৫-৭ মিনিটেই পেটে চালান কইরা দেই বিনা রশিদে। লান্চে ৫১ টা আইটেম অফার করে যার মইধ্যে ১৫ টা খাওয়ার যোগ্য আর ১৫ কোন মতে চলে, ১০টা সালাদ আর বাকী ১১ টা মুখে দিলে মিজাজ বিলা হইয়া যায়.....এর মধ্যে ২৫ টা মত আইটেম টারগেট কইরা পরিকল্পনা মতন আগাইতাছি। অলরেডি ৬ জনের ভিতরে ৩জন রণেভংগ দিয়া কাপুরুষের ন্যায় বইস্যা আসে বাকি ৩জন ওদেরটা কভার করার প্রচেস্টায় নিয়োজিত। আমাদের স্পিড দেইখ্যা বাকি তিনজনের ও মাঝে মাঝে স্পিড উঠে আমাদের প্লেট থেকা এটা সেটা তুইল্যা নিয়া মুখে দেয় আমরাও উৎসাহ দেই। খালি ব্যুফে দেইখ্যা আমার প্লেট থেকা এটা সেটা তুইল্যা খাইতে দিসি নইলে..........(আগেই বলছিলাম ভোজন যুদ্ধে সংগী অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর ) প্রায় ৪টা পর্যন্ত খেল দেখাইসি....দিনশেষে আমার দুই বন্ধু ঘোষনা করছে যে একজনের সবচেয়ে ভালো লাগছে তেতুলের চাটনি আর আরেক জনের ভালো লাগছে ফ্রুটসালাদ...বেকুব গুলান রে পারলে তো অই জায়গাতেই থাবরাই কিন্ত অইযে কইসিলাম যে খাওনের বিল যে দিব তার গায়ে কেউ গুলি করতে লাগলে নির্দিধায় বুক পাইতা দিতে হইব। শেষমেষ ৪২২২ টাকা বিল দিয়া কিন্চিত আফসুস** নিয়া ত্বপ্তির সহিত বাসার দিকে রওয়ানা দিলাম
**(শালায় মাত্র ৩৫০০ টাকা নিয়া গেসিলো বাকি টাকা সবাইরে ভাগ বাটোয়ারা কইরা দিতে হইসে...আগে যদি জানতাম যে বিল দিতে হইব তাইলে কি আর ধমক দেওয়ার একটা চান্স ও কি মিস হয় ....যে বিল দিব সে পকেটে টাকা ঠিকঠাক মতন নিসে কিনা এইটা নিশ্চিত হইয়া নিয়েন)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১২ সকাল ১১:৪৮